স্বাস্থ্য

থার্মোমিটার এর দাম কত ২০২৫

থার্মোমিটার কি এবং থার্মোমিটার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত গাইডলাইন থাকবে আজকের এই আর্টিকেলে। আপনার বাড়িতে যদি একটি থার্মোমিটার থাকে। যেটির সাহায্যে আপনি আপনার শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।থার্মোমিটারতবে আপনার এই বিষয়গুলো সম্পর্কে অবশ্যই অবগত হওয়া উচিত। আর তাই থার্মোমিটার কেনার নিয়ম থেকে শুরু করে এটির সঠিক ব্যবহারবিধি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে আজকের এই আর্টিকেলে।

থার্মোমিটার কি?

থার্মোমিটার হচ্ছে এক ধরণের যন্ত্র বা ডিভাইস যেটির মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরের তাপমাত্রার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারি।

অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপের একটি যন্ত্র হচ্ছে থার্মোমিটার। থার্মোমিটার অনেক ধরণের হয়ে থাকে যেমনঃ

  • তরল থার্মোমিটার
  • গ্যাস থার্মোমিটার
  • রোধ থার্মোমিটার
  • তাপযুগল বা থার্মকাপল থার্মোমিটার বিকিরণ থার্মোমিটার ইত্যাদি।

তবে এখন বাজারে কিছু সাধারণ থার্মোমিটার পাওয়া যায় যেগুলোর মাধ্যমে আমরা সহজেই শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারি। এসব থার্মোমিটারের নাম পারদ থার্মোমিটার।

বিভিন্ন ক্লিনিক এবং হাসপাতালে এই পারদ থার্মোমিটারের সাহায্যে শরীরের তাপমাত্রা অর্থাৎ জ্বর মাপা হয়ে থাকে। এছাড়াও এই পারদ থার্মোমিটার অনেক পুরনো হওয়ায়, এটির প্রচলন বেশি।

অধিকন্তু এই ধরণের থার্মোমিটার দামেও বেশ সহজলভ্য হয়ে থাকে। তবে এখন এই থার্মোমিটারের ব্যবহার আগের তুলনায় বেশ খানিকটাই কমে আসছে। কারণ ইদানিং বাজারে কিছু ডিজিটাল থার্মোমিটার পাওয়া যাচ্ছে।

যেখানে সরাসরি শরীরের তাপমাত্রা কত সেটি লেখা থাকবে। অর্থাৎ ডিজিটাল থার্মোমিটারে আপনার শরীরের তাপমাত্রা ১০২° হলে সেটিই লেখা দেখানো হয়ে থাকে। এতে করে সহজেই আপনি আপনার শরীরের তাপমাত্রা দেখে নিতে পারবেন।

থার্মোমিটার ব্যবহারের নিয়ম?

অনেকেই হয়তো ভেবে থাকেন থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মাপার কোন নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন নেই। যদি আপনিও এই ভাবনা ভেবে থাকেন তবে বলতে হয় আপনি ভুল ভাবনায় রয়েছেন।

থার্মোমিটার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম না জেনে জ্বর মাপলে সেটি সঠিক ফলাফল দেখাবে না। বেশ কয়েকটি বিষয় রয়েছে যেগুলো আপনাকে থার্মোমিটার ব্যবহারের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

নিম্নে সাধারণ থার্মোমিটার ব্যবহারের কিছু নিয়ম এবং পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে নির্দেশিকা দেওয়া হল। আজ থেকে থার্মোমিটার ব্যবহারের সময় উক্ত নির্দেশিকাগুলো মেনে থার্মোমিটার ব্যবহার করুন।

থার্মোমিটার ব্যবহারের আগে আপনাকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে যে,কত তাপমাত্রা হলে সেটিকে জ্বর হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। স্বাভাবিকভাবে মানুষের শরীরে তাপমাত্রা ৯৮ থেকে ৯৯ ডিগ্রি এর মধ্যে থাকে।

