ভিসা

উত্তর কোরিয়া বেতন কত | উত্তর কোরিয়া ভিসার দাম কত

উত্তর কোরিয়া পূর্ব এশিয়ার একটি অত্যন্ত সংরক্ষিত ও কঠোর নিয়ন্ত্রিত দেশ, যার আনুষ্ঠানিক নাম Democratic People’s Republic of Korea (DPRK)। রাজধানী পিয়ংইয়ং (Pyongyang)।উত্তর কোরিয়া বেতন কত | উত্তর কোরিয়া ভিসার দাম কতঅনেক বাংলাদেশি নাগরিক উত্তর কোরিয়ায় বিভিন্ন শিল্পকারখানা বা প্রজেক্টে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান, তবে এই দেশের ভিসা প্রক্রিয়া অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত ও ভিন্ন ধরণের।

উত্তর কোরিয়া যাওয়ার উপায়?

উত্তর কোরিয়ায় বৈধভাবে যেতে হলে অবশ্যই সরকার অনুমোদিত ভিসা গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য নিম্নলিখিত ভিসা ক্যাটাগরিগুলো প্রযোজ্যঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • ডিপ্লোম্যাটিক/সরকারি ভিসা
  • বিজনেস ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা (খুব সীমিত, অনুমতিপ্রাপ্ত গ্রুপের মাধ্যমে)
  • জার্নালিস্ট ভিসা (বিশেষ শর্তসাপেক্ষ)

সরকারি উপায়ে

উত্তর কোরিয়ার সাথে বাংলাদেশের সরাসরি শ্রম চুক্তি নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বা রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্পভিত্তিক চুক্তিতে বাংলাদেশি শ্রমিক প্রেরণ করা হয় (বিশেষত নির্মাণ বা ইঞ্জিনিয়ারিং কাজে)। এক্ষেত্রে শ্রম মন্ত্রণালয় বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন।

বেসরকারি উপায়ে

উত্তর কোরিয়ার সাথে বাংলাদেশের বেসরকারি সংযোগ খুব সীমিত। তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে (যেমনঃ চীন বা রাশিয়া) প্রক্সি পদ্ধতিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকে, তবে এই ধরণের ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য নয়।

উত্তর কোরিয়া ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

উত্তর কোরিয়া সরাসরি অনলাইন ভিসা আবেদন গ্রহণ করে না। ভিসা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে কাগজপত্রের মাধ্যমে এবং উত্তর কোরিয়ার সহযোগী দূতাবাসের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

আবেদনের ধাপ?

  • পিয়ংইয়ং সরকারের অনুমোদিত আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ করতে হবে (স্পন্সর বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে)।
  • উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসে ভিসার আবেদনপত্র জমা দিতে হবে (ঢাকায় অফিস নেই, তাই সাধারণত চীনস্থ দূতাবাস ব্যবহৃত হয়)।
  • প্রয়োজনীয় ফি ও কাগজপত্র দাখিল করে সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

  • বৈধ পাসপোর্ট (ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদী)।
  • রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • স্বাস্থ্য রিপোর্ট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  • কর্মস্থলের স্পন্সরশিপ/ইনভাইটেশন লেটার।
  • প্রাসঙ্গিক শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সনদ (ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে)।

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • জার্নালিস্ট ভিসাঃ রিপোর্টিং পরিকল্পনা, ক্যামেরা পারমিট, সাংবাদিক পরিচয়পত্র।
  • বিজনেস ভিসাঃ কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন কপি, ইনভাইটেশন লেটার।
  • ট্যুরিস্ট ভিসাঃ সরকার অনুমোদিত ট্যুর অপারেটরের গ্রুপ বুকিং।

উত্তর কোরিয়া বেতন কত?

