ভিসা

কানাডা বেতন কত | কানাডা ভিসার দাম কত

কানাডা উত্তর আমেরিকার একটি উন্নত ও মানবিক অধিকারসম্মত দেশ। এর রাজধানী অটোয়া হলেও অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে টরন্টো, মন্ট্রিয়ল ও ভ্যাঙ্কুভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।কানাডা বেতন কত | কানাডা ভিসার দাম কতপ্রতিবছর অসংখ্য বাংলাদেশি নাগরিক উন্নত জীবন, শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কানাডা যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বৈধভাবে কানাডা যেতে হলে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

কানাডা যাওয়ার উপায়?

কানাডায় বৈধভাবে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো উপযুক্ত ভিসা গ্রহণ করা। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা প্রযোজ্য, যেমনঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • ফ্যামিলি স্পনসরশিপ ভিসা
  • ভিজিটর/ট্যুরিস্ট ভিসা
  • প্রভিন্সিয়াল নমিনি প্রোগ্রাম (PNP)
  • এক্সপ্রেস এন্ট্রি

সরকারি উপায়ে

বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত সংস্থা বোয়েসেল (BOESL) মাঝে মাঝে সরকারি পর্যায়ে চুক্তিভিত্তিক কাজের সুযোগে কানাডায় কর্মী প্রেরণ করে। এতে আবেদনকারীদের কোনো দালাল ছাড়াই স্বল্প খরচে বৈধ উপায়ে যাওয়া সম্ভব।

বেসরকারি উপায়ে

অনেক কানাডা অনুমোদিত রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি এবং অভিবাসন কনসালট্যান্ট বৈধভাবে কাজ, পড়াশোনা বা স্থায়ী বাসিন্দার সুযোগ করে দেয়। তবে অবশ্যই যাচাইযোগ্য, রেজিস্টার্ড প্রতিষ্ঠান হতে হবে।

কানাডা ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বর্তমানে কানাডা ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। আবেদন করতে হলেঃ

  • IRCC (Canada Immigration) ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
  • নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
  • আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
  • বায়োমেট্রিকস এবং সাক্ষাৎকারের জন্য নির্ধারিত VAC সেন্টারে যেতে হবে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী কিছু পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে দরকার হয়ঃ

  • বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী)
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট (IRCC অনুমোদিত প্যানেল ডাক্তার থেকে)
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ থাকার প্রমাণ)
  • স্পন্সরশিপ বা নিয়োগপত্র (যদি প্রযোজ্য হয়)

বিশেষ ক্যাটাগরির বাড়তি কাগজপত্র?

  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ ভর্তি প্রমাণপত্র (LOA), আইইএলটিএস স্কোর, ফান্ড প্রমাণ।
  • ওয়ার্ক পারমিটঃ LMIA অনুমোদিত নিয়োগপত্র, অভিজ্ঞতার সনদ।
  • স্পনসরশিপঃ পারিবারিক সম্পর্কের প্রমাণ, স্পনসরের আয়ের প্রমাণ।

কানাডা বেতন কত?

কাজের ধরন ও প্রদেশভেদে বেতন ভিন্ন হয়ঃ

  • সাধারণ শ্রমিকের বেতনঃ মাসে প্রায় ১৮০০-২৫০০ কানাডিয়ান ডলার (প্রায় ১.৫-২ লাখ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিক বা প্রফেশনালদের বেতনঃ ৩০০০-৫০০০ ডলার বা তার বেশি (প্রায় ২.৫-৪ লাখ টাকা)।

ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?

খরচের পরিমাণ নির্ভর করে প্রক্রিয়া ও ভিসার ধরন অনুযায়ীঃ

সরকারি উপায়ে

  • ভিসা খরচঃ প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা
  • সম্পূর্ণ খরচঃ ৮-৯ লাখ টাকা

বেসরকারি উপায়ে

  • ভিসা খরচঃ প্রায় ৮-১০ লাখ টাকা
  • সম্পূর্ণ খরচঃ ১০-১২ লাখ টাকা

ভ্রমণের সময়কাল?

ঢাকা থেকে কানাডার যেকোনো প্রধান শহরে যেতে সাধারণত ২০-২৫ ঘণ্টা সময় লাগে। একাধিক ট্রানজিট থাকলে এই সময় ২ দিন পর্যন্ত হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ আর্জেন্টিনা বেতন কত | আর্জেন্টিনা ভিসার দাম কত

সতর্কতাঃ

বর্তমানে অনেক অসাধু দালাল কম খরচে অবৈধভাবে কানাডা পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করছে। তাই সবসময় সরকারি অনুমোদিত মাধ্যম বা কানাডিয়ান সরকারের স্বীকৃত কনসালট্যান্টের মাধ্যমে কাজ করুন।

শেষ কথা

কানাডার মতো উন্নত দেশে কাজ বা পড়াশোনার সুযোগ অনেক। তবে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, যাচাইযোগ্য কাগজপত্র এবং ধৈর্য। অবৈধ পথ নয়, সঠিক পদ্ধতিতে আবেদন করে নিরাপদে ও স্থায়ীভাবে উন্নত জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button