রাইস কুকারে ভাত রান্নার নিয়ম
রাইস কুকার কমবেশি অনেকেই চিনেন। রাইস কুকার ব্যবহার করে ভাত রান্না সহ আরো কিছু কাজ করা হয়ে থাকে। অনেকেই রাইস কুকার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। অর্থাৎ কিভাবে রাইস কুকার ব্যবহার করতে হয়, রাইস কুকার এর মাধ্যমে কিভাবে রান্না করতে হয়।আজকের পোস্টে তাই রাইস কুকার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। যারা এই বিষয়ে জানতে চান তারা অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি বিস্তারিত এবং মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
রাইস কুকার ব্যবহারের নিয়ম?
রাইস কুকারে ভাত ছাড়াও অন্যান্য কিছু রান্না করা যায়। যেমন রাইস কুকার ব্যবহার করে আপনারা ডাল সিদ্ধ করতে পারেন, ডিম সিদ্ধ করতে পারেন, পোলাও ও খিচুড়ি রান্না করতে পারেন, তাছাড়া মাছ-মাংস ও রান্না করা যেতে পারে। নিচে রাইস কুকার ব্যবহার করে কিভাবে এই রান্না গুলো করা হয় সে বিষয়ে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হলোঃ
রাইস কুকারে ভাত রান্নার নিয়ম?
প্রথমে চাল ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে এবং পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপরে রাইস কুকারের ঢাকনা খোলা অবস্থায় চাল দিয়ে দিতে হবে। চাল দেওয়া হয়ে গেলে রাইস কুকারের ঢাকনাটি বন্ধ করে দিতে হবে এবং সুইচ অন করে দিতে হবে।
তাহলে ২৫-৩০ মিনিটের মধ্যে ভাত রান্না হয়ে যাবে। অনেকেই রাইস কুকারে চাল ও পানির অনুপাত কেমন হবে জানতে চান সাধারণভাবে আপনারা ভাত রান্না করার সময় যে পরিমাণ পানি দিয়ে থাকেন তার থেকে একটু কম পানি দিলেও রাইস কুকারে হবে। অর্থাৎ চাল যে পরিমাণে দিবেন তার দ্বিগুণ পানি দিতে হবে।
রাইস কুকারে ভাত পুড়ে যায় কেন বা কি কারণে এই সমস্যাটার সৃষ্টি হয়ে থাকে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। যদি অতিরিক্ত সময় ধরে রাইস কুকারে রান্না বসিয়ে থাকেন অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরও যদি ভাত না নামিয়ে থাকেন তাহলে অনেক ক্ষেত্রে ভাত পুড়ে যেতে পারে।
তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে কম পানি দেওয়ার কারণেও ভাত পুড়ে যেতে পারে।আশা করি রাইস কুকারে কিভাবে ভাত রান্না করে এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।
রাইস কুকারে পোলাও রান্নার নিয়ম?
রাইস কুকারে রান্না করার জন্য পোলাও ভাত ধুয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপরে রাইস কুকারের ঢাকনা খোলা অবস্থায় ঘি ঢেলে কুকারটি চালু করে দিতে হবে। তেল কিছুটা গরম হয়ে গেলে পোলাওয়ের চাল দিয়ে রাইস কুকারের চামচ দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়তে হবে। চাল হালকা ভেজে পরিমাণ মতো পানি দিতে হবে।
এই ক্ষেত্রে চালের পরিমাণ এর দ্বিগুণের বেশি পানি দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তারপরে রাইস কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে দিতে হবে। রান্না হয়ে গেলে রাইস কুকারের ওয়ার্ম চলে আসবে আপনি তখন চাইলে রাইস কুকার থেকে পোলাও বাহির করে নিতে পারেন ।
রাইস কুকার দিয়ে বিভিন্ন রকমের সবজি সেদ্ধ করার নিয়ম?
রাইস কুকারের সাথে ঝাকার মতো একটি স্টিমার থাকে। এই ঝাকার সাহায্যে যেকোনো ধরনের সবজি খুব সহজেই সিদ্ধ করে নেওয়া যায়। প্রথমে সবজি টুকরা টুকরা করে কেটে নিতে হবে তারপরে ঝাকার উপরে দিয়ে রাইস কুকার চালু করে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
রাইস কুকার দিয়ে মাছ রান্না করার নিয়ম?
রাইস কুকারে মাছ রান্না করার জন্য প্রথমে কয়েক টুকরা মাছ ধুয়ে এর সাথে হলুদ ও মরিচের গুঁড়া মাখিয়ে কিছু সময় রেখে দিতে হবে। তারপরে এর সাথে তেল ও লবণ মিশিয়ে রাইস কুকারে বসিয়ে দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময় শেষে মাছ রান্না হয়ে আসলে ঢাকনা খুলে কয়েকটি কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।
ভিশন রাইস কুকার ব্যবহারের নিয়ম?
রান্না করার পদ্ধতি সব রাইস কুকারেই একই। কোন কোন রাইস কুকারে রান্না শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ওয়ার্ম সুবিধা থাকে আর কোন কোন রাইস কুকারে থাকে না।
তাছাড়া উপরে ভাত রান্না করার নিয়ম, তরকারি রান্না করার নিয়ম ও সবজি সেদ্ধ করার নিয়ম সহ আরো অনেক কিছু দেওয়া হয়েছে আপনারা চাইলে এই নিয়মে যেকোনো রাইস কুকার ব্যবহার করে রান্না করে ফেলতে পারেন।
১.৮ লিটার রাইস কুকারে কতটুকু চাল রান্না করা যায়
অনেকেই ১.৮ লিটার রাইস কুকারে কতটুকু চাল রান্না করা যায় এটা নিয়ে প্রশ্ন করে থাকেন। বর্তমান বাজারে যে ১.৮ লিটারের রাইস কুকার গুলো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো ব্যবহার করে আপনারা চাইলে একবারে দেড় কেজি পর্যন্ত চাল দিয়ে রান্না বসাতে পারেন।
রাইস কুকারে ভাত রান্না করতে কত সময় লাগে
রাইস কুকারে ভাত রান্না করতে সাধারণত ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মতো সময় লেগে থাকে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে সময় একটু বেশিও লাগতে পারে। এটা অনেকটা রাইস কুকারের ধারণক্ষমতা ও ক্যাপাসিটির ওপর নির্ভর করে থাকে।
তবে যে কোন রাইস কুকারে ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে রান্না হয়ে যায়। রান্না শেষ হয়ে গেলে ওয়ার্ম দিয়ে থাকে তখন সুইচ অফ করে ভাত নামিয়ে নিতে হয়।
রাইস কুকারে বিদ্যুৎ খরচ কেমন?
রাইস কুকার ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ খরচ একটু বেশি উঠবে এটা স্বাভাবিক। কেননা রাইস কুকার সাধারণত বিদ্যুতের মাধ্যমে চলে থাকে। তাই রাইস কুকারের মাধ্যমে যদি রান্নার কাজ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ আপনাকে দিতে হবে। তাই এই নিয়ে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই।
শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা রাইস কুকার ব্যবহারের নিয়ম বা কিভাবে রাইস কুকার ব্যবহার করে রান্না করা যায় এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন।
তারপরেও যদি কোন বিষয়ে সম্পর্কে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে বা কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনার মূল্যবান প্রশ্নটি খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। ধন্যবাদ।