তাইওয়ান বেতন কত | তাইওয়ান ভিসার দাম কত
তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি সমৃদ্ধ ও শিল্পোন্নত দ্বীপদেশ। এর রাজধানী তাইপেই শহর প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত।প্রতিবছর অনেক বাংলাদেশি নাগরিক তাইওয়ানে কাজ, পড়াশোনা কিংবা ব্যবসার উদ্দেশ্যে যেতে আগ্রহী হন। তবে বৈধভাবে তাইওয়ান যেতে হলে সঠিক প্রক্রিয়া ও তথ্য জেনে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাইওয়ান যাওয়ার উপায়?
তাইওয়ানে বৈধভাবে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো বৈধ ভিসা গ্রহণ। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নিচের ভিসাগুলো প্রযোজ্যঃ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- ট্যুরিস্ট ভিসা
সরকারি উপায়ে তাইওয়ান যাওয়া
বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত বিদেশগামী কর্মসংস্থান সংস্থা BOESL (বোয়েসেল) কিংবা BMET এর মাধ্যমে তাইওয়ানে সরকারি প্রক্রিয়ায় শ্রমিক পাঠানো হয়। তবে এ ক্ষেত্রে তাইওয়ানের কোম্পানির স্পন্সরশিপ ও অনুমোদিত ওয়ার্ক পারমিট থাকা বাধ্যতামূলক।
বেসরকারি উপায়ে তাইওয়ান যাওয়া
বেসরকারি অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি অথবা ইউরোপ ও এশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসীদের মাধ্যমে বৈধভাবে ওয়ার্ক পারমিট ও অন্যান্য ভিসার ব্যবস্থা করা যায়। সবসময় যাচাইযোগ্য ও লাইসেন্সধারী এজেন্সির মাধ্যমে কাজ করা উচিত।
তাইওয়ান ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
তাইওয়ান ভিসার জন্য আবেদন করতে হলেঃ
- তাইওয়ান দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
- নির্ধারিত ভিসা ফরম অনলাইনে পূরণ করতে হবে।
- আবেদন ফি অনলাইনে জমা দিতে হবে।
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
- সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ করে দূতাবাসে উপস্থিত হতে হবে।
দূতাবাস: বাংলাদেশে তাইওয়ানের অফিসিয়াল দূতাবাস না থাকায় আবেদনকারীদের তাইওয়ানের ভারতীয় দূতাবাস বা প্রতিনিধিত্বকারী মিশন (AIT) এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসার ধরণ অনুযায়ী কাগজপত্র ভিন্ন হলেও সাধারণভাবে যা প্রয়োজনঃ
- ছয় মাসের মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট।
- ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সর্বনিম্ন ৬ মাসের)।
- জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধনের কপি।
- চাকরির প্রস্তাবপত্র (ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে)।
- চিকিৎসা সনদ এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
- ভ্রমণ বিমা কপি
বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?
- ড্রাইভিং ভিসাঃ বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স।
- স্টুডেন্ট ভিসাঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফার লেটার, ভিসা স্পনসরশিপ/স্কলারশিপ পত্র।
- বিজনেস ভিসাঃ কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন কপি, ইনভাইটেশন লেটার, ট্যাক্স ডকুমেন্টস।
তাইওয়ান বেতন কত?
তাইওয়ানে কাজের ধরন ও অভিজ্ঞতা অনুসারে বেতন ভিন্ন হয়ঃ
- সাধারণ শ্রমিক (কারখানা/ফ্যাক্টরি): ২০,০০০ – ২৫,০০০ তাইওয়ানিজ ডলার (TWD) (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭০,০০০ – ৮৫,০০০ টাকা)
- দক্ষ কর্মীঃ ৩০,০০০ TWD বা তার বেশি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ লাখ টাকা+)
ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?
সরকারি উপায়ে
ভিসা খরচঃ ৩-৪ লাখ টাকা।
সম্পূর্ণ খরচ (ফ্লাইট + অন্যান্য): ৫-৬ লাখ টাকা।
বেসরকারি উপায়ে
ভিসা খরচঃ ৫-৬ লাখ টাকা।
সম্পূর্ণ খরচঃ ৭-৯ লাখ টাকা।
ভ্রমণের সময়কাল?
ঢাকা থেকে তাইপেই যাওয়ার ফ্লাইটে সাধারণত ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। ট্রানজিটসহ এই সময় ১৪-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
তাইওয়ানের মুদ্রার নাম কি?
তাইওয়ানের মুদ্রার নাম হলো তাইওয়ান ডলার (New Taiwan Dollar – TWD)।
তাইওয়ানে বাংলাদেশি দূতাবাসের ঠিকানা?
বর্তমানে তাইওয়ানে বাংলাদেশের পূর্ণ দূতাবাস নেই। তবে প্রতিনিধিত্বকারী কনস্যুলার অফিস রয়েছে।
তাইওয়ানে বাংলাদেশ অফিস?
- Address: Bangladesh Trade Office, Taipei, Taiwan
- Phone: +886 2 8786 3216
আরও পড়ুনঃ সৌদি আরব বেতন কত | সৌদি আরব ভিসার দাম কত
সতর্কতাঃ
বর্তমানে কিছু অসাধু এজেন্সি ও দালাল অবৈধ পথে বা ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে তাইওয়ান পাঠানোর লোভ দেখাচ্ছে। এমন প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকুন। সবসময় যাচাইযোগ্য, বৈধ এবং অনুমোদিত মাধ্যম ব্যবহার করুন।
FQAs: তাইওয়ান বেতন কত | তাইওয়ান ভিসার দাম কত
তাইওয়ানে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য IELTS লাগবে কি?
হ্যাঁ, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় IELTS বা TOEFL স্কোর চায়। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার প্রমাণেও গ্রহণ করে।
তাইওয়ানে কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা করা যায় কি?
হ্যাঁ, স্টুডেন্ট ভিসায় পার্টটাইম কাজের অনুমতি রয়েছে।
ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পরে পরিবার নিয়ে যাওয়া যায় কি?
নির্দিষ্ট সময় কাজ করার পর পরিবারের জন্য ডিপেন্ডেন্ট ভিসা আবেদন করা যায়।
শেষ কথা
তাইওয়ানে কাজ, পড়াশোনা বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে সঠিক তথ্য, যাচাইযোগ্য উৎস ও বৈধ প্রক্রিয়া জানা অত্যন্ত জরুরি।
ভিসার আবেদন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ সম্পর্কে আগেই পরিকল্পনা করলে প্রতারণা এড়িয়ে নিরাপদভাবে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করা সম্ভব।