ভিসা

ইরাক বেতন কত | ইরাক ভিসার দাম কত

ইরাক মধ্যপ্রাচ্যের একটি তেলসমৃদ্ধ এবং প্রাচীন সভ্যতার দেশ। বাগদাদ এর রাজধানী এবং এটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল।ইরাক বেতন কত | ইরাক ভিসার দাম কতবর্তমানে অনেক বাংলাদেশি নাগরিক কর্মসংস্থান, ব্যবসা বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ইরাকে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তবে সঠিক ও বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করাই নিরাপদ বিদেশ যাত্রার পূর্বশর্ত।

ইরাকে যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে ইরাকে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো ভিসা গ্রহণ করা। ইরাক সরকার বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা প্রদান করে থাকে, যেমনঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • বিজনেস ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা
  • ধর্মীয় ভিসা (যেমনঃ জিয়ারত ভিসা)

সরকারি উপায়

বর্তমানে ইরাকে বাংলাদেশি শ্রমিক প্রেরণের ক্ষেত্রে BOESL (বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

সরকারি চুক্তির আওতায় নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার মাধ্যমে যাচাইযোগ্য কর্মসংস্থান পেলে ইরাকে যাওয়া যায়।

বেসরকারি উপায়

অনেক বাংলাদেশি এজেন্সি ও রিক্রুটিং প্রতিষ্ঠান ইরাকে ওয়ার্ক পারমিট, ভিসা প্রসেসিং এবং বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে থাকে।

তবে এই পথ অনুসরণ করার ক্ষেত্রে BMET (ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং) অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়া বাঞ্ছনীয়।

ইরাক ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বর্তমানে ইরাকের জন্য ভিসা আবেদন করতে হলে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়ঃ

  • ইরাক দূতাবাসে সরাসরি আবেদন জমা দিতে হয় (বাংলাদেশে ইরাক দূতাবাস ঢাকায় অবস্থিত)।
  • ভিসা ফর্ম সংগ্রহ ও পূরণ করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় ফি জমা দিতে হবে (বিভিন্ন ভিসার জন্য ভিন্ন ফি)।
  • সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে সাক্ষাৎকারের জন্য উপস্থিত হতে হবে।
  • আবেদন গৃহীত হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাসপোর্টে ভিসা সংযুক্ত করা হয়।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসার ধরন অনুযায়ী কিছু ভিন্নতা থাকলেও সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় দলিলপত্র হলোঃ

  • কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদী পাসপোর্ট।
  • সাম্প্রতিক তোলা ২ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
  • মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র (যথাযথ ক্ষেত্রে)।
  • ওয়ার্ক পারমিট/নিয়োগপত্র (ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে)।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (বিজনেস/ট্যুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে)।
  • হজ/জিয়ারতের জন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে অনাপত্তিপত্র (ধর্মীয় ভিসার জন্য)।

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ বিশ্ববিদ্যালয়/প্রতিষ্ঠানের অফার লেটার, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, আর্থিক সাপোর্ট প্রমাণ।
  • ড্রাইভিং ভিসাঃ বৈধ আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স।
  • বিজনেস ভিসাঃ ব্যবসার লাইসেন্স, আমন্ত্রণপত্র, ব্যবসায়িক প্রোফাইল।

ইরাকে বেতন কত?

ইরাকে বেতন নির্ভর করে কাজের ধরন ও দক্ষতার উপরঃ

  • সাধারণ শ্রমিক (ক্লিনার, হেলপার): মাসিক বেতন প্রায় ৪০০–৫০০ মার্কিন ডলার (৪৮,০০০–৬০,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিক (ইলেকট্রিশিয়ান, মেসন): ৬০০–৮০০ মার্কিন ডলার (৭২,০০০–৯৬,০০০ টাকা)।
  • বিশেষায়িত পেশাজীবীঃ ১০০০ মার্কিন ডলার বা তার বেশি।

ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?

ইরাকে যেতে সরকারি এবং বেসরকারি খরচের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

সরকারি উপায়

ভিসা খরচঃ প্রায় ৪–৫ লাখ টাকা।
মোট খরচঃ প্রায় ৫–৬ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়:

ভিসা খরচঃ প্রায় ৬–৮ লাখ টাকা (সেখানে কাজ ও আবাসন অন্তর্ভুক্ত)।
মোট খরচঃ ৮–১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ভ্রমণের সময়কাল?

ঢাকা থেকে বাগদাদ বা অন্যান্য শহরে পৌঁছাতে সাধারণত ১০–১৪ ঘণ্টা সময় লাগে (ট্রানজিটসহ)। এয়ারলাইন্স ও ট্রানজিটের উপর নির্ভর করে এই সময় কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।

ইরাকের মুদ্রার নাম কি?

ইরাকের মুদ্রার নাম হলো ইরাকি দিনার (IQD)।

বাংলাদেশে ইরাকি দূতাবাসের ঠিকানা?

  • ইরাক দূতাবাস, ঢাকা
  • ঠিকানা: House # 52, Road # 11, Baridhara, Dhaka-1212
  • ফোন: +880-2-9881523
  • ওয়েবসাইট: http://mofa.gov.iq

আরও পড়ুনঃ তাজিকিস্তান বেতন কত | তাজিকিস্তান ভিসার দাম কত

সতর্কতা

বর্তমানে ইরাক ভিসা সংক্রান্ত অনেক অসাধু এজেন্সি ও দালাল চক্র প্রতারণার ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। কম খরচে বা দ্রুত ভিসা পাওয়ার প্রলোভনে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

তাই সবসময় সরকারি অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি বা দূতাবাসের মাধ্যমে যাচাই করে বিদেশ যাত্রা নিশ্চিত করুন।

FQAS: ইরাক বেতন কত | ইরাক ভিসার দাম কত

ইরাকের কোন শহরে বাংলাদেশিরা বেশি কাজ পান?

বাগদাদ, বসরা, নাজাফ, কারবালা ও এরবিল শহরে বাংলাদেশিরা বেশি কর্মসংস্থান পান।

ইরাক ভিসার মেয়াদ কত?

সাধারণত ৩ মাস থেকে ১ বছরের জন্য ভিসা দেয়া হয়। পরে নবায়ন করা যায়।

ইরাকে কোন ধরনের কাজ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়?

নির্মাণ কাজ, পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা গার্ড, ড্রাইভার, হোটেল স্টাফ প্রভৃতি পেশায় বেশি চাহিদা রয়েছে।

শেষ কথা

ইরাকে কাজ, ব্যবসা, পড়াশোনা বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে যথাযথ তথ্য জানা ও প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ভিসা প্রক্রিয়া এবং খরচ সম্পর্কে পূর্ব থেকেই পরিকল্পনা করে রাখলে আপনি সহজেই প্রতারণা এড়িয়ে নিরাপদভাবে বিদেশ যাত্রা করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button