উত্তর কোরিয়ায় বিদেশি শ্রমিকের বেতন ভিন্ন হয়, তবে সাধারণত নিম্নরূপঃ

  • সাধারণ শ্রমিকঃ $৩৫০ – $৫০০ USD (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪০,০০০ – ৫৮,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিক/প্রকৌশলীঃ $৭০০ – $১২০০ USD (প্রায় ৮০,০০০ – ১,৪০,০০০ টাকা)।
  • বেতন সাধারণত কোম্পানির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, এবং অনেক ক্ষেত্রে তা তৃতীয় দেশে প্রেরণ করা হয়।

ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?

সরকারি প্রকল্প ভিত্তিক ভিসার খরচঃ

  • ভিসা ফিঃ প্রায় ২০,০০০ – ৩০,০০০ টাকা।
  • অন্যান্য খরচঃ যাতায়াত, অনুমতি ফি, ট্রানজিট (চীন) – মোট প্রায় ২-৩ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়ে (প্রক্সি ট্রান্সফার)

মোট খরচঃ প্রায় ৪ – ৬ লাখ টাকা (অনুমতিপত্র, ট্রানজিট ব্যবস্থা, ফ্লাইটসহ)।

ভ্রমণের সময়কাল?

বাংলাদেশ থেকে উত্তর কোরিয়া সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। সাধারণত ঢাকা > চীন (বেইজিং/ডালিয়ান) > পিয়ংইয়ং রুট ব্যবহার করা হয়। মোট সময়ঃ ১৮ – ২৪ ঘণ্টা (ট্রানজিট ও নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্সসহ)।

উত্তর কোরিয়ার মুদ্রার নাম কি?

উত্তর কোরিয়ার মুদ্রার নাম North Korean Won (KPW)।

বাংলাদেশে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসের ঠিকানা?

উত্তর কোরিয়ার বাংলাদেশে কোনো সরাসরি দূতাবাস নেই। সাধারণত চীনে অবস্থিত DPRK দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।

বিকল্প দূতাবাস?

  • Embassy of DPRK in Beijing, China
  • No. 11, Ri Tan Bei Lu, Beijing 100600, China

আরও পড়ুনঃ ফিলিপাইন বেতন কত | ফিলিপাইন ভিসার দাম কত

সতর্কতা

উত্তর কোরিয়া একটি কঠোর নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র, যেখানে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা অনুমতি ছাড়া কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দালালদের প্রতারণা, অবৈধ পদ্ধতি বা ভুল তথ্যের ফাঁদে পড়া থেকে বিরত থাকুন। বিদেশ গমন অবশ্যই সরকারের অনুমোদিত ও যাচাইযোগ্য উপায়ে সম্পন্ন করুন।

FAQs: উত্তর কোরিয়া বেতন কত | উত্তর কোরিয়া ভিসার দাম কত

আমি কি ট্যুরিস্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়া যেতে পারি?

হ্যাঁ, তবে শুধুমাত্র সরকার অনুমোদিত ট্যুর কোম্পানির মাধ্যমে গ্রুপ ভিত্তিক ভ্রমণ সম্ভব।

ব্যক্তিগতভাবে কি উত্তর কোরিয়ায় কাজ করা যায়?

না। শুধুমাত্র প্রকল্প ভিত্তিক এবং অনুমতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই ভিসা পাওয়া সম্ভব।

উত্তর কোরিয়ায় কাজ করলে কী স্থায়ী হওয়া যায়?

না। DPRK তে কোনো স্থায়ী অভিবাসন সুযোগ নেই।

শেষ কথা

উত্তর কোরিয়ায় যাত্রা একদিকে যেমন সীমিত, অন্যদিকে তা ভিন্নধর্মী ও সংরক্ষিত। তাই ভিসা আবেদন, ভ্রমণ পরিকল্পনা এবং কাগজপত্র প্রস্তুতি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে করতে হবে। সঠিক পন্থা ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেই নিরাপদে কাজের উদ্দেশ্যে উত্তর কোরিয়ায় যাত্রা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button