জর্ডান বেতন কত | জর্ডান ভিসার দাম কত
জর্ডান মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ আরব দেশ। এর রাজধানী আম্মান এবং এটি শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।প্রতিবছর অসংখ্য বাংলাদেশি নাগরিক কর্মসংস্থান বা অন্য উদ্দেশ্যে জর্ডান যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বৈধভাবে জর্ডানে যেতে হলে সঠিক নিয়ম ও প্রক্রিয়া জানা জরুরি।
জর্ডান যাওয়ার উপায়?
বৈধভাবে জর্ডানে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো উপযুক্ত ভিসা গ্রহণ করা। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নিচের ক্যাটাগরির ভিসাগুলো প্রযোজ্যঃ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা (কর্মসংস্থান ভিসা)
- স্টুডেন্ট ভিসা
- পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- ট্যুরিস্ট ভিসা
সরকারি উপায়
বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সংস্থা BOESL (Bangladesh Overseas Employment and Services Limited) এর মাধ্যমে নারী গার্মেন্টস শ্রমিক, হাউজকিপার ও বিভিন্ন খাতের দক্ষ কর্মী জর্ডানে প্রেরণ করা হয়ে থাকে। এটি সবচেয়ে নিরাপদ ও স্বচ্ছ উপায়।
বেসরকারি উপায়
বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত প্রাইভেট রিক্রুটিং এজেন্সি এর মাধ্যমেও জর্ডানে কর্মী পাঠানো হয়। এই পদ্ধতিতে যাওয়ার আগে অবশ্যই এজেন্সির লাইসেন্স যাচাই করা উচিত।
জর্ডান ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
বর্তমানে জর্ডান ভিসার জন্য অনলাইনে বা সংশ্লিষ্ট এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করা যায়। প্রক্রিয়াটি সাধারণত নিয়োগকর্তার স্পন্সরশিপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
জর্ডান ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া?
- নিয়োগপত্র সংগ্রহ (ওয়ার্ক পারমিটের জন্য)।
- চাকরির কোটার অনুমোদন।
- ভিসা আবেদন ফরম পূরণ।
- পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজ জমা।
- ভিসা স্ট্যাম্পিং
- মেডিকেল টেস্ট ও পাস রিপোর্ট।
- ফ্লাইট বুকিং ও যাত্রা
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
- ছয় মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট।
- ২ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট (GAMCA অনুমোদিত)।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যদি প্রযোজ্য)।
- নিয়োগকর্তার স্পন্সরশিপ বা অনুমোদনপত্র।
- কর্মসংস্থান চুক্তিপত্র (Contract Letter)।
বিশেষ ভিসার ক্ষেত্রে বাড়তি কাগজপত্র?
- স্টুডেন্ট ভিসাঃ ভর্তি অফার লেটার, টিউশন ফি প্রদানের রসিদ, আর্থিক সহায়তার প্রমাণ।
- বিজনেস ভিসাঃ ব্যবসা নিবন্ধন, আমন্ত্রণপত্র ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
জর্ডান বেতন কত?
কাজের ধরণ ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে বেতন পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপঃ
- গার্মেন্টস শ্রমিকঃ ১৫০-২০০ জর্ডানিয়ান দিনার (JOD)।
- হাউজকিপার/কেয়ারগিভারঃ ২০০-২৫০ JOD।
- দক্ষ শ্রমিকঃ ২৫০-৩৫০ JOD বা তার বেশি।
- ইঞ্জিনিয়ার, টেকনিশিয়ানঃ ৪০০-৬০০ JOD পর্যন্ত।
- (১ জর্ডানিয়ান দিনার ≈ ১৫৫ টাকা, বাজার অনুপাতে পরিবর্তনশীল)।
ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?
সরকারি উপায়ে (BOESL)
- ভিসা খরচঃ ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা।
- মোট খরচঃ ৫০,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকার মধ্যে।
বেসরকারি উপায়ে
- ভিসা খরচঃ ৬০,০০০ থেকে ১ লাখ টাকা।
- মোট খরচঃ ১.২ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত (এজেন্সির চার্জ সহ)।
ভ্রমণের সময়কাল?
বাংলাদেশ থেকে আম্মান, জর্ডান পৌঁছাতে গড়ে ৮-১২ ঘণ্টা সময় লাগে। একাধিক ট্রানজিট থাকলে সময় ১৬ ঘণ্টাও হতে পারে।
জর্ডান মুদ্রার নাম কি?
জর্ডানিয়ান দিনার (Jordanian Dinar – JOD)।
জর্ডানে বাংলাদেশি দূতাবাসের ঠিকানা?
- Embassy of Bangladesh in Jordan
- Address: Villa No. 8, Sa’ad Bin Abi Waqas Street, Khalda, Amman, Jordan
- Phone: +962 6 534 0651
- Email: mission.amman@mofa.gov.bd
আরও পড়ুনঃ সৌদি আরব বেতন কত | সৌদি আরব ভিসার দাম কত
সতর্কতা
বর্তমানে অনেক অসাধু দালাল ও এজেন্সি জর্ডানে অবৈধভাবে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে প্রতারণা করছে। বৈধ উপায়ে যাচাইযোগ্য এজেন্সি বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশ যাত্রা নিশ্চিত করুন।
FQAs: জর্ডান বেতন কত | জর্ডান ভিসার দাম কত
জর্ডানে নারী শ্রমিক কি যেতে পারেন?
হ্যাঁ, BOESL এর মাধ্যমে নারী গার্মেন্টস ও গৃহকর্মী কর্মী হিসেবে বৈধভাবে পাঠানো হয়।
ভিসা বাতিল হলে কি টাকা ফেরত পাওয়া যায়?
সরকারি উপায়ে আংশিক ফেরত মিলতে পারে, তবে বেসরকারি এজেন্সির ক্ষেত্রে আগে চুক্তিপত্র পড়ে নিতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও কি যাওয়া যায়?
হ্যাঁ, কিছু পেশার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও অভিজ্ঞতা থাকলে যাওয়া যায়।
শেষ কথা
জর্ডানে বৈধভাবে কাজ বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও সঠিক প্রস্তুতি অপরিহার্য।
সব প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানুন, যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিন, আর প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকুন। সঠিক প্রস্তুতির মাধ্যমেই আপনার বিদেশ যাত্রা হতে পারে নিরাপদ ও সফল।