ভুটান বেতন কত | ভুটান ভিসার দাম কত
ভুটান দক্ষিণ এশিয়ার একটি ছোট, সুন্দর, পার্বত্য রাজ্য, যার রাজধানী থিম্পু। শান্তিপূর্ণ প্রকৃতি, পরিচ্ছন্নতা এবং “গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস”এর ধারণার জন্য বিখ্যাত এই দেশটি।প্রতিবছর অসংখ্য বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য পর্যটন, ব্যবসা বা চাকরির সম্ভাবনা তৈরি করে। তবে ভুটানে যেতে হলে সঠিক এবং বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ভুটান যাওয়ার উপায়?
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রধান উপায় হলো ভিসা গ্রহণ করা। তবে ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় কিছু সুবিধা রয়েছে।
বাংলাদেশি নাগরিকরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পেয়ে থাকেন, বিশেষত পর্যটনের ক্ষেত্রে।
ভিসার ধরন অনুযায়ী যা প্রযোজ্য?
- ট্যুরিস্ট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- ডিপ্লোম্যাটিক ভিসা
সরকারি উপায়
বর্তমানে বোয়েসেল (BOESL) এর মাধ্যমে সরাসরি ভুটানে কাজের সুযোগ নেই। তবে বাংলাদেশ সরকার ও ভুটান সরকারের মধ্যে কোনো কর্মসংস্থান চুক্তি হলে ভবিষ্যতে এই সুযোগ তৈরি হতে পারে।
বেসরকারি উপায়
বিশ্বস্ত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বা ভুটানে অবস্থানরত পরিচিত ব্যক্তির সহায়তায় ওয়ার্ক পারমিট বা ব্যবসা সংক্রান্ত ভিসা পাওয়া সম্ভব। অবশ্যই দালাল বা অবৈধ উৎস পরিহার করা উচিত।
ভুটান ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
অনলাইন এবং অফলাইন উভয় পদ্ধতিতেই ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।
প্রক্রিয়া?
- ভুটানের ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট বা বাংলাদেশে অবস্থিত ভুটান দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন ফরম সংগ্রহ।
- আবেদন ফরম পূরণ ও নির্ধারিত ফি জমা।
- প্রয়োজনীয় দলিলপত্র সংযুক্ত করে আবেদন জমা।
- নির্ধারিত তারিখে সাক্ষাৎকার (যদি প্রযোজ্য হয়)।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসার ধরন অনুসারে পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হলোঃ
- ছয় মাস মেয়াদি বৈধ পাসপোর্ট।
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
- জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা অর্থনৈতিক সচ্ছলতার প্রমাণ।
- টিকিট বুকিং ও হোটেল রিজার্ভেশন (ট্যুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে)।
- ওয়ার্ক পারমিট বা নিয়োগপত্র (ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে)।
- অফার লেটার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কনফার্মেশন (স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে)।
বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?
- স্টুডেন্ট ভিসাঃ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফার লেটার, টিউশন ফি জমার রসিদ, স্কলারশিপ ডকুমেন্ট (যদি থাকে)।
- ওয়ার্ক ভিসাঃ ভুটানের নিয়োগকর্তার ওয়ার্ক পারমিট এবং চুক্তিপত্র।
- বিজনেস ভিসাঃ ভুটানে ব্যবসার প্রমাণপত্র, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন, ইনভেস্টমেন্ট ডিটেইলস।
ভুটান বেতন কত?
ভুটানে বেতনের হার চাকরির ধরন ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে। সাধারণতঃ
- সাধারণ শ্রমিকঃ মাসিক ২৫,০০০-৪০,০০০ নু (ভুটানি নুগাল্ট্রাম, যা প্রায় ৩০,০০০-৫০,০০০ টাকা)।
- দক্ষ কর্মী বা প্রফেশনালঃ মাসিক ৫০,০০০-৭০,000 নু (প্রায় ৬০,০০০-৮৫,০০০ টাকা)।
ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?
ট্যুরিস্ট ভিসা
- ফিঃ প্রায় ৩,০০০-৪,০০০ টাকা।
- অন্যান্য খরচঃ ১০,০০০-১৫,০০০ টাকা (হোটেল, টিকিট ইত্যাদি)।
ওয়ার্ক ভিসা?
- ফিঃ ৫,০০০-১০,০০০ টাকা
- সম্পূর্ণ খরচঃ ৫০,০০০-১,০০,০০০ টাকা (সংস্থা ও ভিসা সহায়তা খরচ সহ)
ভ্রমণের সময়কাল?
- ঢাকা থেকে থিম্পু যেতে প্রায় ১ থেকে ২ দিন সময় লাগে।
- ঢাকা → শিলিগুড়ি → ফুন্টশোলিং → থিম্পু (বাসে বা ব্যক্তিগত গাড়িতে যাত্রা করা যায়)।
ভুটানের মুদ্রার নাম কি?
- ভুটানের মুদ্রার নামঃ নুয়ালট্রাম (Nu)।
- ১ নুয়ালট্রাম = ১ ভারতীয় রুপি (মূল্য সমান)।
বাংলাদেশে ভুটান দূতাবাসের ঠিকানা?
- Royal Bhutanese Embassy
- House # 10, Road # 51, Gulshan-2, Dhaka-1212, Bangladesh
- ফোন: +880-2-9858780
- ইমেইল: dhaka@mfa.gov.bt
আরও পড়ুনঃ আমেরিকা বেতন কত | আমেরিকা ভিসার দাম কত
সতর্কতা
বর্তমানে অনেক অসাধু এজেন্সি ও ব্যক্তি কম খরচে অবৈধভাবে ভুটান পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করছে। এদের থেকে সতর্ক থাকুন। সব সময় যাচাইযোগ্য এজেন্সি অথবা সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশ যাত্রা নিশ্চিত করুন।
FQAS: ভুটান বেতন কত | ভুটান ভিসার দাম কত
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা কি অন-অ্যারাইভাল ভিসা পান?
হ্যাঁ, নির্দিষ্ট শর্তে ট্যুরিস্টদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া হয়।
ভুটানে স্থায়ীভাবে থাকা যায় কি?
দীর্ঘমেয়াদি থাকার জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা স্টুডেন্ট ভিসা থেকে রেসিডেন্স পারমিট নিতে হয়।
ভুটানে ইসলাম ধর্ম পালন করা যায় কি?
ভুটানে ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে, তবে প্রকাশ্য ধর্মীয় কার্যক্রমে কিছু বিধিনিষেধ থাকতে পারে।
শেষ কথা
ভুটানে পর্যটন, পড়াশোনা বা কাজের জন্য যেতে হলে প্রয়োজন সঠিক তথ্য, পরিকল্পনা ও দলিলপত্র। ভিসার আবেদন, খরচ ও যাত্রা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলে আপনি প্রতারণা এড়িয়ে নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করতে পারবেন।