ভিসা

মৌরিতানিয়া বেতন কত | মৌরিতানিয়া ভিসার দাম কত

মরিতানিয়া আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত একটি আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। দেশটি আটলান্টিক মহাসাগর ও সাহারা মরুভূমির মিলনস্থলে অবস্থিত।মৌরিতানিয়া বেতন কত | মৌরিতানিয়া ভিসার দাম কতখনিজসম্পদ, ফিশারিজ ও নির্মাণ খাতে শ্রমিক চাহিদা থাকায় অনেক বাংলাদেশি নাগরিক জীবিকার উদ্দেশ্যে মরিতানিয়ায় যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

তবে বৈধভাবে মরিতানিয়ায় যেতে হলে সঠিক তথ্য, কাগজপত্র ও ভিসা প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা আবশ্যক।

মরিতানিয়া যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য মরিতানিয়ায় যাওয়ার বৈধ উপায় হলো বিভিন্ন ধরনের ভিসা গ্রহণের মাধ্যমে। সাধারণত নিচের ক্যাটাগরিগুলো জনপ্রিয়ঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা
  • বিজনেস বা ইনভেস্টর ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা

সরকারি উপায়

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বোয়েসেল (BOESL) বা

অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরাসরি মরিতানিয়ায় কর্মী পাঠানোর কোনো স্থায়ী চুক্তি নেই। তবে ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

বেসরকারি উপায়

অনেক বাংলাদেশি বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য বা আফ্রিকার অন্যান্য দেশে অবস্থানরত এজেন্সি বা পরিচিতজনের মাধ্যমে বেসরকারিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মরিতানিয়া যাচ্ছেন।

তবে এতে প্রতারণার ঝুঁকি অনেক বেশি, তাই অবশ্যই রেজিস্টার্ড ও যাচাইযোগ্য এজেন্সির মাধ্যমেই কাজ করা উচিত।

মরিতানিয়া ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বর্তমানে মরিতানিয়ার ভিসার জন্য দুটি পদ্ধতি আছেঃ

১. অন-অ্যারাইভাল ভিসা (Visa on Arrival)

বাংলাদেশসহ বেশ কিছু দেশের নাগরিক নৌয়াকশুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে সরাসরি ভিসা নিতে পারেন। তবে এর জন্য অবশ্যই নিম্নোক্ত কাগজপত্র থাকা আবশ্যকঃ

  • হোটেল বুকিং বা স্পন্সর লেটার
  • রিটার্ন টিকিট
  • অর্থনৈতিক সামর্থ্যের প্রমাণ
  • কোভিড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট (যদি প্রযোজ্য)

২. দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসা

বাংলাদেশে মরিতানিয়ার কোন দূতাবাস না থাকলেও ভারতে অবস্থিত মরিতানিয়া দূতাবাস বা অন্য নিকটবর্তী দূতাবাসে আবেদন করা যায়

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসার ধরন অনুসারে কিছু কাগজপত্র আলাদা হলেও, নিচের দলিলগুলো সাধারণভাবে আবশ্যকঃ

  • ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট
  • রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধনের কপি
  • ফ্লাইট বুকিং কাগজ
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সর্বশেষ ৩ বা ৬ মাস)

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

নিয়োগকর্তার অফার লেটার, ওয়ার্ক কন্ট্রাক্ট ও স্পন্সরশিপ পত্র।

স্টুডেন্ট ভিসা

বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার, স্কলারশিপ প্রমাণপত্র।

ড্রাইভিং সম্পর্কিত কাজ

বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স (আন্তর্জাতিক হলে ভালো হয়)।

পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা

বৈবাহিক সনদ, স্বামী/স্ত্রীর আইডি কপি, ইনভাইটেশন লেটার।

মরিতানিয়া বেতন কত?

