ভিসা

জাপান বেতন কত | জাপান ভিসার দাম কত

জাপান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র, যা প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমে অবস্থিত। দেশটি মূলত হনশু, হোক্কাইডো, কিউশু ও শিকোকু এই চারটি প্রধান দ্বীপ নিয়ে গঠিত। টোকিও, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ও অত্যাধুনিক শহরগুলোর একটি, দেশটির রাজধানী।জাপান বেতন কত | জাপান ভিসার দাম কতজাপান, পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপরাষ্ট্র, যার অর্থনীতি ও প্রযুক্তি বিশ্বে অন্যতম উন্নত। দেশটি উন্নত কর্মসংস্থান, উচ্চ শিক্ষার সুযোগ, এবং সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থার কারণে প্রতি বছর অনেক বাংলাদেশি নাগরিকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

জাপান যাওয়ার উপায়?

বৈধভাবে জাপান যেতে হলে ভিসা আবশ্যক। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য জাপানে যাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত ভিসাগুলো প্রচলিতঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা (Technical Intern, Specified Skilled Worker)
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা
  • ব্যবসায়িক ভিসা
  • পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা

সরকারি উপায়

বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান BOESL (Bangladesh Overseas Employment and Services Limited) এর মাধ্যমে জাপানের সাথে চুক্তিভিত্তিক কর্মী পাঠানোর সুযোগ রয়েছে, বিশেষ করে Technical Intern Training Program (TITP) ও SSW (Specified Skilled Worker) প্রোগ্রামের আওতায়।

বেসরকারি উপায়

অনুমোদিত বিদেশগামী কর্মী প্রেরণকারী এজেন্সি বা জাপানে অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে Work Permit বা Sponsorship ভিত্তিক Student ভিসার ব্যবস্থা করা যায়।

জাপান ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বর্তমানে জাপান ভিসার জন্য ঢাকায় অবস্থিত জাপান দূতাবাস বা অনুমোদিত ভিএফএস (VFS Global) এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।

আবেদনের ধাপসমূহ?

  • জাপান দূতাবাস বা ভিএফএস ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ।
  • আবেদনপত্র পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করা।
  • আবেদন ফি প্রদান।
  • সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ।
  • সাক্ষাৎকার শেষে সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসার প্রকারভেদ অনুযায়ী কিছু কাগজপত্র আলাদা হলেও সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হলোঃ

  • বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদী)।
  • পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি (সাম্প্রতিক)।
  • পূরণকৃত আবেদন ফরম।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম সনদ।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট (প্রয়োজনে)
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সাম্প্রতিক ৬ মাসের)।
  • ওয়ার্ক পারমিট / অফার লেটার (ওয়ার্ক ভিসার জন্য)।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র (স্টুডেন্ট ভিসার জন্য)।

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ অফার লেটার, কোর্স ফি প্রদান রসিদ, স্পনসরশিপ লেটার।
  • ওয়ার্ক ভিসাঃ Certificate of Eligibility (COE), নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের Letter of Guarantee।

জাপান বেতন কত?

জাপানে কাজের ধরণ ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে বেতন পরিবর্তিত হয়ঃ

  • ইন্টার্নশিপ/শিক্ষানবিসঃ প্রায় ১২০,০০০ – ১৫০,০০০ ইয়েন (৮৫,০০০ – ১,১০,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিক (SSW): প্রায় ১,৬০,০০০ – ২,২০,০০০ ইয়েন (১,১৫,০০০ – ১,৬০,০০০ টাকা)।
  • হাই স্কিল্ড/প্রফেশনালঃ ২,৫০,০০০ ইয়েন বা তার বেশি (প্রায় ১,৮০,০০০ টাকা থেকে শুরু)।

ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?

জাপানে যাওয়ার জন্য ব্যয় ভিসা প্রক্রিয়া, প্রশিক্ষণ, এবং ট্র্যাভেল কস্ট অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।

সরকারি উপায়ে (BOESL বা G2G)

ভিসা খরচঃ প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা।
সম্পূর্ণ খরচঃ প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়ে

ভিসা খরচঃ প্রায় ৭-৯ লাখ টাকা।
সম্পূর্ণ খরচঃ ৯-১২ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে (ভিসার ধরন অনুসারে)।

ভ্রমণের সময়কাল?

ঢাকা থেকে টোকিও বা ওসাকা যাওয়ার জন্য সাধারণত একাধিক ট্রানজিটসহ ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা সময় লাগে।

জাপানের মুদ্রার নাম কি?

জাপানের মুদ্রার নাম ইয়েন (JPY)।

বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের ঠিকানা?

  • Embassy of Japan in Bangladesh
  • Plot No. 5 & 7, Dutabash Road, Baridhara, Dhaka-1212
  • Website: www.bd.emb-japan.go.jp

আরও পড়ুনঃ মালদ্বীপ বেতন কত | মালদ্বীপ ভিসার দাম কত

সতর্কতা

জাপানগামী ভিসা বা কর্মসংস্থান সংক্রান্ত ক্ষেত্রে বহু প্রতারক দালাল ও ভুয়া এজেন্সি সক্রিয় রয়েছে। কম খরচে বা শর্টকাটে যাওয়ার লোভে পড়ে প্রতারণার শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

তাই BOESL বা সরকারি অনুমোদিত লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই আবেদন করাই নিরাপদ।

FQAS: জাপান বেতন কত | জাপান ভিসার দাম কত

জাপান যেতে ইংরেজি জানা বাধ্যতামূলক?

অধিকাংশ ক্ষেত্রে হ্যাঁ। তবে ইন্টার্ন বা শ্রমিক পর্যায়ে N4 বা N5 লেভেলের জাপানিজ ভাষা জানাও প্রয়োজন।

কি ধরনের কাজ পাওয়া যায়?

নার্সিং, কেয়ারগিভার, কন্সট্রাকশন, হোটেল ম্যানেজমেন্ট, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ম্যানুফ্যাকচারিং ইত্যাদি।

শেষ কথা

জাপানে কাজ বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে হলে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ, বৈধ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা, এবং প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা খুব জরুরি।

সতর্কতা অবলম্বন করে উপযুক্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে জাপানে একটি নিরাপদ ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button