হলমার্ক সোনা চেনার উপায়
সত্যি বলতে সোনা খাটি কিনা সেটা যাচাই করার সব থেকে কার্যকরী উপায় হলো সোনা হলমার্কিং করা। হলমার্কিং করার সাহায্যে সোনার বিশুদ্ধতা খুব সহজেই যাচাই করে নেওয়া যায়। আর তাই আপনারা অনেকেই হলমার্ক করা সোনা কিনতে চান। তবে এই হলমার্ক সোনা চেনার উপায়গুলো অনেকেই জানেন না।
হলমার্ক সোনার চেনার কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে কেউ চাইলে এই পদ্ধতি গুলো ফলো করে খুব সহজেই হলমার্ক সোনা চিনতে পারবেন। আজকের এই পোস্টে হলমার্ক সোনা কি, হলমার্ক সোনা চেনার উপায়, হলমার্ক সোনা কত টাকা ভরি এই নিয়ে মূল্যবান কিছু তথ্য তুলে ধরা হবে। চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ
হলমার্কিং কি?
হলমার্কিং হলো গহনাগুলোতে সোনার আনুপাতিক সামগ্রীর নির্ভুল নির্ধারণ। মূলত হলমার্কিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে একটি স্বীকৃত স্বর্ণ মূল্যায়নকারী সংস্থা দ্বারা সোনার বিশুদ্ধতা পরিমাণ নিশ্চিত করা হয়।
কে হলমার্কিং করে?
ভারত সরকার সোনা হলমার্কিং প্রকল্প পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসাবে ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস) কে নির্ধারিত করেছেন। বিআইএস (BIS) হলমার্কিং প্রকল্পটি আদতে স্বেচ্ছাসেবী ও বিআইএস আইন, নিয়ম এবং নীতিগুলো দ্বারা পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুনঃ সোনা কিনে টাকা ইনকাম
আর এই প্রকল্পের অধীনে বিআইএস অনুমোদিত জুয়েলাররা বিআইএস এর লাইসেন্সপ্রাপ্ত এসেয়িং এবং হলমার্কিং কেন্দ্রগুলোর যেকোন একটি থেকে তাদের গহনাগুলো হলমার্ক করতে পারেন।
সুতরাং হলমার্ক হলে বিআইএস কর্তৃক মূল্যবান ধাতব জিনিসগুলোর বিশুদ্ধতা কিংবা সূক্ষ্মতার গ্যারান্টি হিসাবে নির্ধারিত একটি সরকারী চিহ্ন বা স্বারক।
হলমার্কিং প্রক্রিয়া কি?
আপনার স্বর্ণের ক্যারেট নির্ধারণ করতে, নিচের কোডগুলো দেখুন। প্রতিটি কোডে একটি নির্দিষ্ট ক্যারেট বর্ণনা করে থাকেঃ
- 10k 417 অনুরুপ ১০ ক্যারেট
- 14K585 অনুরূপ ১৪ ক্যারেট
- 22K 916 অনুরূপ ২২ ক্যারেট
- 18K 750 অনুরূপ ১৮ ক্যারেট
হলমার্ক সোনার চেনার উপায়?
সোনার হলমার্ক হলো এমন একটি প্রতিষ্ঠান বা স্থান যেখান থেকে সোনার বিশুদ্ধতা যাচাই করা হয়। সহজভাবে বলতে গেলে সোনার হলমার্ক সাধারণত ভারত সরকার হলমার্কিং প্রকল্প সংস্থা হিসেবে ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ার স্ট্যান্ডার্ড থেকে নির্ধারণ করা হয়।
তবে হলমার্ক সোনা চেনার কিছু গোপন টিপস রয়েছে যা অনেকেই জানেন না। নিচে এই বিষয়গুলো পয়েন্ট আকার তুলে ধরা হলোঃ
সোনার হলমার্ক চিহ্ন দেখে নিতে হবে?
