আর্মেনিয়া বেতন কত | আর্মেনিয়া ভিসার দাম কত
আর্মেনিয়া পূর্ব ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি ও ঐতিহ্যবাহী দেশ। এর রাজধানী ইয়েরেভান শহর সংস্কৃতি, ইতিহাস ও পর্যটনের জন্য বিখ্যাত।বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে বর্তমানে আর্মেনিয়ায় কাজ, ব্যবসা বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তবে বৈধভাবে এই দেশে প্রবেশের জন্য সঠিক ভিসা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরি।
আর্মেনিয়া যাওয়ার উপায়?
বাংলাদেশি নাগরিকরা আর্মেনিয়ায় যেতে হলে অবশ্যই বৈধ ভিসা গ্রহণ করতে হবে। আর্মেনিয়ায় যাওয়ার জন্য যেসব প্রধান ভিসা ক্যাটাগরি প্রযোজ্য তা হলোঃ
- ট্যুরিস্ট ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- ফ্যামিলি রিইউনিয়ন ভিসা
- ডিপ্লোমেটিক ও অফিসিয়াল ভিসা
আর্মেনিয়া ভিসার আবেদন পদ্ধতি?
আর্মেনিয়া ভিসার জন্য আবেদন করা যায় তিনটি উপায়েঃ
১. ই-ভিসার মাধ্যমে (Online)
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।
- আবেদন ফরম পূরণ করে পাসপোর্ট, ছবি, অন্যান্য নথি আপলোড করে আবেদন করতে হয়।
- নির্ধারিত ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হয়।
- সাধারণত ৩ থেকে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে ভিসা ইস্যু হয়।
২. আর্মেনিয়ার দূতাবাসের মাধ্যমে (Manual Application)
বাংলাদেশে আর্মেনিয়ার দূতাবাস না থাকলেও পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থিত দূতাবাসে আবেদন করা যায় (যেমনঃ ভারত)।
৩. অন-অ্যারাইভাল ভিসা (শর্তসাপেক্ষ)
বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। পূর্ব অনুমোদন লাগবে।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসার ধরন অনুযায়ী কাগজপত্রের ভিন্নতা থাকলেও সাধারণভাবে যেসব ডকুমেন্ট লাগবেঃ
- ৬ মাসের মেয়াদসহ বৈধ পাসপোর্ট।
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- সম্পূর্ণ পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম।
- রিটার্ন বিমান টিকিট
- হোটেল বুকিং বা আবাসনের প্রমাণ।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট (শেষ ৬ মাসের)।
- চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট (NOC)।
- ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স ও ট্যাক্স সার্টিফিকেট।
- শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ইনস্টিটিউশনের চিঠি।
- মেডিকেল ইনস্যুরেন্স (প্রয়োজনীয়)।
ওয়ার্ক পারমিট বা স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দরকার হবেঃ
- নিয়োগপত্র বা অফার লেটার।
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি চিঠি ও ফি পরিশোধের রসিদ।
- আর্মেনিয়ান কর্তৃপক্ষের অনুমোদনপত্র।
আর্মেনিয়ায় কাজের সুযোগ ও বেতন?
আর্মেনিয়ায় বিভিন্ন খাতে বিদেশিদের জন্য কাজের সুযোগ রয়েছেঃ
- হসপিটালিটি ও ট্যুরিজম
- নির্মাণশিল্প
- আইটি ও প্রযুক্তি
- কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ
গড় বেতন
- সাধারণ শ্রমিকঃ প্রায় $400-$600 মার্কিন ডলার (প্রায় ৫০,০০০-৭০,০০০ টাকা)।
- দক্ষ পেশাজীবীঃ $800-$1200 বা তার বেশি (প্রায় ৯০,০০০-১,৫০,০০০ টাকা)।
ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?
ই-ভিসা খরচ
সাধারণত $6 থেকে $31 মার্কিন ডলার (ভিসার মেয়াদ অনুযায়ী)।
পুরো ভ্রমণ খরচ (টিকিট, আবাসন, ভিসা, নথিপত্র)
- ব্যক্তিগত উদ্যোগেঃ প্রায় ১.৫ – ২ লাখ টাকা।
- ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমেঃ ৫ – ৭ লাখ টাকা (বেসরকারি প্রক্রিয়ায়)।
ভ্রমণের সময়কাল?
ঢাকা থেকে ইয়েরেভান যেতে সাধারণত ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় লাগে (ট্রানজিটসহ)। ফ্লাইটে এক বা একাধিক ট্রানজিট থাকতে পারে।
আর্মেনিয়ার মুদ্রার নাম কি?
মুদ্রার নাম আর্মেনিয়ান ড্রাম (AMD)
বাংলাদেশে আর্মেনিয়ান দূতাবাসের ঠিকানা?
বর্তমানে বাংলাদেশে আর্মেনিয়ার কোনো দূতাবাস নেই। তবে ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত আর্মেনিয়ান দূতাবাসে বাংলাদেশিরা আবেদন করতে পারেনঃ
- Embassy of the Republic of Armenia in India
- Address: D-1/24, Vasant Vihar, New Delhi – 110057, India
- Email: armindembassy@mfa.am
- Website: http://india.mfa.am
আরও পড়ুনঃ তুর্কমেনিস্তান বেতন কত | তুর্কমেনিস্তান ভিসার দাম কত
সতর্কতা
বর্তমানে অনেক অসাধু ব্যক্তি ও এজেন্সি আর্মেনিয়ার ভিসার নামে ভুয়া প্রলোভন দেখাচ্ছে। এসব থেকে সতর্ক থাকুন। সবসময় সরকারি ও যাচাইযোগ্য মাধ্যম ব্যবহার করুন। ই-ভিসা হচ্ছে নিরাপদ ও সহজ মাধ্যম।
FQAS: আর্মেনিয়া বেতন কত | আর্মেনিয়া ভিসার দাম কত
বাংলাদেশ থেকে কি আর্মেনিয়ায় কাজের সুযোগ আছে?
হ্যাঁ, তবে অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিট থাকতে হবে।
ই-ভিসা পাওয়া কতটা সহজ?
যদি সব কাগজপত্র ঠিক থাকে তবে ৩-৫ দিনে পেতে পারেন।
আর্মেনিয়ার আবহাওয়া কেমন?
মধ্যশীতল জলবায়ু, শীতকালে তুষার পড়ে।
শেষ কথা
আর্মেনিয়ায় যেতে চাইলে আগে থেকেই সঠিক পরিকল্পনা ও তথ্য সংগ্রহ করুন। বৈধ উপায়ে ই-ভিসা বা দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করুন এবং প্রতারণা এড়িয়ে নিরাপদ বিদেশযাত্রা নিশ্চিত করুন।
প্রয়োজনে আমি আর্মেনিয়ার নির্দিষ্ট ভিসা যেমন “স্টুডেন্ট ভিসা” বা “ওয়ার্ক পারমিট ভিসা” সম্পর্কেও আরও আলাদা করে বিস্তারিত লিখে দিতে পারি। জানাতে পারেন।