ভিসা

ইরিত্রিয়া বেতন কত | ইরিত্রিয়া ভিসার দাম কত

ইরিত্রিয়া পূর্ব আফ্রিকার হর্ন অঞ্চলের একটি উপসাগরীয় দেশ, যার পূর্বদিকে রয়েছে লোহিত সাগর। এর রাজধানী আস্মারা (Asmara)। কৃষি, খনিজসম্পদ ও সামুদ্রিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীল এই দেশে বৈদেশিক শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে বিভিন্ন খাতে।ইরিত্রিয়া বেতন কত | ইরিত্রিয়া ভিসার দাম কতপ্রতিবছর অনেক বাংলাদেশি নাগরিক জীবিকার উদ্দেশ্যে ইরিত্রিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বৈধভাবে যেতে হলে সঠিক প্রক্রিয়া ও নথিপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইরিত্রিয়া যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ইরিত্রিয়ায় যাওয়ার প্রধান উপায় হলো বৈধ ভিসা গ্রহণ। ইরিত্রিয়ার জন্য যেসব ভিসা ক্যাটাগরি প্রযোজ্য, তা হলোঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • পারিবারিক পুনর্মিলন ভিসা
  • বিজনেস ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা

সরকারি উপায়ে যাওয়া

বর্তমানে ইরিত্রিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের সরাসরি জনশক্তি রপ্তানির কোনো বড় চুক্তি নেই। তবে কোনো সরকারি প্রকল্প বা চুক্তিভিত্তিক কাজের অফার এলে BOESL (বোয়েসেল) বা BMET এর মাধ্যমে যেতে পারে।

বেসরকারি উপায়ে যাওয়া

ইরিত্রিয়ায় যাওয়ার অন্যতম প্রচলিত উপায় হলো বেসরকারি অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি বা ইরিত্রিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে স্পন্সর করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা গ্রহণ করা।

সতর্কতাঃ অবৈধ বা ভুয়া এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়া বিপজ্জনক ও দণ্ডনীয়। যাচাইযোগ্য রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই আবেদন করা উচিত।

ইরিত্রিয়া ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বর্তমানে ইরিত্রিয়া ভিসার জন্য অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবেই আবেদন করা যায়। আবেদনের ধাপগুলো হলোঃ

  • ইরিত্রিয়া দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা নিকটবর্তী দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে।
  • (কারণ বাংলাদেশে ইরিত্রিয়ার কোনো দূতাবাস নেই, সাধারণত ভারতে অবস্থিত দূতাবাস দায়িত্বপ্রাপ্ত)।
  • আবেদন ফরম পূরণ করে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে
  • প্রয়োজনীয় দলিলপত্র স্ক্যান করে জমা দিতে হবে।
  • সাক্ষাৎকারের জন্য দূতাবাসে উপস্থিত হতে হবে নির্ধারিত তারিখে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসার ধরণ ভেদে কিছু পার্থক্য থাকলেও সাধারণত যা প্রয়োজনঃ

  • ৬ মাসের পাসপোর্ট (মেয়াদবৃদ্ধিযুক্ত)
  • পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • মেডিকেল রিপোর্ট
  • NID ও জন্মনিবন্ধনের কপি
  • শিক্ষাগত সনদ (যদি প্রযোজ্য হয়)
  • ওয়ার্ক পারমিট বা নিয়োগপত্র (ওয়ার্ক ভিসার জন্য)

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার, স্পনসরশিপ বা স্কলারশিপ প্রমাণ।
  • ড্রাইভিং ভিসাঃ বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্রেড সার্টিফিকেট।
  • পারিবারিক ভিসাঃ প্রমাণস্বরূপ পারিবারিক সম্পর্কের দলিল।

ইরিত্রিয়া বেতন কত?

