গুগল ভয়েস থেকে ইনকাম | গুগল ভয়েস দিয়ে ইনকাম
গুগল ভয়েস (Google Voice) মূলত একটি ফ্রি কলিং, টেক্সটিং এবং ভয়েসমেইল সার্ভিস। এটি সরাসরি কোনো আয়ের প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং যোগাযোগের একটি টুল।
তবে অনেকেই গুগল ভয়েসকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্নভাবে অনলাইনে ইনকাম করে থাকেন। এই ব্লগে গুগল ভয়েস থেকে ইনকাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
গুগল ভয়েস থেকে ইনকাম | গুগল ভয়েস দিয়ে ইনকাম
নিচে গুগল ভয়েস থেকে ইনকাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১. ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম
ফ্রিল্যান্সাররা অনেক সময় ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি আলাদা নম্বর ব্যবহার করতে চান। গুগল ভয়েস দিয়ে আপনি একটি ইউনিক নম্বর তৈরি করে ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্ম (Upwork, Fiverr, Freelancer)
থেকে কাজ পাওয়ার পর ক্লায়েন্টদের সাথে সহজে কল/মেসেজ করতে পারবেন। এতে প্রফেশনাল ইমেজ তৈরি হয়, যা কাজের সুযোগ বাড়ায়।
২. অনলাইন কাস্টমার সাপোর্ট সার্ভিস
যদি আপনি কোনো অনলাইন বিজনেস চালান বা ড্রপশিপিং/ই-কমার্স করেন, তাহলে গুগল ভয়েস নাম্বার ব্যবহার করে কাস্টমার সাপোর্ট দিতে পারেন।
কাস্টমার কেয়ার সার্ভিসের জন্য আলাদা ভয়েস নাম্বার ব্যবহার করলে ব্যবসা অনেক বেশি প্রফেশনাল দেখায়, ফলে বিক্রি বাড়ে এবং আয়ও বাড়ে।
৩. রিমোট কল সেন্টার বা BPO কাজ
অনেক কোম্পানি রিমোট কল সেন্টার এজেন্ট নিয়োগ করে। গুগল ভয়েস ব্যবহার করে আপনি যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের কোম্পানির কাস্টমারদের সাপোর্ট দিতে পারবেন। এই ধরনের কাজ থেকে মাসিক ডলারে ইনকাম করা সম্ভব।
৪. লিড জেনারেশন সার্ভিস
ডিজিটাল মার্কেটাররা অনেক সময় আলাদা গুগল ভয়েস নম্বর ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন বা মার্কেটিং ক্যাম্পেইন চালান। এরপর লিড (কাস্টমারের কন্টাক্ট) সংগ্রহ করে ক্লায়েন্টদের কাছে বিক্রি করে আয় করেন।
৫. অনলাইন কোচিং বা কনসালটেন্সি
যদি আপনি কোনো স্কিলে এক্সপার্ট হন (যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, ইংরেজি শেখানো, আইটি সাপোর্ট), তাহলে গুগল ভয়েস ব্যবহার করে বিদেশি ক্লায়েন্টদের ফোনে ট্রেনিং/কনসালটেশন দিতে পারেন। এতে প্রতি ঘন্টায় ভালো পরিমাণে ইনকাম করা সম্ভব।
৬. ভয়েসমেইল ভিত্তিক সার্ভিস
গুগল ভয়েস ভয়েসমেইল ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিস দেয়। কিছু মানুষ ব্যবসার জন্য কাস্টম ভয়েসমেইল মেসেজ তৈরি করে বিক্রি করেন। এই কাজটি Fiverr বা Upwork এর মতো প্ল্যাটফর্মে অফার করা যায়।
৭. মার্কেটিং ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স কাজ
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টরা গুগল ভয়েস ব্যবহার করে ক্লায়েন্টের হয়ে কল রিসিভ, টেক্সট পাঠানো, বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট শিডিউল করেন। এই ধরনের কাজ ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে অনেক ডিমান্ডে থাকে।
৮. রিমোট রিসেপশনিস্ট সার্ভিস
অনেক ছোট ব্যবসা বা স্টার্টআপ তাদের জন্য ফুল-টাইম রিসেপশনিস্ট রাখতে পারে না। গুগল ভয়েস ব্যবহার করে আপনি তাদের ইনকামিং কল রিসিভ করতে পারেন, কাস্টমারের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন
এবং তাদের কাছে কল ফরোয়ার্ড করতে পারেন। এই কাজটি মাসিক কন্ট্রাক্টে করা যায় এবং ভালো আয় হয়।
৯. ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস
গুগল ভয়েসের মাধ্যমে আলাদা একটি ব্যবসায়িক নম্বর ব্যবহার করে ক্লায়েন্টদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারেন।
যেমন: অ্যাপয়েন্টমেন্ট রিমাইন্ডার পাঠানো, অর্ডার কনফার্মেশন জানানো, অথবা কাস্টমার ফলো-আপ করা। এগুলো করতে পারলে ব্যবসা বা ফ্রিল্যান্সিং কাজ থেকে ইনকাম অনেক বেড়ে যায়।
১০. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাপোর্ট
আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হন, তবে বিজ্ঞাপনে আলাদা গুগল ভয়েস নম্বর ব্যবহার করতে পারেন। যখন ইউজাররা কল করে তথ্য জানতে চাইবে, তখন তাদেরকে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্কে পাঠিয়ে বিক্রির মাধ্যমে কমিশন ইনকাম করা যায়।
১১. অনলাইন টিউটরিং ও ভাষা শিক্ষা
গুগল ভয়েস দিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সাথে কলের মাধ্যমে অনলাইন টিউশন করতে পারেন। যেমন ইংরেজি শেখানো, বাংলা শেখানো বা অন্য যে কোনো বিষয়ে কোচিং দেওয়া যায়। এতে প্রতি ঘণ্টায় ডলার আয় সম্ভব।
১২. ড্রপশিপিং বা ই-কমার্স বিজনেসে ব্যবহার
যদি আপনি Shopify, Amazon বা অন্য কোনো ই-কমার্স চালান, গুগল ভয়েস দিয়ে কাস্টমারদের কল রিসিভ করে সাপোর্ট দিতে পারেন। এতে কাস্টমার ট্রাস্ট বাড়ে এবং বিক্রি বাড়ার কারণে পরোক্ষভাবে ইনকাম বৃদ্ধি পায়।
১৩. সার্ভিস-ভিত্তিক লোকাল বিজনেস টার্গেটিং
বিদেশি লোকাল সার্ভিস ব্যবসার (যেমন: প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান, ড্রাইভিং ইনস্ট্রাক্টর) জন্য মার্কেটিং করলে গুগল ভয়েস নম্বর ব্যবহার করে লিড সংগ্রহ করা যায়। এরপর ওই লিড বিক্রি করে ইনকাম করা সম্ভব।
১৪. ডকুমেন্টেশন ও ভয়েস টু টেক্সট সার্ভিস
গুগল ভয়েস ভয়েসমেইলকে টেক্সটে রূপান্তর করতে পারে। এই ফিচার ব্যবহার করে ক্লায়েন্টদের অডিও নোট বা কলের সারাংশ লিখে দেওয়ার কাজ Fiverr/Upwork এ বিক্রি করা যায়।
১৫. অনলাইন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস
অনেক সময় অনলাইন সেমিনার, ওয়েবিনার বা ওয়ার্কশপে রেজিস্ট্রেশন/সাপোর্ট দেওয়ার জন্য আলাদা নাম্বার দরকার হয়। গুগল ভয়েস ব্যবহার করে সেই কাজটি করে পারিশ্রমিক নেওয়া যায়।
১৬. বিজনেস কার্ড ও প্রফেশনাল প্রোফাইলে ব্যবহার
আপনি যদি নিজের সার্ভিস প্রোমোট করেন (যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট), তাহলে গুগল ভয়েস নম্বর ব্যবহার করে বিদেশি ক্লায়েন্টদের কাছে প্রফেশনাল ইমেজ তৈরি করতে পারেন। এতে ইনবক্সে শুধু ইমেইল না, ফোন কলও আসে, ফলে কাজ পাওয়ার সুযোগ বাড়ে।
১৭. সেকেন্ডারি নাম্বার ভাড়া দিয়ে ইনকাম
অনেক সময় বিদেশি ইউজাররা ভেরিফিকেশনের জন্য ইউএস নাম্বার চায়। গুগল ভয়েস নাম্বার ভাড়া দিয়ে নির্দিষ্ট ফি আয় করা যায় (তবে এটি নৈতিক ও বৈধভাবে করতে হবে)।
১৮. ছোট স্কেলে ভার্চুয়াল কল সেন্টার তৈরি
আপনি চাইলে একটি টিম নিয়ে গুগল ভয়েসের মাধ্যমে ছোট কল সেন্টার তৈরি করতে পারেন। বিভিন্ন ই-কমার্স, মার্কেটার বা সার্ভিস প্রোভাইডারের কাস্টমার সার্ভিস আউটসোর্সিং নিয়ে ব্যবসা করা যায়।
১৯. অনলাইন সাপোর্ট এজেন্ট হিসেবে কাজ
অনেক সফটওয়্যার কোম্পানি, হোস্টিং প্রোভাইডার বা স্টার্টআপ কাস্টমার সাপোর্টের জন্য রিমোট এজেন্ট নিয়োগ করে।
আপনি গুগল ভয়েস ব্যবহার করে বিদেশি কাস্টমারদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন এবং মাসিক বেতন বা ঘণ্টা ভিত্তিক ইনকাম করতে পারেন।
২০. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্ভিসে ব্যবহার
ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে VA (Virtual Assistant) কাজের চাহিদা অনেক। যেমন: কল রিসিভ করা, ক্লায়েন্টদের মেসেজ দেওয়া, অ্যাপয়েন্টমেন্ট ঠিক করা ইত্যাদি।
গুগল ভয়েস দিয়ে এসব কাজ খুব সহজে করা যায়, এবং আপনি মাসিক ডলারে উপার্জন করতে পারেন।
২১. অনলাইন রিসার্চ ও সার্ভে কল
গুগল ভয়েস ব্যবহার করে মার্কেট রিসার্চ কোম্পানির হয়ে সার্ভে কল করা যায়। এতে নির্দিষ্ট ফি পাওয়া যায়। এই ধরনের কাজ সাধারণত মার্কেটিং বা কনসালটিং ফার্ম আউটসোর্স করে।
২২. কোল্ড কলিং বা টেলিমার্কেটিং
বিদেশি কোম্পানির প্রোডাক্ট/সার্ভিস প্রোমোট করার জন্য কোল্ড কলিং করা হয়। গুগল ভয়েস দিয়ে ইউএস নাম্বার ব্যবহার করে টার্গেট কাস্টমারের সাথে সহজে যোগাযোগ করা যায়। এতে কমিশন বা ঘণ্টাভিত্তিক আয় সম্ভব।
২৩. অনলাইন রিক্রুটমেন্ট বা হায়ারিং এজেন্ট
আপনি গুগল ভয়েস ব্যবহার করে বিদেশি কোম্পানির জন্য রিক্রুটমেন্ট কল করতে পারেন। যেমন: চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ কল করা, প্রাথমিক তথ্য নেওয়া ইত্যাদি। এই ধরনের কাজ থেকে ভালো অঙ্কের অর্থ পাওয়া যায়।
২৪. ট্রাভেল ও ট্যুরিজম সাপোর্ট
