অস্ট্রেলিয়া বেতন কত | অস্ট্রেলিয়া ভিসার দাম কত
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের অন্যতম উন্নত ও বসবাসযোগ্য দেশ। উচ্চমানের শিক্ষা, বৈচিত্র্যময় কর্মসংস্থান, স্থায়ী নাগরিকত্বের সুযোগ এবং উন্নত জীবনযাত্রার জন্য এটি বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।তবে অস্ট্রেলিয়ায় বৈধভাবে যেতে হলে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানীর নাম হলো ক্যানবেরা।
অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার উপায়?
অস্ট্রেলিয়ায় যেতে হলে প্রাসঙ্গিক ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য জনপ্রিয় ভিসা ক্যাটাগরিগুলো হলোঃ
- স্টুডেন্ট ভিসা (Subclass 500)।
- ওয়ার্ক পারমিট/টেম্পোরারি স্কিলড ভিসা (Subclass 482, 494)।
- পার্মানেন্ট রেসিডেন্স (PR) ভিসা (Subclass 189, 190, 491)।
- ট্যুরিস্ট ভিসা (Subclass 600)।
- পার্টনার/ডিপেনডেন্ট ভিসা।
- ব্যবসা বা ইনভেস্টর ভিসা (Subclass 188, 888)।
সরকারি উপায়ে যাত্রা
সরকারি স্কলারশিপ (যেমনঃ অস্ট্রেলিয়ান অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ) অথবা G2G কর্মসূচির আওতায় অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়া যায়। BOESL বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই তথ্য জানা যায়।
বেসরকারি উপায়ে যাত্রা
অনুমোদিত এজেন্ট বা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাডমিশনের মাধ্যমে স্টুডেন্ট ভিসা, অথবা স্পনসর/নিয়োগকর্তার মাধ্যমে ওয়ার্ক ভিসা প্রাপ্তি সম্ভব। Skilled Migration এ আবেদন করে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগও আছে।
ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
- ভিসার আবেদন সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে হয়, অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট থেকে।
- অনলাইনে ImmiAccount খুলতে হবে।
- আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
- আবেদন ফি জমা দিতে হবে (অনলাইন কার্ড বা ট্রান্সফার মাধ্যমে)।
- প্রয়োজনীয় দলিলপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
- বায়োমেট্রিক/সাক্ষাৎকারের জন্য নির্ধারিত ভিসা সেন্টারে যেতে হবে (VFS Global, Dhaka)।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসার প্রকারভেদ অনুযায়ী কিছু পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে যা লাগেঃ
- কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদি বৈধ পাসপোর্ট।
- সদ্য তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট (Panel physician কর্তৃক)।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদ।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা আর্থিক সাপোর্টের প্রমাণ।
- IELTS বা ইংরেজি দক্ষতার সনদ (স্টুডেন্ট বা PR ভিসার জন্য)।
বিশেষ ভিসার জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র?
- স্টুডেন্ট ভিসাঃ কোর্স অফার লেটার (CoE), টিউশন ফি জমার প্রমাণ, SOP।
- ওয়ার্ক ভিসাঃ নিয়োগপত্র, Sponsorship approval।
- PR ভিসাঃ Skills assessment, EOI, IELTS/PTE, Nominated Occupation List অনুযায়ী ডকুমেন্ট।
- পার্টনার ভিসাঃ সম্পর্কের প্রমাণ, বিয়ের সনদ, যুগল ছবি।
অস্ট্রেলিয়া বেতন কত?
- সাধারণ কাজ (ক্যাফে, ক্লিনিং): ঘণ্টায় AUD 22-25 (প্রায় ১৬০০-১৮০০ টাকা)।
- দক্ষ কাজ (ইঞ্জিনিয়ার, নার্স): ঘণ্টায় AUD 30-60 বা তার বেশি।
- বার্ষিক গড় বেতনঃ AUD ৬৫,০০০-৮০,০০০ (প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকা)।
ভিসা এবং যাত্রা খরচ?
স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
- ভিসা ফিঃ ~AUD 710 (~৫৫,০০০ টাকা)।
- অন্যান্য খরচ (COE, মেডিকেল, বিমা ইত্যাদি): ৩-৪ লাখ টাকা।
- সম্পূর্ণ খরচঃ আনুমানিক ৭-১০ লাখ টাকা।
ওয়ার্ক/PR ভিসা খরচ
- Application ফিঃ AUD ৪০০০-৭০০০।
- স্কিল অ্যাসেসমেন্ট, PTE/IELTS, এজেন্সি ফি ইত্যাদি।
- মোট খরচঃ ৮-১২ লাখ টাকা পর্যন্ত।
ভ্রমণের সময়কাল?
ঢাকা থেকে সিডনি বা মেলবোর্ন যাওয়ার ফ্লাইটে সাধারণত ১৪-২০ ঘণ্টা সময় লাগে, ট্রানজিটসহ এই সময় ২০-২৬ ঘণ্টাও হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ আমেরিকা বেতন কত | আমেরিকা ভিসার দাম কত
সতর্কতা
অবৈধ ভিসা, ভুয়া অফার লেটার বা ভিসা জালিয়াতির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় যাত্রার চেষ্টা করলে কড়া শাস্তি এবং আজীবনের জন্য নিষেধাজ্ঞা হতে পারে। দালাল বা অস্বীকৃত এজেন্ট থেকে দূরে থাকুন।
শেষ কথা
অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা, কাজ বা স্থায়ী বসবাসের জন্য যেতে চাইলে সঠিক তথ্য, ডকুমেন্ট এবং পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট ও অভিজ্ঞ কনসালটেন্টদের সহায়তা নিয়ে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিলে ভিসা পাওয়া সহজ এবং নিরাপদ হয়।