ভিসা

হংকং বেতন কত | হংকং ভিসার দাম কত

হংকং পূর্ব এশিয়ার একটি আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, যা প্রশাসনিকভাবে চীন এর অধীন হলেও এর নিজস্ব আইন ও অভিবাসন নীতি রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হওয়ায় হংকং এ কাজের সুযোগও অনেক বেশি।হংকং বেতন কত | হংকং ভিসার দাম কতপ্রতিবছর অসংখ্য বাংলাদেশি নাগরিক জীবিকার উদ্দেশ্যে হংকং যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে সঠিক ও বৈধ প্রক্রিয়ায় যাওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

হংকং যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হংকংয়ে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো বৈধ ভিসা গ্রহণ করা। সাধারণত নিচের ক্যাটাগরির ভিসাগুলো পাওয়া যায়ঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • ডোমেস্টিক হেলপার (ঘরের কাজের) ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা
  • ফ্যামিলি রিইউনিয়ন ভিসা (পরিবার সংযুক্তিকরণ)

সরকারি উপায়

বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত সংস্থা BOESL (বোয়েসেল) এর মাধ্যমে মাঝে মাঝে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক পাঠানো হয়ে থাকে। যদিও হংকং-এর জন্য সুযোগ সীমিত, তবুও বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আপডেট থাকা উচিত।

বেসরকারি উপায়

বিভিন্ন এজেন্সি ও বিদেশে থাকা পরিচিতদের মাধ্যমে বৈধ ওয়ার্ক পারমিট বা হাউজ হেলপার ভিসা পাওয়া যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে এজেন্সির বৈধতা ও রিক্রুটমেন্ট লাইসেন্স যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

হংকং ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

হংকং ভিসার জন্য সরাসরি হংকং ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টে অনলাইন বা মেইলের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। সাধারণত নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়ঃ

  • নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে
  • প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
  • স্পন্সর (নিয়োগদাতা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) থেকে ইনভাইটেশন বা কনফার্মেশন পত্র লাগবে।
  • হংকং ইমিগ্রেশন থেকে অনুমোদন পেলে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।
  • প্রয়োজনে হংকং এর নিকটবর্তী চীনা দূতাবাসে সাক্ষাৎকার দিতে হতে পারে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসার প্রকার অনুযায়ী আলাদা কাগজপত্র লাগলেও নিচেরগুলো সাধারণভাবে প্রযোজ্যঃ

  • কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট।
  • ২ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
  • মেডিকেল রিপোর্ট (বিশেষ করে হেলথ চেক-আপ)।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র কপি।
  • শিক্ষাগত সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  • স্পন্সরশিপ বা চাকরির চিঠি (ওয়ার্ক পারমিটের জন্য)।

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ অফার লেটার, টিউশন ফি জমার রশিদ, হোস্টেলের প্রমাণ।
  • ডোমেস্টিক হেলপার ভিসাঃ হংকংয়ের চাকরিদাতা কর্তৃক জারি করা চুক্তিপত্র।
  • ফ্যামিলি ভিসাঃ আত্মীয়তার সম্পর্কের প্রমাণ এবং ভিসাধারীর স্পন্সর লেটার।

হংকং বেতন কত?

বেতন পদের উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণতঃ

  • ডোমেস্টিক হেলপার (হাউজমেইড): ৪৭০০ হংকং ডলার (প্রায় ৬৫,০০০ টাকা)।
  • কারখানা শ্রমিকঃ ৭০০০ – ৯০০০ হংকং ডলার (প্রায় ৯৫,০০০ – ১,২০,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিক বা টেকনিশিয়ানঃ ১০,০০০ – ১৫,০০০ হংকং ডলার বা তার বেশি।

ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?

  • সরকারি উপায় (যদি সুযোগ থাকে): ৪-৫ লাখ টাকার মধ্যে।
  • বেসরকারি উপায়ে ডোমেস্টিক বা সাধারণ শ্রমিকঃ ৬-৮ লাখ টাকা।
  • দক্ষ শ্রমিক (স্পন্সরসহ): ৮-১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ভ্রমণের সময়কাল?

বাংলাদেশ থেকে হংকং যেতে সরাসরি ফ্লাইট থাকায় গড়ে ৪-৬ ঘণ্টা সময় লাগে। তবে ট্রানজিটসহ যাত্রায় এটি ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।

হংকং এর মুদ্রার নাম কি?

হংকং ডলার (HKD)। ১ হংকং ডলার = আনুমানিক ১৪-১৫ টাকা (রেট পরিবর্তনশীল)

হংকং এ বাংলাদেশি দূতাবাসের ঠিকানা?

  • Consulate General of Bangladesh in Hong Kong
  • Address: 151 Gloucester Road, Wan Chai, Hong Kong
  • Phone: +852 2827 8085

আরও পড়ুনঃ ফিলিস্তিন বেতন কত | ফিলিস্তিন ভিসার দাম কত

সতর্কতা

হংকং যেতে ইচ্ছুক অনেক মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন অসাধু দালালদের ফাঁদে পড়ে। সস্তা দামে অবৈধ ভিসা বা কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে।

তাই সবসময় যাচাইযোগ্য ও আইনগত এজেন্সির মাধ্যমে এবং উপযুক্ত কাগজপত্রসহ আবেদন করা উচিত।

FQAS: হংকং বেতন কত | হংকং ভিসার দাম কত

হংকং কি সহজে ভিসা দেয়?

যদি সঠিক কাগজপত্র ও স্পন্সর থাকে, তাহলে হংকং ভিসা পাওয়া সম্ভব। তবে যেহেতু এটি চীনের অধীন, তাই নিয়মকানুন কঠোর।

ভিসার মেয়াদ কতদিনের হয়?

ভিসার ধরন অনুসারে এটি ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত হতে পারে। ওয়ার্ক ভিসা সাধারণত ১ বছরের জন্য দেওয়া হয়।

শেষ কথা

হংকং এ বৈধভাবে কাজ বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে হলে সঠিক তথ্য, নির্ভরযোগ্য মাধ্যম ও যথাযথ কাগজপত্র থাকা অত্যন্ত জরুরি।

অবৈধ পথে যাওয়া দণ্ডনীয় এবং বিপজ্জনক। নিরাপদে বিদেশ যাত্রার জন্য প্রস্তুতি ও সচেতনতা অপরিহার্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button