সেশেলস বেতন কত | সেশেলস ভিসার দাম কত
সেশেলস ভারত মহাসাগরের পশ্চিমাংশে অবস্থিত একটি মনোরম দ্বীপরাষ্ট্র। পর্যটন এবং মৎস্যশিল্পের জন্য পরিচিত এই দেশটি কাজ ও বসবাসের জন্যও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।অনেক বাংলাদেশি নাগরিক সেশেলসে কাজ বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে যেতে আগ্রহী। তবে বৈধভাবে এই দেশে প্রবেশ করতে হলে সঠিক তথ্য ও প্রক্রিয়া জানা অত্যন্ত জরুরি।
সেশেলস যাওয়ার উপায়?
বৈধভাবে সেশেলসে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো উপযুক্ত অনুমতিসহ প্রবেশ করা। সেশেলসে প্রবেশের জন্য “ভিসা অন অ্যারাইভাল” পদ্ধতি চালু থাকলেও, বাংলাদেশিদের কিছু অতিরিক্ত অনুমতি নিতে হয়। প্রযোজ্য ভিসার ধরণসমূহঃ
- ওয়ার্ক পারমিট (Gainful Occupation Permit – GOP)
- স্টুডেন্ট পারমিট
- পরিবার পুনর্মিলন বা সংযুক্তিকরণ পারমিট
- ব্যবসায়িক পারমিট (Investor’s Permit)
- ট্যুরিস্ট পারমিট (Visitor’s Permit)
সরকারি উপায়ে যাওয়া
বর্তমানে সেশেলসে বাংলাদেশের কোনো সরাসরি সরকারি কর্মসংস্থান কর্মসূচি নেই। তবে ভবিষ্যতে BOESL এর মাধ্যমে সুযোগ এলে, প্রক্রিয়া অনুযায়ী অনুমোদন নিয়ে যাওয়া যাবে।
বেসরকারি উপায়ে যাওয়া
বেসরকারি এজেন্সি বা সেশেলসে অবস্থানরত পরিচিতদের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করে যাওয়া সম্ভব। অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে পারমিটটি সেশেলস ইমিগ্রেশন বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত এবং বৈধ।
সেশেলস ভিসা/পারমিট আবেদনের নিয়মাবলী?
সেশেলসে সাধারণত ভিসা অন অ্যারাইভাল প্রযোজ্য। তবে ওয়ার্ক বা স্টুডেন্ট পারমিটের জন্য আগে থেকেই অনলাইনে আবেদন করতে হয়। প্রক্রিয়াঃ
- সেশেলস ইমিগ্রেশন অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
- আবেদন ফরম পূরণ করে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
- আবেদন অনুমোদনের পর ইমেইলে পারমিট কপি পাঠানো হয়।
- এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর পর সেটি প্রদর্শন করে প্রবেশ করা যায়।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসা বা পারমিটের ধরন অনুযায়ী কিছু পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো হলোঃ
- ন্যূনতম ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি
- রিটার্ন টিকিট বা ভ্রমণ পরিকল্পনার কপি
- হোটেল বুকিং/আবাসনের প্রমাণ
- আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
- স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট (বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে)
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- অফার লেটার (ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে)
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যদি প্রযোজ্য হয়)
বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?
- স্টুডেন্ট পারমিটঃ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফার লেটার এবং ফি জমার রসিদ।
- ওয়ার্ক পারমিটঃ নিয়োগপত্র, কোম্পানি অনুমোদন এবং ইমিগ্রেশন অফিসের ছাড়পত্র।
- ইনভেস্টর পারমিটঃ ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, বিনিয়োগের উৎস এবং লাইসেন্সের অনুলিপি।
সেশেলসে বেতন কেমন?
সেশেলসে বিভিন্ন পেশাভিত্তিক বেতন কাঠামো নিম্নরূপঃ
- সাধারণ শ্রমিকঃ প্রায় ৫০০–৭০০ ইউএস ডলার (প্রায় ৬০,০০০–৮৫,০০০ টাকা)।
- দক্ষ শ্রমিকঃ প্রায় ৮০০–১২০০ ইউএস ডলার (প্রায় ৯৫,০০০–১,৪০,০০০ টাকা)।
- পেশাদার কর্মী (ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, টেকনিক্যাল): ১৫০০–২০০০ ডলার পর্যন্ত।
ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?
খরচ ভিসার ধরন ও মাধ্যম অনুসারে ভিন্ন হয়ঃ
বেসরকারি উপায়
- ওয়ার্ক পারমিটসহ খরচঃ প্রায় ৪–৫ লাখ টাকা (ফ্লাইট, পারমিট, দালালি ফি সহ)।
- ট্যুরিস্ট খরচঃ প্রায় ১.৫–২ লাখ টাকা (হোটেল ও অন্যান্য ব্যয় সহ)।
ভ্রমণের সময়কাল?
ঢাকা থেকে সেশেলস যেতে সাধারণত ১৪–১৮ ঘণ্টা সময় লাগে। অধিকাংশ ফ্লাইটে একটি বা দুটি ট্রানজিট থাকে (দুবাই, দোহা, ইথিওপিয়া ইত্যাদি)।
সেশেলস মুদ্রার নাম কি?
সেশেলসের মুদ্রার নাম হলো সেশেলস রুপি (SCR)।
সেশেলসে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঠিকানা?
বর্তমানে সেশেলসে বাংলাদেশের কোনো স্থায়ী দূতাবাস নেই। তবে ভারত বা দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে কনস্যুলার সেবা পাওয়া যায়।
বিকল্প দূতাবাস
Bangladesh High Commission, Pretoria, South Africa
[ওয়েবসাইট: https://pretoria.mofa.gov.bd]
আরও পড়ুনঃ জিবুতি বেতন কত | জিবুতি ভিসার দাম কত
সতর্কতা
বর্তমানে অনেক অসাধু দালাল ও এজেন্সি অবৈধভাবে সেশেলসে পাঠানোর নামে প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করছে। এদের থেকে সতর্ক থাকা জরুরি। সবসময় বৈধ ও যাচাইযোগ্য উৎস থেকে পারমিট সংগ্রহ করুন।
FQAS: সেশেলস বেতন কত | সেশেলস ভিসার দাম কত
সেশেলসে মুসলমানের সংখ্যা কেমন?
সেশেলসে মুসলিম জনসংখ্যা কম হলেও ইসলাম ধর্ম পালনে কোনো বাধা নেই।
সেশেলসে নাগরিকত্ব পাওয়া যায় কি?
দীর্ঘদিন বৈধভাবে বসবাস, নির্দিষ্ট বিনিয়োগ এবং শর্তপূরণ সাপেক্ষে নাগরিকত্ব আবেদন করা যায়।
শেষ কথা
সেশেলসে কাজ, পড়াশোনা বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে অবশ্যই সঠিক তথ্য ও নীতিমালার ভিত্তিতে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং অনুমতির বিষয়ে আগে থেকেই সচেতন হলে প্রতারণা এড়িয়ে নিরাপদে বিদেশযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব।