যুক্তরাজ্য বেতন কত | যুক্তরাজ্য ভিসার দাম কত
যুক্তরাজ্য বা ইউকে (United Kingdom) উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত একটি বহুজাতিক দেশ। যা ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে গঠিত।এটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে এবং একটি শেনগেন দেশ না হলেও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রদান করে।
যুক্তরাজ্যে যাওয়ার উপায়?
বৈধভাবে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো বৈধ ভিসা গ্রহণ করা। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ভিসা ক্যাটাগরি প্রযোজ্যঃ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- ট্যুরিস্ট ভিসা
- পার্টনার ভিসা
- পরিবার সংযুক্তিকরণ ভিসা
- ব্যবসা ভিসা
সরকারি উপায়
যুক্তরাজ্যে সরকারি কাজের জন্য ভিসা ব্যবস্থা পাওয়া সম্ভব। সাধারণত এই প্রক্রিয়ায় সরকার বা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। তবে এই ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় লভ্যতা, স্কিল এবং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেসরকারি উপায়
ইউরোপে বসবাসরত বাংলাদেশি এজেন্সির মাধ্যমে বা পরিচিত ব্যক্তিদের সাহায্যে বেসরকারিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ব্যবস্থা করা সম্ভব।
যুক্তরাজ্য ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?
বর্তমানে যুক্তরাজ্য ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায়। আবেদন করতে হলেঃ
- যুক্তরাজ্য সরকারের ভিসা ও অভিবাসন (UKVI) ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
- আবেদন ফর্ম পূরণ করে ভিসা ফি জমা দিতে হবে।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যেমনঃ পাসপোর্ট, ছবি, আর্থিক সক্ষমতা, ইত্যাদি) আপলোড করতে হবে।
- নির্ধারিত তারিখে ভিসা সেন্টারে আবেদন জমা দিতে হবে এবং বায়োমেট্রিক্স প্রদান করতে হবে।
- পরবর্তীতে কিছু ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার নেয়া হতে পারে।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী কিছু পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো হলোঃ
- ন্যূনতম ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট
- রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- মেডিকেল রিপোর্ট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- আয়কর রিটার্ন বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট (আর্থিক সপোর্টের প্রমাণ)
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (প্রয়োজন অনুসারে)
- নিয়োগকর্তার অনুমতিপত্র (ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে)
- টিকেট বুকিং প্রমাণ (ট্যুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে)
বিশেষ ভিসার জন্য বাড়তি কাগজপত্র?
- স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রেঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফার লেটার, স্কলারশিপ প্রমাণ
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রেঃ নিয়োগকর্তার ইমেইল বা চুক্তিপত্র
যুক্তরাজ্য বেতন কত?
কাজের ধরন ও দক্ষতার ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যে বেতন নির্ধারিত হয়ঃ
- সাধারণ শ্রমিকের বেতনঃ প্রায় ১,২০০ পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৩৫,০০০ টাকা)
- দক্ষ শ্রমিকের বেতনঃ প্রায় ১,৭০০ পাউন্ড বা তার বেশি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৯০,০০০ টাকা)
ভিসা এবং ভ্রমণ খরচ?
ভিসার ধরন ও প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে খরচ ভিন্ন হতে পারে।
সরকারি উপায়
- ভিসা খরচঃ প্রায় ৩-৪ লাখ টাকা
- সম্পূর্ণ খরচঃ প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা
বেসরকারি উপায়
- ভিসা খরচঃ প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা
- সম্পূর্ণ খরচঃ প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা
ভ্রমণের সময়কাল?
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পৌঁছাতে সাধারণত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগে। একাধিক ট্রানজিট থাকলে এই সময় ১২-১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ জার্মানি বেতন কত | জার্মানি ভিসার দাম কত
সতর্কতাঃ
বর্তমানে অনেক অসাধু দালাল ও এজেন্সি কম খরচে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্য পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে প্রতারণা করছে।
এদের থেকে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি। সবসময় বৈধ উপায়ে, যাচাইযোগ্য এজেন্সি বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশ যাত্রা নিশ্চিত করুন।
শেষ কথা
যুক্তরাজ্যে কাজ বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে সঠিক তথ্য ও প্রক্রিয়া জানা অত্যন্ত জরুরি। ভিসার আবেদন, কাগজপত্র প্রস্তুতি এবং আর্থিক খরচ সম্পর্কে আগেই পরিকল্পনা করলে প্রতারণা এড়িয়ে নিরাপদে বিদেশ যাত্রা সম্ভব।