ভিসা

সংযুক্ত আরব আমিরাত বেতন কত | সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিসার দাম কত

সংযুক্ত আরব আমিরাত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী এবং আধুনিক দেশ। দুবাই, আবুধাবি, শারজাহসহ বিভিন্ন এমিরেট দেশটির অংশ। প্রতিবছর হাজার হাজার বাংলাদেশি জীবিকার উদ্দেশ্যে এই দেশে পাড়ি জমান।সংযুক্ত আরব আমিরাত বেতন কত | সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিসার দাম কততবে নিরাপদ এবং স্থায়ীভাবে ইউএই তে যেতে হলে অবশ্যই বৈধ ভিসা ও সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ইউএই-তে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো বৈধ ভিসা গ্রহণ। ইউএই সরকার বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা প্রদান করে, যেমনঃ

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা
  • বিজনেস ইনভেস্টর ভিসা
  • ট্যুরিস্ট/ভিজিট ভিসা

সরকারি উপায়

বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত সংস্থা BOESL (বোয়েসেল) এর মাধ্যমে ইউএই-তে বৈধ ও চুক্তিভিত্তিক কাজে যাওয়া যায়। এই চুক্তি অনুযায়ী কর্মীর বেতন, আবাসন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়।

বেসরকারি উপায়

অনুমোদিত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বা দুবাইতে অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজনের সহায়তায় ইউএই-তে যাওয়া যায়। বেসরকারি ভিসার ক্ষেত্রে চুক্তি ভালোভাবে যাচাই করে নিতে হবে।

ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসার জন্য আবেদন করতে হলেঃ

  • অনলাইন আবেদন করতে হয় অথবা অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন জমা দিতে হয়
  • আবেদন ফর্ম পূরণ করে স্ক্যান কাগজপত্র সাবমিট করতে হয়।
  • বায়োমেট্রিক ও ইন্টারভিউ প্রয়োজন হলে দূতাবাস থেকে ডাকা হয়।
  • ই-ভিসা সিস্টেমে ভিসা ইমেইলে প্রদান করা হয়।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

  • ৬ মাসের মেয়াদসম্পন্ন পাসপোর্ট
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
  • মেডিকেল রিপোর্ট (GAMCA সেন্টার হতে)।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যদি প্রযোজ্য হয়)।
  • ওয়ার্ক পারমিট বা নিয়োগপত্র (ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে)।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (ট্যুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে)।
  • ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং (ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য)।

বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • ড্রাইভিং ভিসাঃ আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স।
  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফার লেটার ও কোর্স ফি জমার রশিদ।
  • পরিবার ভিসাঃ স্পন্সরশিপ লেটার ও আত্মীয়তার প্রমাণ।

ইউএই-তে বেতন কাঠামো?

বেতনের পরিমাণ পেশা ও কোম্পানির উপর নির্ভর করেঃ

  • সাধারণ শ্রমিকঃ ৮০০–১২০০ দিরহাম (প্রায় ২৬,০০০–৩৯,০০০ টাকা)।
  • দক্ষ শ্রমিকঃ ১৫০০–২৫০০ দিরহাম (প্রায় ৪৯,০০০–৮০,০০০ টাকা)।
  • প্রযুক্তিগত/ম্যানেজমেন্ট পদেঃ ৩০০০–১০,০০০ দিরহাম বা তার বেশি (প্রায় ৯৮,০০০–৩,৩০,০০০ টাকা)।

ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?

সরকারি উপায়ে (BOESL)

ভিসা ফিঃ ৩০,০০০–৫০,০০০ টাকা।
সম্পূর্ণ খরচঃ ১.৫–২ লাখ টাকা।

বেসরকারি উপায়ে

ওয়ার্ক ভিসা খরচঃ ২.৫–৪ লাখ টাকা।
ট্যুরিস্ট ভিসাঃ ৪০,০০০–৬০,০০০ টাকা।
সম্পূর্ণ খরচঃ ৩–৫ লাখ টাকা (বাসস্থান ও ফ্লাইট সহ)।

ভ্রমণের সময়কাল?

ঢাকা থেকে দুবাই বা আবুধাবি পৌঁছাতে সাধারণত সরাসরি ফ্লাইটে ৫–৬ ঘণ্টা সময় লাগে। ট্রানজিট থাকলে সময় একটু বেশি হতে পারে।

মুদ্রার নাম ও রেট?

  • মুদ্রার নামঃ দিরহাম (AED)।
  • ১ দিরহাম ≈ ৩০ টাকা (বাজার রেট অনুযায়ী পরিবর্তনশীল)।

বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাসের ঠিকানা?

আরও পড়ুনঃ কাতার বেতন কত | কাতার ভিসার দাম কত

সতর্কতা

  • অসাধু দালাল ও ভুয়া এজেন্সির প্রতারণা থেকে সাবধান থাকুন।
  • কম খরচে “ভিসা রেডি” বা “ভিসা ফ্রি” প্রলোভনে পড়বেন না।
  • সবসময় অনুমোদিত এজেন্সি ও সরকারি সংস্থার মাধ্যমে বিদেশ যাত্রা নিশ্চিত করুন।

FQAs: সংযুক্ত আরব আমিরাত বেতন কত | সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিসার দাম কত

সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজের মেয়াদ কতদিনের?

সাধারণত ২ বছর মেয়াদি ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করা হয়।

আবাসন ও খাবার কি কোম্পানি দেয়?

বেশিরভাগ চুক্তিতে কোম্পানির দায়িত্বে থাকে, তবে চুক্তি আগে ভালোভাবে পড়ে নেওয়া উচিত।

মেডিকেল কোথা থেকে করতে হয়?

BOESL বা GAMCA অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টার থেকে মেডিকেল পরীক্ষা করাতে হবে।

শেষ কথা

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বৈধভাবে পাড়ি জমাতে হলে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও প্রক্রিয়া জানা অত্যন্ত জরুরি। সঠিকভাবে ভিসা আবেদন,

কাগজপত্র প্রস্তুতি ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করলে প্রতারণার শিকার না হয়ে সহজেই আরব আমিরাতে পৌঁছানো সম্ভব। সফল প্রবাস জীবনের জন্য সবসময় সরকারি বা যাচাইযোগ্য সংস্থার সহায়তা নিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button