অনেক ট্রাভেল এজেন্সি বা ট্যুরিজম কোম্পানি কাস্টমারদের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন ইত্যাদি নিয়ে হেল্প করে। গুগল ভয়েস দিয়ে সেই কাস্টমার সাপোর্ট দিলে কমিশন ও বেতনভিত্তিক ইনকাম করা সম্ভব।
২৫. হেল্পলাইন সার্ভিস
গুগল ভয়েস নাম্বার ব্যবহার করে আপনি নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে হেল্পলাইন খুলতে পারেন। যেমন: “স্টুডেন্ট গাইডলাইন হেল্প”, “আইটি সাপোর্ট হেল্প” ইত্যাদি। নির্দিষ্ট চার্জ নিয়ে সার্ভিস দিয়ে ইনকাম করা যায়।
২৬. রিয়েল এস্টেট কাস্টমার কল হ্যান্ডলিং
বিদেশি অনেক রিয়েল এস্টেট এজেন্ট কাস্টমার কল হ্যান্ডেল করার জন্য ফ্রিল্যান্সার নিয়োগ করে। গুগল ভয়েস দিয়ে সেসব কল রিসিভ করে ক্লায়েন্টকে তথ্য দিয়ে আয় করা যায়।
২৭. লোকাল বিজনেস ডিরেক্টরি সার্ভিস
আপনি চাইলে গুগল ভয়েস নাম্বার ব্যবহার করে একটি লোকাল সার্ভিস ডিরেক্টরি চালু করতে পারেন। যেমন: লোকাল প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান বা দোকানের তথ্য দিয়ে কাস্টমারদের কল কানেক্ট করা। এর মাধ্যমে ব্যবসা থেকে কমিশন ইনকাম করা যায়।
২৮. অনলাইন কনসালটেশন ব্যবসা
যদি আপনি কোনো ফিল্ডে বিশেষজ্ঞ হন (যেমন: স্বাস্থ্য, ক্যারিয়ার গাইডলাইন, ভিসা প্রসেসিং), তাহলে গুগল ভয়েস দিয়ে কনসালটেশন সেশন নিতে পারেন। প্রতি সেশনে ফি নিয়ে ইনকাম করা যায়।
২৯. অনলাইন মার্কেটিং টিম তৈরি
গুগল ভয়েস দিয়ে একটি টিম তৈরি করে কাস্টমারদের সাথে কল/মেসেজ করে পণ্য বিক্রি করা যায়। ছোট ব্যবসা বা স্টার্টআপ এই ধরনের আউটসোর্সিং প্রায়ই করে থাকে।
৩০. রিমোট প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট
আপনি গুগল ভয়েস ব্যবহার করে টিম মেম্বার ও ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করে রিমোট প্রজেক্ট ম্যানেজ করতে পারেন। অনেক ফ্রিল্যান্স প্রজেক্ট ম্যানেজার এইভাবে ডলারে ইনকাম করেন।
৩১. ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মে সাপোর্ট সার্ভিস
যারা Udemy, Skillshare বা নিজস্ব কোর্স সাইট চালান, তাদের জন্য কাস্টমার সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। গুগল ভয়েস দিয়ে আপনি শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন এবং কোর্স সেল বাড়াতে সাহায্য করতে পারেন। এতে সাপোর্ট এজেন্ট হিসেবে আয় সম্ভব।
৩২. স্টার্টআপ বিজনেস কল হ্যান্ডলিং
বিদেশি অনেক ছোট ব্যবসা শুরুতে ফুল-টাইম কাস্টমার সাপোর্ট রাখতে পারে না। তারা আউটসোর্স করে। গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে আপনি তাদের কাস্টমার কল রিসিভ করে মাসিক আয় করতে পারবেন।
৩৩. হেলথ কনসালটেশন সার্ভিস
যদি আপনার হেলথ বা মেডিকেল বিষয়ক নলেজ থাকে (যেমন ফিটনেস ট্রেইনার, ডায়েট কনসালট্যান্ট), তবে গুগল ভয়েস নাম্বার ব্যবহার করে বিদেশি ক্লায়েন্টদের অনলাইন পরামর্শ দিয়ে পার সেশন ফি নিতে পারেন।
