ভিসা

কাজাখস্তান বেতন কত | কাজাখস্তান ভিসার দাম কত

কাজাখস্তান মধ্য এশিয়ার একটি বিশাল ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ দেশ। এর রাজধানী আস্তানা (বর্তমানে নুর-সুলতান) এবং প্রধান শহর আলমাটি। দেশটি সম্প্রতি কর্মসংস্থান ও ব্যবসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনাময় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।কাজাখস্তান বেতন কত | কাজাখস্তান ভিসার দাম কতপ্রতিবছর বহু বাংলাদেশি নাগরিক কাজের সন্ধানে কাজাখস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে বৈধভাবে এই দেশে যেতে হলে অবশ্যই সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরি।

কাজাখস্তান যাওয়ার উপায়?

বৈধভাবে কাজাখস্তানে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো বৈধ ভিসা গ্রহণ। বাংলাদেশিদের জন্য কাজাখস্তানে যাওয়ার জন্য সাধারণত নিচের ক্যাটাগরির ভিসাগুলো প্রযোজ্যঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • বিজনেস ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা

সরকারি উপায়

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (BOESL) এর মাধ্যমে কাজাখস্তানে সরকারি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের পাঠানোর কার্যক্রম সীমিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে সরকারিভাবে আরও চুক্তি হতে পারে।

বেসরকারি উপায়

বিভিন্ন অনুমোদিত এজেন্সি বা কাজাখস্তানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট বা ইনভাইটেশন লেটার সংগ্রহ করে ভিসার আবেদন করা সম্ভব। তবে অবশ্যই এজেন্সিটি যাচাই-বাছাই করা জরুরি।

কাজাখস্তান ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বর্তমানে কাজাখস্তান ভিসার জন্য অনলাইনে ও দূতাবাসে সরাসরি আবেদন করা যায়। আবেদন করতে হলেঃ

  • কাজাখস্তান দূতাবাস বা কনস্যুলেটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে
  • নির্ধারিত ভিসা ফরম পূরণ করে ফি জমা দিতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
  • সাক্ষাৎকারের জন্য নির্ধারিত তারিখে উপস্থিত থাকতে হবে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসার ধরন ভেদে কাগজপত্র ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো হলোঃ

  • সর্বনিম্ন ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট।
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  • মেডিকেল রিপোর্ট (HIV/TPHA টেস্ট সহ)
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন সনদের কপি।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যথাযথ অনুবাদসহ)
  • ওয়ার্ক পারমিট বা ইনভাইটেশন লেটার (ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে)।

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ ভর্তির অফার লেটার, কোর্স ফি জমার রসিদ।
  • বিজনেস ভিসাঃ ব্যবসায়িক আমন্ত্রণপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • ড্রাইভিং কাজের ভিসাঃ আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স।

কাজাখস্তান বেতন কত?

বেতন কাঠামো কাজের ধরন ও দক্ষতার ওপর নির্ভর করেঃ

  • সাধারণ শ্রমিকের বেতনঃ মাসে প্রায় ১০০০-১২০০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৩০,০০০-১,৬০,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিকের বেতনঃ মাসে ১৫০০-২০০০ ডলার বা তার বেশি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৯৫,০০০-২,৬০,০০০ টাকা)।

ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?

সরকারি উপায়ে

  • ভিসা খরচঃ প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা।
  • সম্পূর্ণ খরচঃ প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়ে

  • ভিসা খরচঃ প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা।
  • সম্পূর্ণ খরচঃ প্রায় ৯-১১ লাখ টাকা।

ভ্রমণের সময়কাল?

বাংলাদেশ থেকে কাজাখস্তানে যেতে সাধারণত ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় লাগে, ট্রানজিট থাকলে সময় বাড়তে পারে।

কাজাখস্তানের মুদ্রার নাম কি?

কাজাখস্তানের মুদ্রার নাম Kazakhstani Tenge (KZT)।

বাংলাদেশে কাজাখস্তান দূতাবাসের ঠিকানা?

কাজাখস্তানের দূতাবাস বাংলাদেশে এখনো স্থাপিত হয়নি। তবে ভারত অথবা অন্যান্য নিকটবর্তী দেশে অবস্থিত কাজাখস্তান দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশিরা ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ থাইল্যান্ড বেতন কত | থাইল্যান্ড ভিসার দাম কত

সতর্কতা

বর্তমানে অনেক ভুয়া এজেন্সি ও দালাল কম খরচে বা দ্রুত ভিসার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করছে। এদের থেকে সাবধান থাকুন। সব সময় সরকারি বা বৈধ রেজিস্ট্রার্ড এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করুন।

FQAs: কাজাখস্তান বেতন কত | কাজাখস্তান ভিসার দাম কত

কাজাখস্তানে কি চাকরির সুযোগ আছে?

হ্যাঁ, নির্মাণ, কৃষি, ট্রান্সপোর্ট এবং পরিষেবা খাতে নিয়মিত লোক নিয়োগ হচ্ছে।

কাজাখস্তানে কি ইসলাম ধর্ম পালন করা যায়?

হ্যাঁ, কাজাখস্তান একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। মসজিদ এবং হালাল খাবারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে।

কাজাখস্তানে পারমানেন্ট রেসিডেন্স পাওয়া যায় কি?

দীর্ঘমেয়াদে কাজ এবং সঠিক কাগজপত্র থাকলে পিআর বা স্থায়ী বসবাসের আবেদন করা যায়।

শেষ কথা

কাজাখস্তানে কাজ বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে অবশ্যই সঠিক তথ্য ও প্রক্রিয়া জানা জরুরি। ফাঁদে না পড়ে সতর্কতার সাথে কাগজপত্র প্রস্তুত করুন এবং নিরাপদ ভিসা আবেদন করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button