আমাদের শরীরের তাপমাত্রা যদি এর থেকে বেশি হয় তবে ধরে নেওয়া হবে জ্বর হয়েছে। তবে অনেকেই তাপমাত্রা ১০০ এর নিচে থাকলে সেটিকে স্বাভাবিক বলে ধরে থাকে। যেটির কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

বয়সভেদে থার্মোমিটার ব্যবহারের নিয়ম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ডাক্তাররা মুখের ভিতরে থার্মোমিটার প্রবেশ করিয়ে জ্বর মাপার নির্দেশিকা প্রদান করে থাকে।

যদিও এটি একটি অনেকটা বিব্রতকর পদ্ধতি। পাঁচ বছর বয়সের পর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত বগলের মাঝখানে থার্মোমিটার বসিয়ে জ্বর মাপা হয়ে থাকে।নিচে এবার কয়েকটি ধাপে থার্মোমিটার ব্যবহারের পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক। যেমনঃ

১. শুরুতেই আপনার থার্মোমিটারটি ভালকরে ঝাকিয়ে নিন। এটিকে ততক্ষণ পর্যন্ত ঝাকিয়ে নিন যতক্ষণ না পর্যন্ত তাপমাত্রা ৯৬.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে আসছে।

২. অতঃপর যদি আপনার বয়স পাঁচ বছরের বেশি হয়ে থাকে। তাহলে থার্মোমিটারটি বগলের মাঝখানে বসিয়ে দিন। কিন্তু যদি আপনি আপনার শিশুর তাপমাত্রা মাপতে চান তবে প্রথমেই থার্মোমিটারটি ভালমতো ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। প্রয়োজনে সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে। এরপর সেটি তার জিহ্বার ভেতরে বসিয়ে দিন।

৩. থার্মোমিটার বসিয়ে দেওয়ার পর অন্তত দুই থেকে তিন মিনিট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করুন তাপমাত্রার সঠিক ফলাফল আসার জন্য।

৪. দুই থেকে তিন মিনিট অপেক্ষার পর এবার আপনি আপনার থার্মোমিটারটি হাতে নিয়ে নিন। যদি আপনার থার্মোমিটার পারদ হয়ে থাকে তবে একটু সরু রেখা দ্বারা আপনার শরীরের তাপমাত্রা নির্দেশ করা হবে।

কিন্তু যদি আপনার থার্মোমিটার ডিজিটাল হয়ে থাকে। তাহলে আপনি সরাসরি আপনার শরীরের তাপমাত্রা কত সেটি লেখা দেখতে পারবেন।

৫. আপনার শরীরে তাপমাত্রা পরিমাপের পর অবশ্যই থার্মোমিটারটিকে ভালকরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে। এরপর সেটিকে থার্মোমিটারের বাক্সে কিংবা কোন খোলসে ঢুকিয়ে রাখুন। যাতে কোন ভাবেই থার্মোমিটারে কোন জীবাণু কিংবা ধুলাবালি না পৌঁছাতে পারে।

উপরে উল্লেখিত পাঁচটি ধাপে বিভক্ত করে বলা হয়েছে আপনি কিভাবে সঠিকভাবে থার্মোমিটার ব্যবহার করে তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারেন।

আপনি যদি উপরের ধাপ গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে জ্বর মাপেন। তবে সঠিক ফলাফল পাওয়ার সাথে সাথে, জীবাণু সংক্রমনের কোন আশঙ্কাও থাকবে না।

থার্মোমিটারে বাচ্চাদের জ্বর মাপার নিয়ম?

উপরে আপনারা থার্মোমিটার ব্যবহারের পদ্ধতি বা নিয়ম কানুন সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। কিন্তু আপনি যদি আপনার শিশুর তাপমাত্রা সঠিকভাবে থার্মোমিটার দ্বারা মাপতে চান।

তাহলে আপনাকে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে থার্মোমিটার ব্যবহার করতে হবে। থার্মোমিটারে বাচ্চাদের জ্বর মাপার সম্পূর্ণ নিয়ম নিচে সুন্দর করে উল্লেখ করা হল। উল্লেখিত নিয়ম বা নির্দেশিকা গুলো মেনে থার্মোমিটার ব্যবহার করা হলে ভাল ফলাফল পাওয়া সম্ভব। যেমনঃ

  • শুরুতে আপনাকে আপনার থার্মোমিটারটি ঠান্ডা জল দিয়ে খুব ভাল করে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে প্রস্তুত করে নিতে হবে।
  • দ্বিতীয় ধাপে থার্মোমিটারটি আপনার শিশুর মুখের ভিতর জিহ্বাতে বসিয়ে দিতে হবে।
  • এবার অন্তত দুই থেকে তিন মিনিট সময় আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।
  • কিছু সময় অপেক্ষা করার পর এবার আপনি থার্মোমিটারটি নিন। এবং আপনার শিশু তাপমাত্রাটি পর্যবেক্ষণ করুন।
  • থার্মোমিটার ব্যবহারে মাধ্যমে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করার পর সেটিকে আবার পরিষ্কার করে যত্ন করে ভাল কোন স্থান তুলে রাখুন।

ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহারের নিয়ম?

এতক্ষণে আপনারা জানলেন সাধারণ থার্মোমিটার দ্বারা কিভাবে আপনি আপনার এবং আপনার শিশুর জ্বর মাপতে পারেন।ডিজিটাল থার্মোমিটারতবে মনে রাখবেন সাধারণ পারদ থার্মোমিটার এবং ডিজিটাল থার্মোমিটারের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। এছাড়াও দুটির ব্যবহার বিধির মধ্যেও কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

আর তাই যদি আপনি একজন ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন। তাহলে নিচে দেওয়া নির্দেশিকাগুলো অনুসরণ করে আপনার এবং আপনার শিশুর জ্বর মাপুন।

১. বরাবরের মতোই প্রথমে আপনার ডিজিটাল থার্মোমিটারটির মাথা সুন্দর মত ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে নিন। লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে কোনভাবেই সেটি অপরিষ্কার না থাকে। এরপর সেটিকে অন করুন।

২. এরপর কাঙ্খিত স্থানে থার্মোমিটারটি সুন্দর মত বসিয়ে দিন। যদি আপনার শিশুর তাপমাত্রা মাপতে চান। তাহলে সেটি তার মুখে এবং যদি আপনি নিজের তাপমাত্রা মাপতে চান তবে বগলের মাঝখানে রেখে দিন।

৩. এখানে আপনাকে ঘড়ির সময় ধরে বসে থাকতে হবে না। নির্ধারিত সময় পর থার্মোমিটারটি আপনাআপনি বিপ করতে শুরু করবে।

৪. থার্মোমিটার কি বিপ বা কোন আওয়াজ করার পর সেটি সরিয়ে নিন এবং তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন।

৫. তাপমাত্রা পরিমাপ শেষে যথারীতি সেটি আবার পরিষ্কার করে অফ করে রাখুন।

থার্মোমিটার দাম কত?

থার্মোমিটার তাপমাত্রা মাপার জন্য ব্যবহার হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এবং বিভিন্ন প্রযুক্তির থার্মোমিটার পাওয়া যায়। ব্র্যান্ড এবং প্রযুক্তি অনুযায়ী থার্মোমিটারের দাম কত টাকা হবে তা নির্ধারিত হয়ে থাকে।

যেখানে একটি থার্মোমিটারের দাম প্রযুক্তি বেঁধে দশ হাজার থেকে কুড়ি হাজার টাকা হতে পারে। কিন্তু মানুষের শরীরের সাধারণ জ্বর মাপার জন্য ১০০ থেকে ১২০ টাকায় একটি থার্মোমিটার পাওয়া যায়।

জ্বর মাপার থার্মোমিটার এর দাম কত?

আপনি যদি বাজারের সাধারণ পারদ থার্মোমিটার ক্রয় করতে চান। তবে সেটির মূল্য ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যেই হবে।

পারদ থার্মোমিটার দাম কত?