৩৪. ফ্রিল্যান্স টেক সাপোর্ট
গুগল ভয়েস দিয়ে বিদেশি ক্লায়েন্টদের কম্পিউটার, সফটওয়্যার বা মোবাইল সমস্যায় টেক সাপোর্ট দিতে পারেন। যেমন: সফটওয়্যার ইন্সটল, ট্রাবলশুটিং, রিমোট টেক হেল্প। এই ধরনের কাজ Fiverr, Upwork এ খুব জনপ্রিয়।
৩৫. কাস্টম ভয়েস গ্রিটিং/IVR সার্ভিস
ব্যবসায়ীরা ফোনে কাস্টম ভয়েস গ্রিটিং (Welcome message, IVR menu) চান। গুগল ভয়েস ব্যবহার করে তাদের জন্য প্রফেশনাল গ্রিটিং রেকর্ড করে Fiverr এ বিক্রি করতে পারেন।
৩৬. ইভেন্ট বা কনফারেন্স রেজিস্ট্রেশন কল
অনেক অনলাইন ইভেন্ট বা কনফারেন্সে ফোনে রেজিস্ট্রেশন/কনফার্মেশন সার্ভিস লাগে। গুগল ভয়েস দিয়ে কল রিসিভ করে এই কাজ করলে ভালো পারিশ্রমিক পাওয়া যায়।
৩৭. সাবস্ক্রিপশন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট
কোনো কোম্পানির সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক সার্ভিস (যেমন নিউজলেটার, সফটওয়্যার সাবস্ক্রিপশন) ম্যানেজ করার জন্য কল হ্যান্ডলিং দরকার হয়। গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে সেই কলগুলো ম্যানেজ করে মাসিক আয় সম্ভব।
৩৮. আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্স টিমে কমিউনিকেশন
আপনি যদি একটি রিমোট টিম চালান, তবে গুগল ভয়েস দিয়ে আলাদা নাম্বার ব্যবহার করে টিম মেম্বার ও ক্লায়েন্টদের সাথে কমিউনিকেশন রাখতে পারবেন। টিম ম্যানেজমেন্ট ফ্রিল্যান্স কাজ থেকে ভালো আয় হয়।
৩৯. অনলাইন সেলস ও প্রোডাক্ট প্রোমোশন
গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে টার্গেট মার্কেটে সরাসরি কল করে প্রোডাক্ট বিক্রি বা সার্ভিস প্রোমোট করতে পারেন। অনেক ব্যবসা এর জন্য কমিশন ভিত্তিক সেলস এজেন্ট নিয়োগ করে।
৪০. ভয়েস-ভিত্তিক সার্ভিস রিভিউ/টেস্টিং
কিছু সফটওয়্যার কোম্পানি তাদের VoIP বা কলিং অ্যাপ টেস্ট করানোর জন্য লোক নিয়োগ করে। গুগল ভয়েস দিয়ে এসব টেস্ট কল করে রিভিউ দিলে নির্দিষ্ট ফি পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ সেরা ২০টি উপায় ভিডিও দেখে টাকা ইনকাম
৪১. পডকাস্ট বা অডিও শোতে কল-ইন সার্ভিস
আপনি যদি নিজে পডকাস্ট চালান বা অন্য কারও শো ম্যানেজ করেন, গুগল ভয়েস দিয়ে শ্রোতাদের কল-ইন সার্ভিস দিতে পারেন। এতে শ্রোতারা সহজে যুক্ত হতে পারে এবং স্পন্সরশিপ/অ্যাড থেকে আয় হয়।
৪২. ভার্চুয়াল ইন্টারভিউ কনডাক্ট করা
বিদেশি কোম্পানির হয়ে চাকরিপ্রার্থীদের প্রাথমিক ইন্টারভিউ নিতে পারেন। গুগল ভয়েস দিয়ে এসব ইন্টারভিউ কনডাক্ট করে নির্দিষ্ট ফি আয় করা যায়।
৪৩. নন-প্রফিট বা ফান্ডরেইজিং সাপোর্ট
যারা এনজিও বা ফান্ডরেইজিং ক্যাম্পেইন চালান, তাদের হয়ে ফোন কল রিসিভ বা দাতা (donor) সংগ্রহ করতে পারেন। এই কাজের বিনিময়ে তারা রিমোট সাপোর্ট এজেন্টকে পারিশ্রমিক দেয়।
৪৪. ভয়েস ব্লাস্ট মার্কেটিং
কিছু ব্যবসা প্রচারণার জন্য একসাথে অনেক গ্রাহককে কল/ভয়েসমেইল পাঠায়। গুগল ভয়েস দিয়ে এই ধরনের ভয়েস ব্লাস্ট মার্কেটিং সার্ভিস সেটআপ করে আয় করা যায়।
৪৫. B2B (Business to Business) লিড সাপোর্ট
বিজনেস টু বিজনেস মার্কেটিংয়ে কাস্টমার কল খুব গুরুত্বপূর্ণ। গুগল ভয়েস দিয়ে বিজনেস কল হ্যান্ডলিং করে লিড জেনারেশন সার্ভিস চালিয়ে আয় করা যায়।
৪৬. ভয়েস-ভিত্তিক কোচিং বা কাউন্সেলিং
যদি আপনি মোটিভেশনাল স্পিকার, ক্যারিয়ার গাইডার বা কাউন্সেলর হন, গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে সরাসরি কল সেশন করতে পারেন। প্রতিটি সেশনে চার্জ নিয়ে আয় করা যায়।
৪৭. কাস্টমার সার্ভে ও ফিডব্যাক কল
কোনো কোম্পানির গ্রাহক থেকে ফিডব্যাক নেওয়ার কাজ করতে পারেন। গুগল ভয়েস দিয়ে তাদের কল করে সার্ভে ডাটা সংগ্রহ করলে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আয় হয়।
৪৮. পেইড হটলাইন সার্ভিস
আপনি চাইলে নির্দিষ্ট বিষয়ে (যেমন ভিসা প্রসেসিং, জব গাইডলাইন, আইটি সাপোর্ট) একটি “হটলাইন” চালু করতে পারেন। যেখানে গুগল ভয়েসে কল করে মানুষ আপনার কাছ থেকে গাইডলাইন নেবে, আর আপনি প্রতি মিনিট/ঘণ্টা চার্জ নিতে পারবেন।
৪৯. ফ্রিল্যান্স রিমোট সেক্রেটারি
বিদেশি উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীরা ব্যক্তিগত সেক্রেটারি রাখেন। গুগল ভয়েস দিয়ে তাদের কল ম্যানেজ, মেসেজ ফরওয়ার্ড এবং ক্যালেন্ডার রিমাইন্ডার সেট করে ইনকাম করতে পারবেন।
৫০. এডুকেশন হেল্পলাইন তৈরি
স্টুডেন্টদের জন্য একটি এডুকেশন হেল্পলাইন বানাতে পারেন, যেমন: ভর্তি তথ্য, বিদেশে পড়াশোনা, স্কলারশিপ গাইডলাইন ইত্যাদি। গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে হেল্পলাইন চালিয়ে সাবস্ক্রিপশন/সার্ভিস ফি নেওয়া সম্ভব।
৫১. সাবস্ক্রিপশন-বেসড অ্যাডভাইস সার্ভিস
গুগল ভয়েসে কল রিসিভ করে নির্দিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ দিতে পারেন (যেমন: ডিজিটাল মার্কেটিং টিপস, ব্যবসা উন্নয়ন গাইডলাইন)। ইউজাররা মাসিক ফি দিয়ে আপনাকে কল করতে পারবে।
৫২. ডক্টর/ল’ কনসালটেশন সার্ভিস
বিদেশি অনেক ডাক্তার, আইনজীবী অনলাইনে রোগী বা ক্লায়েন্টদের সাথে প্রাথমিক আলোচনা করেন। গুগল ভয়েস দিয়ে এ ধরনের কল হ্যান্ডল করার জন্য আউটসোর্সিং কাজ পেলে আয় করা যায়।
৫৩. রিমোট সেলস সাপোর্ট
ই-কমার্স বা সফটওয়্যার কোম্পানি অনেক সময় কল সাপোর্টের মাধ্যমে অর্ডার কনফার্মেশন করায়। গুগল ভয়েস দিয়ে এসব কল করলে প্রতি কনফার্মড সেলে কমিশন আয় সম্ভব।
৫৪. অনলাইন গ্রুপ ক্লাস/সেমিনার হোস্টিং
আপনি যদি শিক্ষক হন, গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ও সাপোর্ট সার্ভিস দিয়ে অনলাইন গ্রুপ ক্লাস বা সেমিনার চালু করতে পারেন এবং টিকিট/ফি চার্জ করে ইনকাম করতে পারেন।