কোন ব্যক্তি কোথাও থেকে সোনা কিনতে চাইলে, তিনি অবশ্যই খাঁটি সোনা কিনতে চাইবেন। আর এই ক্ষেত্রে খাঁটি সোনা চিনতে হলে সবার আগে সোনার মধ্যে থাকা হলমার্ক চিহ্নটি আপনাকে দেখতে হবে। সোনা যদি বিশুদ্ধ হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তার ভিতরে একটি হলমার্ক চিহ্ন থাকবে।
আরও পড়ুনঃ মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
আপনি যদি কোন সোনাতে হলমার্ক চিহ্ন দেখে থাকেন। তাহলে নিঃসন্দেহে এই সোনাটি আসল হিসেবে গণ্য করা হবে। আর তাই সোনা কেনার পূর্বে অবশ্যই হলমার্ক চিহ্ন দেখে কিনতে হবে।
ভিনেগার দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে?
সোনা খাঁটি কিনা তা চেনার জন্য আপনারা ভিনেগারও ব্যবহার করতে পারেন। সোনার গহনার উপর ড্রপার দিয়ে ফোটা ফোটা করে হোয়াইট ভিনেগার ঢালতে হবে। যদি ভিনেগার ঢালার পর সোনার রং পরিবর্তন হতে শুরু করে তাহলে বুঝে নিতে হবে এই সোনা নকল।
আর যদি ভিনেগার ঢ়ালার পরেও সোনা চকচক করতে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে যে সোনাটি আসল। আর এভাবে খুব সহজেই ভিনেগার দিয়ে আসল সোনা অথবা হলমার্ক করা সোনা পরীক্ষা করা যাবে।
মেকআপ টেস্টের মাধ্যমে হলমার্ক সোনা চেনার উপায়?
আসল সোনা চেনার জন্য মেকআপ টেস্ট করতে পারেন। সর্বপ্রথমে নিজের হাতের এক জায়গায় তরল ফাউন্ডেশন ঢালতে হবে। এরপর সেটা ভালো করে ব্লেড করে শুকিয়ে নিতে হবে।
এরপর আপনার সোনার গহনাটি নিয়ে সেই ফাউন্ডেশন লাগানো জায়গাটিতে ঘষুন।তাহলে যদি আপনার হাতের অংশটা কালো হয়ে যায়। তাহলে বুঝতে হবে যে এই সোনাটি আসল।
এসিড টেস্ট করে হলমার্ক সোনা চেনার উপায়?
সোনা চেনার আরেকটি দারুন উপায় হলো এসিড টেস্ট করার মাধ্যমে সোনা যাচাই বাচাই করা। অ্যাসিড পরীক্ষা হলো সোনা চেক করার খুবই নির্ভরযোগ্য একটি পদ্ধতি। এসিড টেস্ট করার জন্য প্রথমে ১টি ছোট সোনার গহনা নিবেন।
আরও পড়ুনঃ ঘরে বসে আয় করুন ১৫০০০ ২০০০০ টাকা প্রতি মাসে
এরপরে একটি সুচ নিন ও গহনার ছোট জায়গায় ঘষে নিন। এরপরে এসিড কিটে দেওয়া একটি ড্রপার দিয়ে সেই ছিদ্র এসিড দিয়ে ভর্তি করতে হবে। এরপরে ড্রপার দিয়ে ওই ঘষা জায়গায় পুনরায় এসিড দিতে হবে। এসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ার ফলে সেই জায়গার রং পরিবর্তন হয়ে যাবে।
তারপরে ভালো করে খেয়াল করতে হবে যে জায়গাটাতে এসিড দিয়েছেন সে জায়গায় রং কি ধরনের হয়েছে। এরপরে এসিড কিটে দেওয়া কার্ডের রং এর সাথে মিলিয়ে নিতে হবে।
হলমার্ক সোনা কত টাকা ভরি?
হলমার্ক সোনা কত টাকা ভরি অথবা হলমার্ক সোনা বর্তমানে বাজারে কেমন দামে পাওয়া যাচ্ছে এই বিষয়ে আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। ২৪ ক্যারেট এর এক ভরি বিশুদ্ধ হলমার্ক সোনার মূল্য হলো ৬৮,৮৭৫ টাকার কাছাকাছি। ২৩ ক্যারেট এক ভরি বিশুদ্ধ হলমার্ক সোনার মূল্য হলো ৬৭,৬৭৪ টাকা।
শেষকথা
আশা করি ইতিমধ্যে হলমার্ক সোন কি, হলমার্ক সোনা চেনার উপায় এবং হলমার্ক সোনা কত টাকা ভরি এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন।
তারপরেও যদি এই নিয়ে আপনার কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ।