জিবুতি বেতন কত | জিবুতি ভিসার দাম কত
জিবুতি পূর্ব আফ্রিকার একটি ছোট এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশ। এর অবস্থান আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের সংযোগস্থলে হওয়ায় বাণিজ্য ও সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী জিবুতি সিটি।
বাংলাদেশি নাগরিকদের অনেকেই বর্তমানে জিবুতিতে জীবিকার উদ্দেশ্যে যেতে আগ্রহী হচ্ছেন। তবে জিবুতি যেতে হলে অবশ্যই বৈধ ভিসা ও নিয়মিত কাগজপত্র থাকতে হবে।
জিবুতি যাওয়ার উপায়?
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য জিবুতি যেতে হলে বৈধ ভিসা নেওয়া বাধ্যতামূলক। নিম্নলিখিত ভিসাগুলো সাধারণত প্রযোজ্যঃ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- ট্যুরিস্ট ভিসা
- পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা
সরকারি উপায়ে জিবুতি যাত্রা
বর্তমানে জিবুতি সরকারের সাথে বাংলাদেশের সরকারি পর্যায়ে তেমন বড় চুক্তি না থাকলেও BOESL (বোয়েসেল) এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বর্তমানে অধিকাংশ যাত্রী বেসরকারিভাবে যাচ্ছেন।
বেসরকারি উপায়ে জিবুতি যাত্রা
অনেক বাংলাদেশি বেসরকারি এজেন্সি বা বিদেশে অবস্থানরত পরিচিতদের সহায়তায় ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করে জিবুতি যাচ্ছেন। তবে অবশ্যই ভিসার কাগজপত্র যাচাই করে নিতে হবে।
জিবুতি ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
বর্তমানে অনলাইনে জিবুতি ভিসা আবেদন করা যায়। ভিসা প্রক্রিয়া সাধারণত দ্রুত সম্পন্ন হয়। আবেদন পদ্ধতিঃ
- জিবুতি ই-ভিসা ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করুন।
- পাসপোর্ট স্ক্যান কপি ও অন্যান্য ডকুমেন্ট আপলোড করুন।
- আবেদন ফি অনলাইনে প্রদান করুন।
- ৩-৭ কার্যদিবসের মধ্যে ইমেইলে ভিসা চলে আসে।
- প্রিন্ট কপি নিয়ে জিবুতি বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে পারবেন।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসার ধরন অনুযায়ী কিছু পরিবর্তন থাকলেও সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো হলোঃ
- বৈধ পাসপোর্ট (ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদি)
- রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- অনলাইন জন্মনিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- ভিসা ফি প্রদান রসিদ
- ওয়ার্ক পারমিট থাকলে নিয়োগপত্র
বিশেষ ভিসার জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র?
ড্রাইভিং ভিসার ক্ষেত্রে
ড্রাইভিং লাইসেন্স (ইংরেজি অনুবাদ সহ)
স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাডমিশন লেটার
- আর্থিক সাপোর্ট ডকুমেন্ট
জিবুতিতে বেতন কত?
কাজের ধরন ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বেতন ভিন্ন হয়ে থাকে।
- সাধারণ শ্রমিকঃ ৩০০ – ৪০০ ডলার (প্রায় ৩৫,০০০ – ৪৮,০০০ টাকা)।
- দক্ষ শ্রমিকঃ ৫০০ – ৭০০ ডলার (প্রায় ৬০,০০০ – ৮৪,০০০ টাকা)।
- ট্রেইন্ড ড্রাইভার, মেকানিকঃ ৭৫০ – ১২০০ ডলার পর্যন্ত সম্ভব।
ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?
ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ নির্ভর করে কিভাবে যাচ্ছেন তার উপর।
সরকারিভাবে (যদি সুযোগ থাকে)
- ভিসা খরচঃ ৬০,০০০ – ৭০,০০০ টাকা।
- সম্পূর্ণ খরচঃ ২ – ৩ লাখ টাকা।
বেসরকারিভাবে (এজেন্সির মাধ্যমে)
- ভিসা সহ খরচঃ ৩.৫ – ৫ লাখ টাকা।
- এজেন্সি ভেদে ভিন্নতা থাকতে পারে।
ভ্রমণের সময়কাল?
বাংলাদেশ থেকে জিবুতি যেতে সাধারণত ১২ – ১৬ ঘণ্টা সময় লাগে। একাধিক ট্রানজিট থাকতে পারে। রুট সাধারণতঃ ঢাকা → দোহা/দুবাই → আদ্দিস আবাবা → জিবুতি।
জিবুতির মুদ্রার নাম কি?
জিবুতির মুদ্রার নাম হলো Djiboutian Franc (DJF)। ১ ডলার ≈ ১৭৭ জিবুতিয়ান ফ্রাঙ্ক (পরিবর্তনশীল)।
জিবুতিতে বাংলাদেশি দূতাবাস আছে কি?
না, বর্তমানে জিবুতিতে বাংলাদেশের নিজস্ব দূতাবাস নেই। ইথিওপিয়াতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস জিবুতির সকল কার্যক্রম দেখে। ঠিকানাঃ
- Embassy of Bangladesh
- Kirkos Sub City, Kebele-17, House No. 258, Addis Ababa, Ethiopia
আরও পড়ুনঃ মোজাম্বিক বেতন কত | মোজাম্বিক ভিসার দাম কত
সতর্কতা
বর্তমানে অনেক প্রতারক ও দালাল কম খরচে অবৈধভাবে জিবুতি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করছে। এদের কাছ থেকে সতর্ক থাকুন।
ভিসা কাগজপত্র যাচাই না করে কাউকে টাকা দিবেন না। সবসময় সরকার অনুমোদিত এজেন্সি বা বিশ্বস্ত পরিচিতের মাধ্যমে বিদেশ যাত্রা করুন।
FAQS: জিবুতি বেতন কত | জিবুতি ভিসার দাম কত
জিবুতিতে কী ধরনের কাজ পাওয়া যায়?
সাধারণ শ্রমিক, নির্মাণশ্রমিক, ড্রাইভার, দোকান সহকারী, সিকিউরিটি গার্ড ইত্যাদি পদে কাজ মেলে।
ভিসার মেয়াদ কতদিন?
সাধারণত ৯০ দিন, পরে ওয়ার্ক পারমিট থাকলে বাড়ানো যায়।
জিবুতি থেকে কি অন্য দেশে যাওয়া যায়?
জিবুতি থেকে সরাসরি ইউরোপ বা আরব দেশে যাওয়া কঠিন, তবে বৈধভাবে কাজ করে রেসিডেন্স পেলে কিছু সুযোগ আসতে পারে।
শেষ কথা
জিবুতিতে কাজ বা বসবাসের জন্য যেতে চাইলে অবশ্যই সঠিক তথ্য ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরি। ভিসা আবেদন, কাগজপত্র প্রস্তুতি এবং আর্থিক খরচ সম্পর্কে আগে থেকে জানলে আপনি সহজেই প্রতারণা এড়িয়ে নিরাপদে বিদেশ যেতে পারবেন।