৫৫. ই-কমার্স অর্ডার ভেরিফিকেশন এজেন্ট
বিদেশি ও লোকাল শপ অনেক সময় অর্ডার ভেরিফিকেশনের জন্য কল করে। গুগল ভয়েস দিয়ে এই কাজের আউটসোর্সিং নিয়ে মাসিক বেতনভিত্তিক কাজ সম্ভব।
৫৬. ইউটিউবার/ইনফ্লুয়েন্সার কল ম্যানেজমেন্ট
অনেক ইউটিউবার/ইনফ্লুয়েন্সার তাদের ভক্ত বা ব্র্যান্ড কল আলাদা নাম্বারে নিতে চান। আপনি গুগল ভয়েস দিয়ে তাদের কল হ্যান্ডল করতে পারেন এবং ম্যানেজার হিসেবে ইনকাম করতে পারেন।
৫৭. ইমার্জেন্সি ইনফরমেশন লাইন
যদি আপনি কোনো সার্ভিস (যেমন: হেলথ টিপস, ট্রাভেল গাইড, জব সার্কুলার) নিয়ে কাজ করেন, তাহলে গুগল ভয়েস দিয়ে হটলাইন চালিয়ে কল অনুযায়ী চার্জ নিতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়
৫৮. অনলাইন রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট
অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা মার্কেটিং এজেন্সি কাস্টমারদের ফোনে জরিপ করায়। গুগল ভয়েস দিয়ে এসব কল করে ডাটা সংগ্রহের কাজ করলে ইনকাম করা যায়।
৫৯. কল-ভিত্তিক লিড ফিল্টারিং
কোম্পানিগুলো অনেক সময় প্রচুর লিড পায়, কিন্তু সবগুলোর সাথে কথা বলা সম্ভব হয় না। গুগল ভয়েস দিয়ে আপনি প্রাথমিকভাবে লিড ফিল্টার করতে পারেন এবং যোগ্য লিড ক্লায়েন্টের কাছে পাঠিয়ে পারিশ্রমিক নিতে পারেন।
৬০. হোম-বেসড কল সেন্টার এজেন্ট
গুগল ভয়েস দিয়ে ঘরে বসে ছোট পরিসরে কল সেন্টার চালাতে পারেন। ২-৩ জনের টিম নিয়ে বিদেশি ক্লায়েন্টের কাস্টমার সাপোর্ট দিলে মাসিক ডলার আয় সম্ভব।
৬১. ফ্রিল্যান্স রিক্রুটমেন্ট এজেন্ট
গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে বিদেশি কোম্পানির জন্য প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের কল নিয়ে স্ক্রিনিং করতে পারেন। এতে প্রতিজন প্রার্থী নিয়োগ হলে কমিশন পান।
৬২. ই-কমার্স রিটার্ন/এক্সচেঞ্জ সাপোর্ট
অর্ডার রিটার্ন/এক্সচেঞ্জ সংক্রান্ত কল গুগল ভয়েস দিয়ে হ্যান্ডেল করে ইনকাম করা যায়। অনেক Shopify বা Amazon স্টোর মালিক এই কাজ আউটসোর্স করেন।
৬৩. অনলাইন টেলিমার্কেটিং সার্ভিস
বিদেশি ব্যবসার জন্য ফোনের মাধ্যমে প্রোডাক্ট/সার্ভিস প্রোমোট করতে পারেন। গুগল ভয়েস ব্যবহার করে টেলিমার্কেটার হিসেবে কমিশন বা বেতনভিত্তিক কাজ সম্ভব।
৬৪. সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্য বুকিং লাইন
গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে ফ্যান বা ব্র্যান্ডদের জন্য আলাদা বুকিং লাইন চালাতে পারেন এবং এর ম্যানেজমেন্ট ফি নিতে পারেন।
৬৫. কাস্টমার ফলো-আপ সার্ভিস
যে কোম্পানি সার্ভিস বিক্রি করে, তাদের কাস্টমারদের নিয়মিত ফলো-আপ কল করার কাজ নিতে পারেন। গুগল ভয়েস দিয়ে এগুলো সহজে ম্যানেজ করা যায়।
FAQs:
১. গুগল ভয়েস কি বাংলাদেশ/ভারত/অন্যান্য দেশে কাজ করে?
