কিরিবাতি বেতন কত | কিরিবাতি ভিসার দাম কত
কিরিবাতি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র, যা ৩৩টি ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এর অর্থনীতি মূলত মাছ ধরা, নারকেল শিল্প, বিদেশি সহায়তা ও কিছু পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল।যদিও দেশটি এখনও বাংলাদেশিদের জন্য খুব বেশি জনপ্রিয় গন্তব্য নয়, তবুও বৈধ পথে গেলে কর্মসংস্থান ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ রয়েছে।
কিরিবাতি যাওয়ার উপায়?
বাংলাদেশ থেকে কিরিবাতিতে যাওয়ার জন্য নিচের কয়েকটি প্রধান ভিসা ক্যাটাগরি প্রযোজ্যঃ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- ট্যুরিস্ট ভিসা
- পারিবারিক পুনর্মিলন ভিসা
- বিজনেস/ইনভেস্টর ভিসা
সরকারি উপায়ে যাওয়া
বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের BOESL বা অন্য কোনও সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে কিরিবাতিতে শ্রমিক পাঠানো হয় না। তবে ভবিষ্যতে কোনও চুক্তি হলে সরকারি উদ্যোগে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে।
বেসরকারি উপায়ে যাওয়া
বেসরকারি কোম্পানি, আন্তর্জাতিক সংস্থা (NGO/INGO), মাছ ধরার ট্রলার কোম্পানি অথবা পর্যটন খাতে নিয়োগ পাওয়া যায়। স্পন্সর পাওয়া গেলে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করে বৈধভাবে দেশটিতে যাওয়া সম্ভব।
কিরিবাতি ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
বাংলাদেশে কিরিবাতির কোনো সরাসরি দূতাবাস নেই। সাধারণত ফিজি, অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত কিরিবাতি দূতাবাস এর মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে হয়।
আবেদন প্রক্রিয়া?
- স্পন্সর বা আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ করুন (ওয়ার্ক/স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে)।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করুন।
- সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে আবেদন করুন।
- ইমেইল বা ডাকযোগে নথি পাঠাতে হতে পারে।
- অনুমোদন পেলে পাসপোর্টে ভিসা লাগিয়ে কিরিবাতিতে প্রবেশ করা যায়।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসা ক্যাটাগরির ওপর নির্ভর করে কিছু ভিন্নতা থাকলেও সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো হলোঃ
- ছয় মাসের বেশি মেয়াদবিশিষ্ট পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- মেডিকেল রিপোর্ট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- স্পন্সরশিপ লেটার বা অফার লেটার।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট (ট্যুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে)।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে)।
- কিরিবাতির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ফর্ম পূরণ।
কিরিবাতি বেতন কত?
কিরিবাতির অর্থনীতি সীমিত এবং বেতন তুলনামূলকভাবে কম, তবে কিছু সেক্টরে সুযোগ রয়েছে।
- সাধারণ শ্রমিক (মাছ ধরার জাহাজ, নির্মাণ): ২.৫ – ৩.৫ AUD/ঘণ্টা।
- দক্ষ শ্রমিক বা পেশাজীবীঃ ৪ – ৬ AUD/ঘণ্টা।
- NGO/International Jobs: ৭ – ১৫ AUD/ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
- (১ অস্ট্রেলিয়ান ডলার ≈ ৭৪ টাকা, মে ২০২৫ অনুযায়ী)
ভিসা ও যাতায়াত খরচ?
- ওয়ার্ক ভিসা খরচঃ প্রায় ১০০ – ১৫০ USD।
- অন্যান্য ভিসা খরচঃ ৫০ – ১২০ USD।
- বিমান খরচ (ঢাকা – কিরিবাতি): প্রায় ২.৫ – ৩.৫ লাখ টাকা (ট্রানজিটসহ)।
- সম্পূর্ণ খরচ (বেসরকারি): প্রায় ৬ – ৯ লাখ টাকা (ভিসা, ট্রাভেল, মেডিকেলসহ)।
ভ্রমণ সময়কাল?
ঢাকা থেকে কিরিবাতির রাজধানী তারাওয়া (Tarawa) যেতে সাধারণত ২৫ – ৩৫ ঘণ্টা সময় লাগে। একাধিক ট্রানজিট হয়ে থাকেঃ ঢাকা → সিঙ্গাপুর/কুয়ালালামপুর → অস্ট্রেলিয়া/নিউজিল্যান্ড → ফিজি → কিরিবাতি।
আরও পড়ুনঃ জ্যামাইকা বেতন কত | জ্যামাইকা ভিসার দাম কত
সতর্কতা
কিরিবাতির নাম ব্যবহার করে অনেক দালাল ও এজেন্সি অবৈধ ওয়ার্ক পারমিট বা নকল অফার লেটার দিয়ে প্রতারণা করছে। সেজন্যঃ
- কিরিবাতি ইমিগ্রেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যাচাই করুন।
- কোনো টাকা লেনদেনের আগে স্পন্সর সত্যতা যাচাই করুন।
- দূতাবাস অথবা আন্তর্জাতিক এনজিও থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।
শেষ কথা
কিরিবাতি বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নতুন ও তুলনামূলকভাবে কম লোকের গন্তব্য হলেও, বৈধ উপায়ে গেলে এখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ বা পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া সম্ভব।
যথাযথ তথ্য, স্পন্সর ও সতর্কতা অবলম্বন করলেই আপনি এই দ্বীপ রাষ্ট্রে সুন্দর ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।