মালয়েশিয়া বেতন কত | মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত
মালয়েশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমৃদ্ধ ও আধুনিক দেশ। মালয়েশিয়া একটি দ্বীপ ও মূল ভূখণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত দেশ, যার রাজধানী কুয়ালালামপুর।প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উন্নত অর্থনীতি এবং প্রবাসীবান্ধব পরিবেশের কারণে এটি বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে অন্যতম পছন্দের গন্তব্য।
মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায়?
বৈধভাবে মালয়েশিয়া যেতে হলে অবশ্যই একটি উপযুক্ত ভিসা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য কিছু জনপ্রিয় ভিসার ক্যাটাগরি হলোঃ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- স্পাউস ভিসা (পারিবারিক সংযুক্তিকরণ)
- বিজনেস ভিসা
- ট্যুরিস্ট ভিসা
সরকারি উপায়
বাংলাদেশ সরকারের জনশক্তি রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান BOESL এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কাজের জন্য পাঠানো হয়। এটি সাধারণত নির্দিষ্ট চুক্তির ভিত্তিতে হয় এবং মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তার অনুমোদিত ওয়ার্ক পারমিট থাকা আবশ্যক।
বেসরকারি উপায়
বিভিন্ন বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি বা পরিচিত ব্যক্তির সাহায্যে মালয়েশিয়ার কোম্পানির স্পন্সর করা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা গ্রহণ করা যায়। তবে অবশ্যই এজেন্সির লাইসেন্স ও কার্যক্রম যাচাই করে নিতে হবে।
মালয়েশিয়া ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
বর্তমানে মালয়েশিয়া ভিসার জন্য বেশিরভাগ আবেদন অনলাইনে বা নির্ধারিত ভিএফএস (VFS) সেন্টারের মাধ্যমে জমা দিতে হয়।
আবেদন করতে হলে?
- মালয়েশিয়ান দূতাবাসের বা VFS Global এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।
- আবেদন ফর্ম পূরণ ও আবেদন ফি জমা দিতে হবে।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
- নির্ধারিত তারিখে সাক্ষাৎকার ও বায়োমেট্রিকের জন্য দূতাবাসে যেতে হবে।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসার ধরন অনুযায়ী কিছু ভিন্নতা থাকলেও সাধারণত যা লাগেঃ
- বৈধ পাসপোর্ট (ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদি)
- ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট (GAMCA বা নির্ধারিত হাসপাতাল থেকে)
- জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র (ওয়ার্ক/স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে)
- ওয়ার্ক পারমিট বা অফার লেটার (ওয়ার্ক ভিসার জন্য)
- ভ্রমণ বিমা ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট (ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য)
বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?
- স্টুডেন্ট ভিসাঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফার লেটার, কোর্স ফি জমাদানের প্রমাণ।
- স্পাউস ভিসাঃ বিবাহ সনদ, ছবি ও বৈধ কাগজপত্র।
- বিজনেস ভিসাঃ ইনভাইটেশন লেটার, কোম্পানির ট্রেড লাইসেন্স।
মালয়েশিয়া বেতন কত?
মালয়েশিয়ায় বেতন নির্ভর করে পেশা ও দক্ষতার উপরঃ
- সাধারণ শ্রমিকঃ মাসে প্রায় ১২০০–১৫০০ রিঙ্গিত (বাংলাদেশি টাকায় ৩৫,০০০–৪৫,০০০ টাকা)।
- দক্ষ শ্রমিকঃ মাসে প্রায় ২০০০–৩০০০ রিঙ্গিত বা তার বেশি (৫৮,০০০–৮৮,০০০ টাকা)।
- আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, হেলথ কেয়ারঃ ৪০০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত বা আরও বেশি।
ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?
মালয়েশিয়ায় যাওয়ার খরচ নিম্নরূপঃ
সরকারি উপায়ে
- ভিসা প্রসেসিং খরচঃ ১–১.৫ লাখ টাকা।
- সম্পূর্ণ খরচঃ ২.৫–৩ লাখ টাকা।
বেসরকারি উপায়ে
- ভিসা খরচঃ ২–৩ লাখ টাকা।
- সম্পূর্ণ খরচঃ ৩.৫–৫ লাখ টাকা (পেশাভেদে ভিন্ন হতে পারে)।
ভ্রমণের সময়কাল?
ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সরাসরি ফ্লাইটে পৌঁছাতে প্রায় ৩.৫–৪.৫ ঘণ্টা সময় লাগে।
মালয়েশিয়ার মুদ্রার নাম কি?
মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (MYR)।
বাংলাদেশে মালয়েশিয়ান দূতাবাসের ঠিকানা?
High Commission of Malaysia, House 19, Road 6, Baridhara, Dhaka 1212, Bangladesh
ওয়েবসাইট: https://www.kln.gov.my/
আরও পড়ুনঃ কাম্বোডিয়া বেতন কত | কাম্বোডিয়া ভিসার দাম কত
সতর্কতা
বর্তমানে অনেক প্রতারক দালাল কম খরচে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে প্রতারণা করছে। তাই সব সময় সরকারি পদ্ধতি বা অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমেই আবেদন করুন। ভিসা নেওয়ার আগে প্রত্যেকটি কাগজ যাচাই করে নিশ্চিত হন।
FQAS: মালয়েশিয়া বেতন কত | মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত
মালয়েশিয়ায় কি পরিবার নেওয়া যায়?
হ্যাঁ, বৈধ ওয়ার্ক ভিসাধারীরা নির্ধারিত সময় পরে ডিপেন্ডেন্ট ভিসার মাধ্যমে পরিবার নিতে পারেন।
মালয়েশিয়া কি স্থায়ী নাগরিকত্ব দেয়?
না, তবে দীর্ঘদিন বৈধভাবে থাকলে দীর্ঘমেয়াদী রেসিডেন্সি অনুমোদন পেতে পারেন।
শেষ কথা
মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে সঠিক তথ্য, বৈধ প্রক্রিয়া এবং নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে সহায়তা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কাগজপত্র, আর্থিক খরচ এবং ভিসা প্রক্রিয়া ভালোভাবে বুঝে বিদেশে যাত্রা করলে প্রতারণা থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ হয় এবং ভবিষ্যৎ নিরাপদ হয়।