ভিয়েতনাম বেতন কত | ভিয়েতনাম ভিসার দাম কত
ভিয়েতনাম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ। কৃষি, শিল্প, নির্মাণ ও পর্যটন খাতে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকায় অনেক বাংলাদেশি নাগরিক জীবিকার সন্ধানে ভিয়েতনামে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।তবে নিরাপদ ও বৈধভাবে এই দেশে পৌঁছাতে হলে সঠিক ভিসা প্রক্রিয়া অনুসরণ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভিয়েতনামের রাজধানীর নাম হলো হ্যানয়।
ভিয়েতনাম যাওয়ার উপায়?
বৈধভাবে ভিয়েতনাম যাওয়ার প্রধান উপায় হলো ভিসা গ্রহণ করা। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নিন্মোক্ত ভিসা ক্যাটাগরি প্রযোজ্যঃ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- ট্যুরিস্ট ভিসা
- ইনভেস্টর ভিসা
- পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা
সরকারি উপায়
BOESL (বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড) সরকারের মালিকানাধীন এই সংস্থার মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যভাবে চুক্তিভিত্তিক কাজের জন্য ভিয়েতনামে যাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়োগকর্তার আমন্ত্রণপত্র ও ওয়ার্ক পারমিট থাকতে হবে।
বেসরকারি উপায়
দেশে ও বিদেশে নিবন্ধিত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ভিয়েতনামে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ব্যবস্থা করা যায়। ব্যক্তিগত যোগাযোগ বা আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমেও কাজের সুযোগ পাওয়া যেতে পারে, তবে যাচাই-বাছাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভিয়েতনাম ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
বর্তমানে অনলাইন এবং দূতাবাসের মাধ্যমে ভিয়েতনাম ভিসার আবেদন করা যায়।
আবেদন করতে হলেঃ
- ভিয়েতনামের দূতাবাস বা কনস্যুলেটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।
- অনলাইন ফরম পূরণ করতে হবে।
- আবেদন ফি প্রদান করতে হবে।
- প্রয়োজনীয় দলিলপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
- নির্ধারিত তারিখে দূতাবাসে সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করতে হবে।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসার ধরণ অনুযায়ী কিছু ভিন্নতা থাকলেও সাধারণভাবে প্রয়োজন হয়ঃ
- পাসপোর্ট (ন্যূনতম ছয় মাসের মেয়াদ)
- ২ কপি রঙিন ছবি (পাসপোর্ট সাইজ)
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র (যদি প্রযোজ্য)
- কাজের ক্ষেত্রে নিয়োগপত্র বা কোম্পানির আমন্ত্রণপত্র।
বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?
- স্টুডেন্ট ভিসাঃ অফার লেটার, কোর্স ফি জমা রশিদ।
- ইনভেস্টর ভিসাঃ ব্যবসার অনুমোদনপত্র, অর্থের উৎস।
- ড্রাইভিং কাজেঃ আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স।
ভিয়েতনাম বেতন কত?
কাজের ধরন ও দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে বেতন ভিন্ন হয়ঃ
- সাধারণ শ্রমিকঃ প্রতি মাসে প্রায় ৪০০–৬০০ মার্কিন ডলার (৪৮,০০০–৭২,০০০ টাকা)।
- দক্ষ শ্রমিকঃ ৭০০–১২০০ মার্কিন ডলার বা তার বেশি (৮৪,০০০–১,৪৫,০০০ টাকা)।
ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?
সরকারি উপায়ে
- ভিসা ও প্রসেসিং খরচঃ প্রায় ৩-৪ লাখ টাকা
- সম্পূর্ণ খরচঃ প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা
বেসরকারি উপায়ে
ভিসা প্রসেসিং ফি ও অন্যান্য খরচসহ প্রায় ৫-৭ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
ভ্রমণের সময়কাল?
ঢাকা থেকে হ্যানয় বা হো চি মিন শহর পৌঁছাতে সাধারণত ৬–৮ ঘণ্টা সময় লাগে। এক বা একাধিক ট্রানজিট থাকলে সময় ১০–১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
ভিয়েতনামের মুদ্রার নাম কি?
ভিয়েতনামের মুদ্রার নাম হলো ভিয়েতনামী ডং (VND)।
ভিয়েতনামে বাংলাদেশি দূতাবাসের ঠিকানা?
- Embassy of Bangladesh, Hanoi, Vietnam
- Address: Villa No. 6, 125-129 Nguyen Van Cu Road, Long Bien District, Hanoi
- Phone: +84-24-3872-1134
- Email: mission.hanoi@mofa.gov.bd
আরও পড়ুনঃ থাইল্যান্ড বেতন কত | থাইল্যান্ড ভিসার দাম কত
সতর্কতা
বর্তমানে অনেক অসাধু দালাল ও ভুয়া এজেন্সি কম খরচে বা “জরুরি ভিসা” প্রলোভনে প্রতারণা করছে। এই ফাঁদে পড়ে আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকেই।
তাই সবসময় বৈধ উপায়, সরকারি সংস্থা বা অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমেই বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন।
FQAS: ভিয়েতনাম বেতন কত | ভিয়েতনাম ভিসার দাম কত
ভিয়েতনামে স্টুডেন্ট ভিসায় কাজ করা যায় কি?
সাধারণত নির্দিষ্ট ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি দেয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সের ধরনভেদে ভিন্নতা থাকতে পারে।
ভিসা বাতিল হলে কী করণীয়?
সংশ্লিষ্ট দূতাবাস বা এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে আপিল বা পুনরায় আবেদন করার চেষ্টা করতে হবে।
শেষ কথা
ভিয়েতনামে কাজ, পড়াশোনা বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্তুতি নেয়া জরুরি।
সব ধরণের কাগজপত্র ও খরচের ব্যাপারে সচেতন থেকে সিদ্ধান্ত নিন। তাহলেই নিরাপদ, বৈধ ও স্বপ্নময় বিদেশযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব।