ভিসা

কেনিয়া বেতন কত | কেনিয়া ভিসার দাম কত

কেনিয়া পূর্ব আফ্রিকার একটি বিখ্যাত পর্যটন ও কর্মসংস্থানবান্ধব দেশ। এর রাজধানী নাইরোবি আফ্রিকার অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্র।কেনিয়া বেতন কত | কেনিয়া ভিসার দাম কতপ্রতিবছর বহু বাংলাদেশি নাগরিক কর্মসংস্থান, ব্যবসা কিংবা পর্যটনের উদ্দেশ্যে কেনিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বৈধভাবে কেনিয়া ভ্রমণ বা সেখানে কাজ করতে হলে সঠিক প্রক্রিয়া জানা ও অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেনিয়া যাওয়ার উপায়?

বৈধভাবে কেনিয়া যাওয়ার প্রধান উপায় হলো সরকার অনুমোদিত ভিসা গ্রহণ করা। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য কেনিয়া সরকার বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা প্রদান করে, যেমনঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • বিজনেস ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা
  • ট্রানজিট ভিসা
  • পারিবারিক সংযুক্তিকরণ ভিসা

সরকারি উপায়

বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিংবা BOESL এর মাধ্যমে কেনিয়াতে সরকারি বা চুক্তিভিত্তিক কাজের সুযোগ পেলে আপনি বৈধভাবে যেতে পারেন। তবে কেনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট আগে থেকেই নিশ্চিত থাকতে হবে।

বেসরকারি উপায়

বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কেনিয়াতে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। তবে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই BMET (ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেইনিং) এবং POEA অনুমোদিত এজেন্সি নির্বাচন করতে হবে। যাচাই না করে দালালের মাধ্যমে যাওয়া বিপদজনক।

কেনিয়া ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বর্তমানে কেনিয়া ভিসার জন্য পুরোপুরি অনলাইন ই-ভিসা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবেঃ

  •  এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
  • প্রয়োজনীয় ক্যাটাগরি নির্বাচন করে আবেদন ফরম পূরণ করুন।
  • অনলাইনেই আবেদন ফি পরিশোধ করুন।
  • প্রাসঙ্গিক ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করুন।
  • ২ থেকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ভিসা ই-মেইলে চলে আসবে।

কেনিয়া বাংলাদেশে কোনো দূতাবাস না থাকায় কলকাতার কেনিয়ান হাই কমিশনের মাধ্যমেও ভিসা আবেদন সম্ভব।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসার ধরণ অনুযায়ী কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও নিচের সাধারণ ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবেঃ

  • বৈধ পাসপোর্ট (ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদী)
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  • অনলাইন পূরণকৃত আবেদন ফর্ম
  • টিকিট রিজার্ভেশন কপি
  • হোটেল বুকিং কনফার্মেশন (পর্যটকদের জন্য)
  • আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট (ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে)
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  • প্রাসঙ্গিক ভ্যাকসিনেশন সনদ (যেমনঃ ইয়েলো ফিভার)

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা: নিয়োগকর্তার অফার লেটার ও পারমিট কপি
  • স্টুডেন্ট ভিসা: ভর্তি সংক্রান্ত প্রমাণপত্র, ইনস্টিটিউটের অফার লেটার
  • ড্রাইভিং ভিসা: আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • বিজনেস ভিসা: ইনভাইটেশন লেটার, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন কপি

কেনিয়া বেতন কত?

কেনিয়ার বেতন কাঠামো পেশাভেদে আলাদা। সাধারণ ধারণা অনুযায়ীঃ

  • সাধারণ শ্রমিকঃ মাসে ৩০,০০০–৪০,০০০ কেনিয়ান শিলিং (প্রায় ২৫০–৩৫০ USD বা ৩০,০০০–৪০,০০০ টাকা)
  • দক্ষ শ্রমিকঃ ৬০,০০০–৮০,০০০ কেনিয়ান শিলিং বা তারও বেশি (প্রায় ৫০০–৭০০ USD বা ৬০,০০০–৮০,০০০ টাকা)
  • প্রফেশনাল লেভেল (ইঞ্জিনিয়ার, আইটি): ১০০০–২০০০ USD বা তার বেশি

ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?

ভিসা এবং যাত্রা ব্যয় ভিসার ধরন ও পদ্ধতির উপর নির্ভর করে।

সরকারি উপায়

  • ভিসা খরচঃ প্রায় ৬০,০০০–৭০,০০০ টাকা
  • সম্পূর্ণ খরচঃ আনুমানিক ২.৫–৩ লাখ টাকা

বেসরকারি উপায়

  • ভিসা খরচঃ প্রায় ১.৫–২ লাখ টাকা
  • সম্পূর্ণ খরচঃ আনুমানিক ৩–৪.৫ লাখ টাকা

অতিরিক্ত চার্জ এজেন্সির মাধ্যমে ভিন্ন হতে পারে। সতর্ক থাকুন।

ভ্রমণের সময়কাল?

ঢাকা থেকে নাইরোবি যেতে প্রায় ১২–১৬ ঘণ্টা সময় লাগে। সাধারণত ১–২টি ট্রানজিটসহ বিমান রুট ব্যবহার করা হয় (দুবাই, দোহা বা ইথিওপিয়া রুটে)।

কেনিয়া মুদ্রার নাম কি?

  • কেনিয়ার মুদ্রার নাম হলো “কেনিয়ান শিলিং (KES)”।
  • ১ KES ≈ ০.৮০–০.৯০ টাকা (রেট পরিবর্তনশীল)

বাংলাদেশে কেনিয়ান দূতাবাসের ঠিকানা?

বাংলাদেশে কেনিয়ার স্থায়ী দূতাবাস নেই। তবে কলকাতায় অবস্থিত “Kenyan High Commission” এর মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকরা আবেদন করতে পারেন।

Kenya High Commission, 34B, Ballygunge Circular Road, Kolkata – 700019, India

ওয়েবসাইট: https://kenyahighcommission.in/

আরও পড়ুনঃ ইরাক বেতন কত | ইরাক ভিসার দাম কত

সতর্কতা

বর্তমানে কিছু অসাধু দালাল ও ভুয়া এজেন্সি “নামমাত্র খরচে” কেনিয়া পাঠানোর লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করছে। অতএবঃ

  • সরকারি অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করুন।
  • দালালের প্রলোভনে পা দেবেন না।
  • নিজেই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আবেদন করতে পারেন।
  • প্রতিটি পদক্ষেপের প্রমাণ সংরক্ষণ করুন।

FQAs: কেনিয়া বেতন কত | কেনিয়া ভিসার দাম কত

কেনিয়া কি বাংলাদেশিদের জন্য নিরাপদ?

হ্যাঁ, তবে কিছু এলাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকায় সরকারি সতর্কতা অনুসরণ করে চলা উচিত।

কেনিয়া ভিসা রিজেক্ট হলে কী করব?

কারণ চিহ্নিত করে পুনরায় আবেদন করুন, প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কাউন্সিলরের সহায়তা নিন।

শেষ কথা

কেনিয়াতে বৈধভাবে যাওয়ার জন্য সঠিক তথ্য, নথি এবং ভিসা প্রক্রিয়া জানা আবশ্যক। সরকারি বা বিশ্বস্ত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করলে প্রতারণা এড়ানো সম্ভব। সময় ও টাকার সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে আপনি কেনিয়াতে নিরাপদে ও সফলভাবে পৌঁছাতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button