ইরিত্রিয়ায় বেতন কাঠামো নির্ভর করে পেশা ও প্রতিষ্ঠানের ওপরঃ

  • সাধারণ শ্রমিকঃ প্রায় $২০০–$৩০০ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৩,০০০–৩৫,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিক/টেকনিক্যাল কাজঃ $৪০০–$৬০০ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৬,০০০–৬৯,০০০ টাকা)।

দ্রষ্টব্যঃ অন্যান্য আফ্রিকান দেশের তুলনায় ইরিত্রিয়ায় বেতন অপেক্ষাকৃত কম হলেও জীবনযাত্রার খরচ কম হওয়ায় সঞ্চয় কিছুটা সম্ভব।

ভিসা এবং যাতায়াত খরচ?

সরকারি উপায়ে (যদি থাকে)

  • ভিসা খরচঃ আনুমানিক ৫–৬ লাখ টাকা।
  • সম্পূর্ণ খরচঃ ৭–৮ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়ে

  • ভিসা খরচঃ ৬–৭ লাখ টাকা।
  • সম্পূর্ণ খরচঃ ৮–১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে (এজেন্সি ফি, টিকিট, প্রক্রিয়াজাত খরচসহ)।

বাংলাদেশ থেকে ইরিত্রিয়া পৌঁছাতে সময়?

ইরিত্রিয়ার রাজধানী আস্মারা পৌঁছাতে সাধারণত ১৬–২০ ঘণ্টা সময় লাগে। একাধিক ট্রানজিট থাকতে পারে যেমন: দোহা, দুবাই, ইস্তাম্বুল বা আদ্দিস আবাবা।

ইরিত্রিয়ার মুদ্রার নাম কি?

নাকফা (Eritrean Nakfa)। প্রতিদিনের লেনদেনে স্থানীয় মুদ্রাই প্রচলিত, তবে কিছু ক্ষেত্রে ইউএস ডলারও গ্রহণযোগ্য।

বাংলাদেশি দূতাবাস কোথায়?

বর্তমানে বাংলাদেশের ইরিত্রিয়াতে স্থায়ী দূতাবাস নেই। তবে ইথিওপিয়া, সুদান বা মিশরস্থ বাংলাদেশ মিশন থেকে ইরিত্রিয়া সংক্রান্ত কনস্যুলার সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ তিউনিসিয়া বেতন কত | তিউনিসিয়া ভিসার দাম কত

সতর্কতা

  • ইরিত্রিয়া যেহেতু তুলনামূলকভাবে কম প্রচলিত শ্রমবাজার, তাই অনেক দালাল ও অবৈধ এজেন্ট প্রতারণার চেষ্টা করে থাকে।
  • সবসময় বৈধ কাগজপত্র ও অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করুন।
  • সরাসরি ভিসার প্রস্তাব বা “কম খরচে বিদেশে পাঠানোর” লোভে পা দেবেন না।

FAQs: ইরিত্রিয়া বেতন কত | ইরিত্রিয়া ভিসার দাম কত

ইরিত্রিয়া কি ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যর মতো সুবিধা দেয়?

না, ইরিত্রিয়া একটি আফ্রিকান দেশ, এখানকার আর্থিক ও সামাজিক অবস্থা ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভিন্ন। তবে চাকরি ও অভিজ্ঞতার জন্য কিছু মানুষ ইরিত্রিয়া পছন্দ করেন।

ভিসা কতদিনে পাওয়া যায়?

আবেদন যাচাই ও সাক্ষাৎকার শেষে ৩ থেকে ৬ সপ্তাহে ভিসা হাতে পাওয়া যায়।

ইরিত্রিয়ায় মুসলমানদের জন্য নিরাপদ কি না?

ইরিত্রিয়াতে মুসলমানসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাস রয়েছে। তবে স্থানীয় আইন কঠোর, তাই নিয়ম মেনে চলা জরুরি।

শেষ কথা

ইরিত্রিয়া ভিসার জন্য সঠিক তথ্য ও কাগজপত্র থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিসার আবেদন, মেডিকেল, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও আর্থিক প্রস্তুতি আগে থেকেই থাকলে প্রতারণা এড়িয়ে নিরাপদে বিদেশ যাত্রা নিশ্চিত করা যায়।

তথ্য যাচাই করুন, সরকারি অথবা বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সহায়তা নিন এবং শান্তিপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button