ইতালি বেতন কত | ইতালি ভিসার দাম কত
ইতালি দক্ষিণ ইউরোপের একটি ঐতিহাসিক ও সমৃদ্ধ দেশ। রোম এর রাজধানী এবং এটি শিল্প, পর্যটন, কৃষি এবং নির্মাণ খাতে কাজের জন্য বহুল পরিচিত। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশিদের জন্য ইতালিতে যাওয়ার সুযোগ তুলনামূলকভাবে বেশি।প্রতিবছর অসংখ্য বাংলাদেশি নাগরিক বৈধ ও অবৈধ পথে ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে নিরাপদ ও স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বৈধ পথে যাওয়াই শ্রেয়।
ইতালি যাওয়ার উপায়?
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য প্রধান ভিসা ক্যাটাগরিসমূহঃ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা (Seasonal & Non-seasonal work visa)
- স্টুডেন্ট ভিসা
- ফ্যামিলি রিইউনিফিকেশন ভিসা
- ট্যুরিস্ট ভিসা
সরকারি উপায়
BOESL (বোয়েসেল) এর মাধ্যমে কিছু নির্দিষ্ট মৌসুমি কাজের জন্য ইতালিতে কর্মী পাঠানো হয়। সাধারণত কৃষি ও খামারভিত্তিক কাজের জন্য এই প্রক্রিয়া চালু থাকে। এ জন্য নিয়মিত সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করতে হয়।
বেসরকারি উপায়
ইতালিতে অবস্থানরত আত্মীয় বা বিশ্বস্ত এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করা যায়। বিশেষ করে Flussi Decree Program এর মাধ্যমে প্রতিবছর নির্দিষ্ট কোটা অনুযায়ী বিদেশি কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করা হয়।
ইতালি ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
ইতালি ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় অনলাইনে অথবা ভিএফএস (VFS Global) এর মাধ্যমে।
ইতালি ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া?
vistoperitalia.esteri.it ওয়েবসাইটে ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা
সাক্ষাৎকারের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করা
নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ভিএফএস অফিসে উপস্থিত হওয়া
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
- বৈধ পাসপোর্ট (৬ মাসের মেয়াদসহ)
- পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যদি প্রযোজ্য)
- কাজের চুক্তিপত্র বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার (ক্যাটাগরি অনুযায়ী)
বিশেষ কাগজপত্র (ভিসা অনুযায়ী)?
- ওয়ার্ক ভিসাঃ ইতালির নিয়োগকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত Nulla Osta (ওয়ার্ক পারমিশন)
- স্টুডেন্ট ভিসাঃ অফার লেটার, টিউশন ফি রসিদ, ভাষা দক্ষতার প্রমাণ
- পরিবারিক ভিসাঃ ইতালিতে বসবাসকারী স্বজনের রেসিডেন্ট পারমিট এবং সম্পর্কের প্রমাণ
ইতালি বেতন কত?
বেতন সাধারণত কাজের ধরন অনুযায়ী নির্ধারিত হয়ঃ
- সাধারণ শ্রমিকঃ প্রায় ১০০০-১২০০ ইউরো (বাংলাদেশি টাকায় ১.৩-১.৫ লাখ টাকা)
- দক্ষ শ্রমিকঃ প্রায় ১৫০০-২০০০ ইউরো বা তার বেশি (বাংলাদেশি টাকায় ১.৯-২.৬ লাখ টাকা)
ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?
সরকারি উপায়ে (BOESL)
খরচ তুলনামূলকভাবে কম (প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা)
বেসরকারি উপায়ে
- ভিসা খরচঃ ৭-৮ লাখ টাকা
- সম্পূর্ণ খরচঃ ৯-১২ লাখ টাকা
ভ্রমণের সময়কাল?
বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে পৌঁছাতে সাধারণত ১৬-২০ ঘণ্টা সময় লাগে। এক বা একাধিক ট্রানজিট সহ এই যাত্রা সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুঃ সাইপ্রাস বেতন কত | সাইপ্রাস ভিসার দাম কত
সতর্কতাঃ
বর্তমানে অনেক দালাল এবং এজেন্সি অবৈধভাবে ইতালিতে পাঠানোর নামে প্রতারণা করছে। ভুয়া ভিসা, ডিপোজিট ভিসা বা হিউম্যানিটারিয়ান ভিসা নামে কেউ প্রলোভন দেখালে তা থেকে দূরে থাকুন। সবসময় সরকারি অনুমোদিত ও বিশ্বস্ত সূত্র ব্যবহার করুন।
শেষ কথা
ইতালিতে স্থায়ী বসবাস বা কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, যাচাইযোগ্য কাগজপত্র এবং বৈধ ভিসা। ধৈর্য, সতর্কতা এবং সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করলেই নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব।