ভিসা

বাহরাইন বেতন কত | বাহরাইন ভিসার দাম কত

বাহরাইন মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের একটি ছোট অথচ ধনী রাষ্ট্র, যার রাজধানী মানামা। গালফ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য বাহরাইন একটি আকর্ষণীয় কর্মস্থল।বাহরাইন বেতন কত | বাহরাইন ভিসার দাম কতপ্রতিবছর হাজার হাজার বাংলাদেশি বৈধভাবে বাহরাইনে যাওয়ার চেষ্টা করেন জীবিকার উদ্দেশ্যে। তবে বৈধ উপায়ে বাহরাইনে যেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেই হবে।

বাহরাইন যাওয়ার উপায়?

বাহরাইন যাওয়ার প্রধান উপায় হলো বৈধ ভিসা গ্রহণ করা। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য কয়েকটি ভিসার ক্যাটাগরি রয়েছেঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • ড্রাইভার ভিসা
  • হাউস হেল্প/মেইড ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা
  • বিজনেস ভিসা
  • ফ্যামিলি ভিসা (Family Reunification)

সরকারি উপায়

BOESL (বোয়েসেল) এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানের জন্য বাহরাইনে লোক পাঠিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে বাহরাইনের মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত ওয়ার্ক পারমিট থাকা বাধ্যতামূলক।

বেসরকারি উপায়

অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক কোম্পানি অথবা বাহরাইনে অবস্থানরত আত্মীয়-পরিচিতজনদের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করে ভিসা পাওয়া সম্ভব।

বাহরাইন ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বাহরাইন ভিসার আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে কিংবা অনুমোদিত এজেন্সির সহায়তায় করা যায়।
আবেদন করতে হলেঃ

  • বাহরাইন ইমিগ্রেশন বা E-visa পোর্টাল ভিজিট করতে হবে
  • নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে হবে।
  • আবেদন ফি জমা দিতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
  • পরে দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের জন্য হাজির হতে হতে পারে (ভিসা ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে)।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসা প্রকারভেদে কিছু পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হলোঃ

  • কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট।
  • পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি
  • মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট (GCC অনুমোদিত সেন্টার থেকে)।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • NID বা অনলাইন জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যদি প্রযোজ্য হয়)।
  • ওয়ার্ক পারমিট/স্পন্সরের চিঠি (ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে)।

বিশেষ ভিসার জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র?

  • ড্রাইভিং ভিসাঃ আন্তর্জাতিক বা বাহরাইন অনুমোদিত ড্রাইভিং লাইসেন্স।
  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ বাহরাইনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফার লেটার।
  • পরিবার ভিসাঃ প্রমাণপত্রসহ স্পন্সরের রেসিডেন্স পারমিট।

বাহরাইন বেতন কত?

কাজের ধরন ও দক্ষতার ভিত্তিতে বাহরাইনে বেতন পরিবর্তিত হয়ঃ

  • সাধারণ শ্রমিক (Construction/Labor): মাসিক ১২০ থেকে ১৮০ বাহরাইনি দিনার (BD) – প্রায় ৩৫,০০০ থেকে ৫৫,০০০ টাকা
  • দক্ষ শ্রমিক (Electrician, Plumber, Mechanic): ২০০–৩০০ BD – প্রায় ৬০,০০০ থেকে ৯০,০০০ টাকা
  • ড্রাইভারঃ সাধারণত ২৫০–৩৫০ BD
  • অফিস সহকারী বা হাউসকিপিংঃ ১৫০–২০০ BD
  • হাউস হেল্পঃ ৮০–১২০ BD (নিয়মিত থাকার ও খাওয়ার সুবিধা থাকে)

ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?

সরকারি উপায়ঃ

  • ভিসা খরচঃ প্রায় ৩–৪ লাখ টাকা।
  • মোট খরচ (ভ্রমণসহ): প্রায় ৪.৫–৫.৫ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়

  • ভিসা খরচঃ প্রায় ৪–৫ লাখ টাকা।
  • মোট খরচঃ প্রায় ৫.৫–৭ লাখ টাকা।

নোটঃ কাজের ধরন ও কোম্পানির সুবিধা অনুযায়ী এ খরচ কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।

ভ্রমণের সময়কাল?

বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন যেতে সাধারণত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে, ট্রানজিট থাকলে সময় বেড়ে যেতে পারে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত।

বাহরাইন মুদ্রার নাম কী?

  • বাহরাইনি দিনার (Bahraini Dinar – BHD)।
  • ১ বাহরাইনি দিনার = প্রায় ২৯০+ বাংলাদেশি টাকা।

বাহরাইনে বাংলাদেশি দূতাবাসের ঠিকানা?

  • Embassy of Bangladesh in Bahrain
  • Villa No. 924, Road 3119, Block 331
  • Zinj, Manama, Kingdom of Bahrain
  • ফোন: +973 1772 7230
  • ওয়েবসাইট: https://services.bahrain.bh

আরও পড়ুনঃ দক্ষিণ কোরিয়া বেতন কত | দক্ষিণ কোরিয়া ভিসার দাম কত

সতর্কতা

বর্তমানে অনেক অসাধু দালাল বা ভুয়া এজেন্সি বাহরাইন ভিসার নাম করে লোক ঠকাচ্ছে। “ফ্রি ভিসা” বা “কম খরচে কাজের ভিসা” এসব প্রলোভন থেকে দূরে থাকুন। সবসময় বোয়েসেল বা সরকার অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ যাত্রা নিশ্চিত করুন।

FAQs: বাহরাইন বেতন কত | বাহরাইন ভিসার দাম কত

বাহরাইনে মেয়েদের কাজ করার সুযোগ আছে?

হ্যাঁ, গৃহকর্মী, হসপিটাল, ক্লিনিং বা সেলস গার্ল হিসেবে কাজের সুযোগ রয়েছে।

বাহরাইনে PR বা স্থায়ী নাগরিকত্ব পাওয়া যায় কি?

সাধারণত না। বাহরাইন চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানের জন্য ভিসা দেয়। দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বসবাসের সুযোগ সীমিত।

বাহরাইন ভিসা কতদিনে পাওয়া যায়?

নথিপত্র ঠিক থাকলে ১৫-৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ভিসা পাওয়া যেতে পারে।

শেষ কথা

বাহরাইনে কাজ বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে হলে সঠিক তথ্য, কাগজপত্র এবং ভিসা প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি।

অবৈধ প্রক্রিয়া এড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে বিদেশ যাত্রা করলে প্রতারণা থেকে বাঁচা সম্ভব এবং একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button