মরিতানিয়ায় বেতন অনেকটা কাজের ধরন ও দক্ষতার ওপর নির্ভরশীলঃ

  • সাধারণ শ্রমিকের বেতনঃ ২৫০ – ৪০০ ইউএস ডলার (প্রায় ৩০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা)
  • দক্ষ শ্রমিক (ইলেকট্রিশিয়ান, ড্রাইভার, প্লাম্বার): ৫০০ – ৭৫০ ইউএস ডলার (প্রায় ৬০,০০০ – ৯০,০০০ টাকা)
  • প্রফেশনাল (ইঞ্জিনিয়ার, আইটি, ম্যানেজার): ৮০০ – ১৫০০ ইউএস ডলার+
    খাদ্য, বাসস্থান ও ট্রান্সপোর্ট অনেক সময় কোম্পানি দিয়ে থাকে।

ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?

ভিসা খরচ

  • ভিসার ধরন অনুসারে ভিসা ফি পরিবর্তন হয়।
  • অন-অ্যারাইভাল ভিসার খরচঃ ৬০ – ১২০ ইউরো
  • দূতাবাস ভিসার ফি: ৮০ – ১৫০ ইউরো

সম্পূর্ণ ভ্রমণ খরচ

বেসরকারি উপায়ে যেতে খরচ হয়ঃ ৪ – ৭ লাখ টাকা (এজেন্সির ফি, বিমানভাড়া, প্রক্রিয়াজাত খরচসহ)।

ভ্রমণের সময়কাল?

  • বাংলাদেশ থেকে মরিতানিয়ায় যেতে সাধারণত ২০ – ৩০ ঘণ্টা সময় লাগে।
  • ঢাকা → ইস্তাম্বুল/দোহা/কাসাব্লাংকা → নৌয়াকশুত (মরিতানিয়ার রাজধানী)।

মরিতানিয়ার মুদ্রার নাম?

মরিতানিয়ান উগুয়া (Mauritanian Ouguiya – MRU)।

বাংলাদেশে মরিতানিয়ার দূতাবাস আছে কি?

না, বাংলাদেশে মরিতানিয়ার দূতাবাস নেই। সাধারণত ভারত, আলজেরিয়া বা মিশরের দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

আরও পড়ুনঃ লাওস বেতন কত | লাওস ভিসার দাম কত

সতর্কতা

  • বর্তমানে অনেক ভুয়া এজেন্সি ও দালাল কম খরচের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ উপায়ে মরিতানিয়া পাঠানোর চেষ্টা করছে। এদের থেকে সতর্ক থাকুন।
  • সবসময় বৈধ উপায়ে, যাচাইযোগ্য ও রেজিস্টার্ড এজেন্সি বা সরকারি মাধ্যম ব্যবহার করুন।
  • অন-অ্যারাইভাল ভিসার তথ্য নিজে দূতাবাস বা সরকারি সাইট থেকে যাচাই করুন।

FAQs: মৌরিতানিয়া বেতন কত | মৌরিতানিয়া ভিসার দাম কত

মরিতানিয়ায় ইসলাম প্রচলিত ধর্ম কি?

হ্যাঁ, মরিতানিয়া একটি ইসলামিক প্রজাতন্ত্র, এবং শতভাগ নাগরিক মুসলমান।

মরিতানিয়ায় নিরাপত্তা কেমন?

নির্দিষ্ট অঞ্চলে নিরাপত্তা কিছুটা দুর্বল হলেও রাজধানী ও কাজের এলাকাগুলো তুলনামূলক নিরাপদ। ভ্রমণের আগে আপডেটেড নিরাপত্তা বার্তা অনুসরণ করা উচিত।

কি ধরনের কাজ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়?

নির্মাণ, ফিশারিজ, হোটেল, ড্রাইভিং, কৃষি ও হেল্পার পদের চাহিদা বেশি।

শেষ কথা

মরিতানিয়ায় কাজ বা বসবাসের উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে প্রাথমিক পর্যায়ে বিস্তারিত তথ্য, কাগজপত্র প্রস্তুতি এবং নিরাপদ প্রক্রিয়া জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভালো প্রস্তুতি ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতারণা এড়িয়ে মরিতানিয়ার মতো দেশে বৈধভাবে কর্মসংস্থান পাওয়া সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button