ভিসা

কেপ ভার্দে বেতন কত | কেপ ভার্দে ভিসার দাম কত

কেপ ভার্দে পশ্চিম আফ্রিকার আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, স্থিতিশীল সরকার এবং বিদেশি কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত শ্রমবাজারের কারণে এটি বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।কেপ ভার্দে বেতন কত | কেপ ভার্দে ভিসার দাম কতপ্রতিবছর বহু বাংলাদেশি জীবিকার সন্ধানে কেপ ভার্দে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বৈধভাবে এই দেশে যেতে হলে সঠিক ভিসা প্রক্রিয়া জানা এবং অনুসরণ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর কেপ ভার্দে এর রাজধানীর নাম হলো প্রাইয়া।

কেপ ভার্দে যাওয়ার উপায়?

বৈধভাবে কেপ ভার্দেতে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো যথাযথ ভিসা গ্রহণ। বাংলাদেশিদের জন্য প্রযোজ্য ভিসাগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা

সরকারি উপায়

বর্তমানে কেপ ভার্দে’র সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সরকারি চুক্তি খুব সীমিত। তবে ভবিষ্যতে BOESL বা সরকারি মাধ্যমে কর্মী প্রেরণের সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত সরকারি পদ্ধতির পরিবর্তে বেসরকারি উপায়েই ভিসা পাওয়া সহজ।

বেসরকারি উপায়

বিভিন্ন বৈধ ও নিবন্ধিত বিদেশি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকরা কেপ ভার্দেতে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যেতে পারেন।

এর পাশাপাশি ইউরোপ বা আফ্রিকার অন্যান্য দেশে থাকা বাংলাদেশি পরিচিতজনের মাধ্যমে স্পন্সরশিপ ভিসার ব্যবস্থা করাও সম্ভব।

কেপ ভার্দে ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

কেপ ভার্দে ভিসার আবেদন বর্তমানে অনলাইন এবং দূতাবাসের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়। বাংলাদেশে সরাসরি কেপ ভার্দে দূতাবাস না থাকায়,

সাধারণত ভিসা আবেদন করা হয় তৃতীয় দেশের কেপ ভার্দে মিশনের মাধ্যমে বা অন-অ্যারাইভাল ভিসার জন্য আবেদন করে। আবেদন করতে হলেঃ

  • Cape Verde Immigration Official Website বা সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের ওয়েবসাইটে যেতে হবে
  • আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে সাবমিট করতে হবে।
  • অনলাইনে ফি পরিশোধ করতে হবে।
  • নির্ধারিত হলে সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করতে হতে পারে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

  • বৈধ পাসপোর্ট (ন্যূনতম ৬ মাসের মেয়াদ)
  • রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • মেডিকেল রিপোর্ট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
  • নিয়োগকর্তার ইনভিটেশন বা চুক্তিপত্র (ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে)।

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • স্টুডেন্ট ভিসার জন্যঃ অফার লেটার, কোর্স ফি রসিদ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • ড্রাইভিং ভিসার জন্যঃ আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স।

কেপ ভার্দে বেতন কত?

বেতন নির্ভর করে পেশা ও দক্ষতার উপর। আনুমানিক বেতনের পরিসীমা নিচে দেওয়া হলোঃ

  • সাধারণ শ্রমিকঃ ৩০০–৪০০ ইউরো (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৫,০০০–৪৫,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিকঃ ৫০০–৭০০ ইউরো (প্রায় ৬০,০০০–৮৫,০০০ টাকা)।
  • টেকনিক্যাল/ইঞ্জিনিয়ারিং স্কিলযুক্তঃ ৮০০ ইউরো বা তার বেশি।

ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?

সরকারি উপায় (যদি চালু হয় ভবিষ্যতে)

  • ভিসা খরচঃ আনুমানিক ৫–৬ লাখ টাকা।
  • সম্পূর্ণ খরচঃ আনুমানিক ৭–৮ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়

ভিসা খরচঃ আনুমানিক ৬–৭ লাখ টাকা।
সম্পূর্ণ খরচঃ আনুমানিক ৮–১০ লাখ টাকা।

ভ্রমণের সময়কাল?

বাংলাদেশ থেকে কেপ ভার্দে পৌঁছাতে সাধারণত ২০ থেকে ৩০ ঘণ্টা সময় লাগে। যেহেতু সরাসরি ফ্লাইট নেই, তাই সাধারণত দু-তিনটি ট্রানজিট লাগে (দোহা, লিসবন বা ইস্তানবুলের মাধ্যমে)।

কেপ ভার্দের মুদ্রার নাম কি?

কেপ ভার্দের মুদ্রার নাম হলো Cape Verdean Escudo (CVE)। ১ ইউরো ≈ ১১০ CVE (রেট পরিবর্তনশীল)।

কেপ ভার্দেতে বাংলাদেশের দূতাবাসের ঠিকানা?

বাংলাদেশের সরাসরি দূতাবাস নেই কেপ ভার্দেতে। তবে বাংলাদেশ দূতাবাস, পর্তুগাল (Lisbon) বা সেনেগাল (Dakar) থেকে ভিসা সংক্রান্ত সহায়তা পাওয়া যায়।

  • Bangladesh Embassy in Lisbon:
  • Rua Pero da Covilha 3, Lisbon, Portugal
  • Email: mission.lisbon@mofa.gov.bd

আরও পড়ুনঃ বাহরাইন বেতন কত | বাহরাইন ভিসার দাম কত

সতর্কতা

বর্তমানে অনেক ভুয়া দালাল ও অসাধু এজেন্সি কেপ ভার্দে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ভুল তথ্য দিয়ে ভুয়া ভিসা প্রদান ও অবৈধ পথে পাঠানোর চেষ্টা করছে।

তাই ভিসা নেওয়ার আগে সবসময় যাচাইযোগ্য রিক্রুটিং এজেন্সি বা অফিসিয়াল চ্যানেলের সাহায্য নিন।

FAQs: কেপ ভার্দে বেতন কত | কেপ ভার্দে ভিসার দাম কত

কেপ ভার্দে কি অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেয়?

নির্দিষ্ট কিছু দেশের নাগরিকদের দেয়। বাংলাদেশিদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা না থাকায় আগেই ভিসা নিতে হয়।

কাজের সুযোগ কেমন?

নির্মাণ, পর্যটন, ফিশিং এবং কৃষিখাতে বেশি কাজ পাওয়া যায়।

কি ধরনের কাজ বেশি পাওয়া যায়?

হোটেল হেল্পার, নির্মাণ শ্রমিক, মাছ ধরার সহকারী, কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার, রেস্টুরেন্ট ওয়ার্কার।

শেষ কথা

কেপ ভার্দে যেতে চাইলে সঠিক তথ্য, অনুমোদিত এজেন্সি এবং বৈধ উপায় অনুসরণ করাই নিরাপদ। সবসময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা এবং আর্থিকভাবে প্রস্তুত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন, পরিকল্পিত ও আইনসম্মত বিদেশ যাত্রাই দীর্ঘমেয়াদে সফলতা আনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button