ভিসা

সাও টোমে ও প্রিন্সিপে বেতন কত | সাও টোমে ও প্রিন্সিপে ভিসার দাম কত

সাও টোমে ও প্রিন্সিপে মধ্য আফ্রিকার গিনি উপসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। এই শান্তিপূর্ণ দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমুদ্র সৈকত এবং কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির জন্য পরিচিত।সাও টোমে ও প্রিন্সিপে বেতন কত | সাও টোমে ও প্রিন্সিপে ভিসার দাম কতবর্তমানে বাংলাদেশের অনেক নাগরিক জীবিকার উদ্দেশ্যে বা ভ্রমণের জন্য আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে যেতে আগ্রহী, যার মধ্যে সাও টোমে ও প্রিন্সিপেও একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য। তবে সেখানে যেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন ও ভিসা প্রক্রিয়া মেনে চলা অত্যাবশ্যক।

সাও টোমে ও প্রিন্সিপে যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সাও টোমে ও প্রিন্সিপেতে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো বৈধ ভিসা গ্রহণ। নিচের ক্যাটাগরিগুলোতে আবেদন করা যায়ঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • পরিবার পুনর্মিলন ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিসা
  • বিজনেস ভিসা

সরকারি উপায়ে যাত্রা

বর্তমানে বোয়েসেল (BOESL) এর মাধ্যমে সরাসরি সাও টোমে ও প্রিন্সিপেতে লোক পাঠানোর চুক্তি নেই। তবে ভবিষ্যতে চুক্তিভিত্তিক সুযোগ আসতে পারে।

তাই যারা সরকারি উপায়ে যেতে আগ্রহী, তাদের উচিত বোয়েসেল ও BMET এর আপডেট খোঁজ রাখা।

বেসরকারি উপায়ে যাত্রা

বাংলাদেশে কিংবা বিদেশে বসবাসরত এজেন্সি বা পরিচিত কারো মাধ্যমে সাও টোমে ও প্রিন্সিপেতে ওয়ার্ক পারমিট বা ব্যবসায়িক ভিসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই এজেন্সির বৈধতা যাচাই করে নেয়া উচিত।

সাও টোমে ও প্রিন্সিপে ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

সাও টোমে ও প্রিন্সিপে বর্তমানে অনলাইনে ই-ভিসা দেয়। এছাড়া আপনি চাইলে তাদের নিকটস্থ দূতাবাসে অফলাইনেও আবেদন করতে পারেন। ভিসা আবেদন করতে যা করতে হবেঃ

  • অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
  • নির্ধারিত ভিসা ফর্ম পূরণ করুন
  • প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করুন।
  • ভিসা ফি পরিশোধ করুন।
  • নির্ধারিত সময়ে ইমেইলে ভিসা অ্যাপ্রুভাল পাবেন।
  • এয়ারপোর্টে পাসপোর্ট ও প্রিন্টেড ই-ভিসা প্রদর্শন করতে হবে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

ভিসার ধরন অনুসারে কিছু ভিন্নতা থাকলেও, সাধারণভাবে নিচের কাগজপত্র প্রয়োজন হবেঃ

  • কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট
  • রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্মনিবন্ধন
  • ভ্রমণের উদ্দেশ্য উল্লেখ করে কভার লেটার
  • ফ্লাইট বুকিং ও হোটেল রিজারভেশন (ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য)
  • ইনভাইটেশন লেটার (ওয়ার্ক/বিজনেস/পারিবারিক ভিসার জন্য)
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা ও ইনস্টিটিউশন অফার লেটার (স্টুডেন্ট ভিসার জন্য)

সাও টোমে ও প্রিন্সিপে বেতন কত?

সাও টোমে ও প্রিন্সিপেতে বেতন কাজের ধরন ও স্কিলের ওপর নির্ভর করেঃ

  • সাধারণ শ্রমিকঃ ২৫০ – ৪০০ ইউএস ডলার (প্রায় ২৮,০০০ – ৪৫,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিকঃ ৫০০ – ৭৫০ ইউএস ডলার পর্যন্ত (প্রায় ৫৬,০০০ – ৮৫,০০০ টাকা)।
  • প্রফেশনাল/বিশেষজ্ঞদের বেতনঃ ৮০০ ইউএস ডলার বা তার বেশি।

ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?

সরকারি উপায়ে (যদি চালু হয়)

ভিসা ও অন্যান্য খরচঃ আনুমানিক ৪-৫ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়ে

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা + ট্রাভেল খরচঃ ৫-৭ লাখ টাকা পর্যন্ত।
  • ট্যুরিস্ট বা বিজনেস ভিসার খরচ তুলনামূলকভাবে কম (২-৩ লাখ টাকা)।

বাংলাদেশ থেকে যাত্রার সময়কাল?

সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় সাধারণত ১ বা ২টি ট্রানজিট লাগে (বিশেষ করে পর্তুগাল, ইথিওপিয়া বা তুরস্ক হয়ে)। মোট যাত্রার সময়ঃ ১৮ – ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।

সাও টোমে ও প্রিন্সিপের মুদ্রার নাম কী?

ডোবরা (São Tomé and Príncipe Dobra – STN)। ১ ইউএস ডলার ≈ প্রায় ২২ STN (রেট পরিবর্তনশীল)।

বাংলাদেশি দূতাবাসের অবস্থা?

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সাও টোমে ও প্রিন্সিপেতে নিজস্ব দূতাবাস নেই। তবে আপনি নিকটবর্তী পর্তুগাল বা নাইজেরিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে কনস্যুলার সহায়তা নিতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ইরাক বেতন কত | ইরাক ভিসার দাম কত

সতর্কতা

বর্তমানে অনেক প্রতারক এজেন্সি “কম খরচে সাও টোমে পাঠাবে” বলে মানুষকে ফাঁদে ফেলছে। তাদের কথায় ভুলে ভিসাহীন বা ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে যাওয়া আদালত ও ডিপোর্ট ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।

সবসময় সরকারি সংস্থা, BMET, অথবা ভেরিফায়েড রিক্রুটিং এজেন্সি এর মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করুন।

FQAS: সাও টোমে ও প্রিন্সিপে বেতন কত | সাও টোমে ও প্রিন্সিপে ভিসার দাম কত

সাও টোমেতে কি কাজ পাওয়া সহজ?

কৃষি, পর্যটন, কন্সট্রাকশন ও সেবামূলক খাতে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে।

পরিবার নিয়ে যাওয়া যায় কি?

হ্যাঁ, বৈধ কাজ ও বসবাসের অনুমতি থাকলে পরিবার পুনর্মিলন ভিসার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া যায়।

স্থানীয় ভাষা কী?

পর্তুগিজ (Portuguese) তবে ইংরেজি সীমিত পর্যায়ে চলে।

শেষ কথা

সাও টোমে ও প্রিন্সিপেতে যেতে চাইলে অবশ্যই সঠিক তথ্য, কাগজপত্র এবং বৈধ এজেন্সির সহায়তা নিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে।

ভিসার আবেদন, আর্থিক পরিকল্পনা এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত বিষয়গুলো আগেই বুঝে নিলে প্রতারণা এড়িয়ে আপনি নিরাপদে বিদেশ যেতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button