গুগল ভয়েস অফিসিয়ালি শুধু যুক্তরাষ্ট্রে ফুল ফিচার সহ ব্যবহারযোগ্য। তবে VPN, US Google Account বা ভার্চুয়াল নাম্বার ব্যবহার করে অন্য দেশ থেকেও নাম্বার নেওয়া সম্ভব।
২. গুগল ভয়েস দিয়ে সরাসরি কি টাকা আয় করা যায়?
না। গুগল ভয়েস নিজে থেকে টাকা দেয় না। কিন্তু এটি কাস্টমার সার্ভিস, ফ্রিল্যান্সিং, কনসালটেশন বা টেলিমার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়ের একটি টুল হিসেবে কাজ করে।
৩. গুগল ভয়েস দিয়ে কল করলে কি আন্তর্জাতিক চার্জ লাগে?
ইউএস নাম্বার দিয়ে ইউএস এ কল করলে ফ্রি। কিন্তু অন্য দেশে কল করলে সাধারণত কিছু চার্জ প্রযোজ্য হয়। তবে এটি অনেকটা সস্তা, Skype বা অন্যান্য VoIP সার্ভিসের মতো।
আরও পড়ুনঃ অনলাইনে টাকা ইনভেস্ট করে ইনকাম
৪. গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে ব্যবসায়িক কল নেওয়া কি নিরাপদ?
হ্যাঁ, কারণ এটি আপনার আসল ফোন নাম্বার হাইড করে রাখে। আপনি আলাদা প্রফেশনাল নাম্বার ব্যবহার করতে পারেন, যা অনেক নিরাপদ।
৫. গুগল ভয়েস নাম্বার দিয়ে কি ফ্রিল্যান্সিং করা যায়?
অবশ্যই। কাস্টমার সাপোর্ট, কল সেন্টার, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, টেক সাপোর্ট, টিউটরিং ইত্যাদি অনেক কাজ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে গুগল ভয়েস ব্যবহার করে করা হয়।
৬. গুগল ভয়েস নাম্বার কিভাবে পাব?
আপনাকে একটি US Google Account লাগবে। তারপর Google Voice ওয়েবসাইটে গিয়ে ফ্রি নাম্বার সিলেক্ট করতে হবে। অনেকেই পেইড ভার্চুয়াল ইউএস নাম্বার (TextNow, Skype ইত্যাদি) ব্যবহার করে অ্যাক্টিভেট করেন।
৭. গুগল ভয়েস দিয়ে আয়ের সেরা উপায় কোনগুলো?
কাস্টমার সাপোর্ট, টেলিমার্কেটিং, অনলাইন কনসালটেশন, কল সেন্টার সার্ভিস, এডুকেশন হেল্পলাইন, লিড জেনারেশন এগুলো সবচেয়ে জনপ্রিয়।
৮. গুগল ভয়েস দিয়ে কি কল রেকর্ড করা যায়?
হ্যাঁ, গুগল ভয়েসে কল রেকর্ড করার অপশন আছে। তবে অবশ্যই আইনগতভাবে অনুমতি নিতে হবে।
৯. গুগল ভয়েস কি সম্পূর্ণ ফ্রি?
বেসিকভাবে ফ্রি। তবে কিছু ফিচার (আন্তর্জাতিক কল ইত্যাদি) পেইড।
১০. গুগল ভয়েস দিয়ে মাসে কত আয় করা সম্ভব?
নির্দিষ্ট পরিমাণ বলা যায় না। তবে যারা কল সেন্টার/কাস্টমার সাপোর্ট কাজ করেন তারা মাসে $200 – $1000+ পর্যন্ত আয় করতে পারেন, কাজ ও ক্লায়েন্টের উপর নির্ভর করে।