ঘরের তাপমাত্রা থেকে শুরু করে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা এবং জ্বর মাপার জন্য পারদ থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়। পারদ থার্মোমিটার ব্যবহার করা খুব সহজ। ইহা বাংলাদেশের বহুল ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় একটি থার্মোমিটার।পারদ থার্মোমিটারঅর্থাৎ এই থার্মোমিটারের দাম ন্যূনতম ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০ টাকা হয়। এছাড়াও একটি ভালো মানের পারদ থার্মোমিটার ২২০ থেকে ৩২০ টাকা হতে পারে।

নরমাল থার্মোমিটার দাম কত?

নরমাল থার্মোমিটার গুলোতে পারদ ব্যবহার করা হয়। আর এই নরমাল থার্মোমিটার দাম ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা হয়। আরএগুলো যেকোন ডাক্তারের দোকানে খুব সহজেই পাওয়া যায়।

তবে নরমাল থার্মোমিটার গুলোর দাম সর্বোচ্চ ১৪৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়। তবে ডিজাইন এবং মডেল অনুযায়ী দাম কম বেশি হতে পারে।

ডিজিটাল থার্মোমিটার দাম কত?

প্রযুক্তিভেদে বিভিন্ন ক্যাটাগরির থার্মোমিটার তৈরি হয়েছে। থার্মোমিটার বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। যেমনঃ পারদ থার্মোমিটার, ডিজিটাল থার্মোমিটার, কানের থার্মোমিটার, এয়ার থার্মোমিটার, প্রোব থার্মোমিটার ও ইনফ্রারেড থার্মোমিটারসহ আরো ইত্যাদি।

এছাড়াও আপনি জ্বর মাপার জন্য ডিজিটাল ও এনালগ থার্মোমিটার পেয়ে যাবেন। অর্থাৎ জ্বর মাপার জন্য সাধারণ একটি থার্মোমিটারের দাম ন্যূনতম ৯০ থেকে ১২০ টাকা হয়।

এছাড়াও প্রযুক্তিভেদে থার্মোমিটারের ধরন অনুযায়ী জ্বর মাপার থার্মোমিটারের দাম ৪৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকা হতে পারে। তবে জ্বর মাপার সাধারণ থার্মোমিটার গুলো কম দামে মাত্র ১০০ টাকা থেকে ২২০ টাকায় পাবেন।

জ্বর মাপার ডিজিটাল থার্মোমিটার দাম কত?

সাধারণত মানুষের শরীরের জ্বর পরিমাপ করার জন্য ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়। আমরা হয়তো সকলেই এই ডিজিটাল থার্মোমিটারের ব্যবহার দেখেছি।

কিন্তু এর দাম কত টাকা করে তা হয়তো অনেকেই জানিনা। সাধারণ জ্বর মাপার ডিজিটাল থার্মোমিটারের দাম ন্যূনতম ১০০ টাকা থেকে ১০০ টাকা হয়।

তবে ডিজিটাল প্রযুক্তির থার্মোমিটারের দাম ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ৪৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকায় পাওয়া যায়।

থার্মোমিটার কত সময় রাখতে হবে?

অনেকেই একটি কমন প্রশ্ন করে থাকেন যে, কত সময় পর্যন্ত থার্মোমিটার রাখতে হবে। যদিও এটির কোন নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ বলে দেওয়া নেই।

তবে সাধারণত দুই থেকে তিন তিন মিনিট পর্যন্ত রাখলেই আপনি সঠিক ফলাফল পেয়ে যাবেন। এর বেশি রাখার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। ধন্যবাদ

শেষ কথা

আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা জ্বর মাপার জন্য থার্মোমিটার কিনে থাকি। যেগুলোর দাম মাত্র ১১০ থেকে ১২০ টাকা। তবে প্রযুক্তিভেদে বিভিন্ন কাজ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের থার্মোমিটার পাওয়া যায়।

আর তাই যারা থার্মোমিটার কিনতে চাচ্ছেন তারা সবার পূর্বে কেন থার্মোমিটার কিনবেন তা নির্ধারণ করুন। আর আপনি চাইলে অনলাইন থেকে সর্বশেষ থার্মোমিটার দাম কত তা জানতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button