ভিসা

আমেরিকা বেতন কত | আমেরিকা ভিসার দাম কত

যুক্তরাষ্ট্র (United States of America) বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশগুলোর একটি। এর রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি হলেও নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলস, শিকাগো, হিউস্টনের মতো শহরগুলো বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ।আমেরিকা বেতন কত | আমেরিকা ভিসার দাম কতপ্রতি বছর লক্ষাধিক বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা অথবা অভিবাসনের উদ্দেশ্যে যেতে আগ্রহী হন। তবে সঠিক তথ্য ও বৈধ উপায়ে আবেদন করাই হলো সফলভাবে আমেরিকায় যাওয়ার মূল চাবিকাঠি।

যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার উপায়?

যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত কিছু ভিসা ক্যাটাগরি রয়েছে, যেমনঃ

  • ওয়ার্ক ভিসা (H1B, L1, O1 প্রভৃতি)
  • স্টুডেন্ট ভিসা (F1, M1)
  • পরিবারভিত্তিক স্পনসরশিপ ভিসা (Family-based Green Card)
  • ডিভি লটারি (Diversity Visa Lottery)
  • বিজনেস ভিসা (B1)
  • ভ্রমণ বা ট্যুরিস্ট ভিসা (B2)

সরকারি উপায়ে

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক প্রেরণের নির্দিষ্ট কোনো প্রক্রিয়া নেই। তবে ডিভি লটারি (DV Lottery) একটি সরকার অনুমোদিত উপায়, যেখানে ভাগ্যবান প্রার্থীরা স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পান।

বেসরকারি উপায়ে

  • স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যাওয়া সবচেয়ে প্রচলিত উপায়, যেটি স্বল্প খরচে বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পথ করে দেয়।
  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা (H1B বা L1) মূলত মার্কিন কোম্পানিতে চাকরির অফারপ্রাপ্তদের জন্য।
  • অভিজ্ঞ কনসালট্যান্ট বা এজেন্সির মাধ্যমে এই ভিসাগুলোর আবেদন ও প্রস্তুতি করা সম্ভব হলেও অবশ্যই তাদের যাচাই করে নিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ভিসা আবেদনের নিয়মাবলী?

যুক্তরাষ্ট্র ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় অনলাইনে CEAC ওয়েবসাইটেঃ

  • নির্ধারিত DS-160 আবেদন ফর্ম পূরণ।
  • MRV ফি জমা।
  • ইউএস দূতাবাসের ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ।
  • সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত তারিখে উপস্থিত হওয়া।
  • বায়োমেট্রিকস ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো হলোঃ

  • বৈধ পাসপোর্ট (৬ মাস মেয়াদসহ)
  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
  • DS-160 কনফার্মেশন পৃষ্ঠা
  • MRV ফি জমার রশিদ
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • পুলিশের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • মেডিকেল রিপোর্ট (নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির জন্য)

বিশেষ ক্যাটাগরির জন্য বাড়তি কাগজপত্র?

  • F1 (স্টুডেন্ট) ভিসাঃ ভর্তি প্রতিষ্ঠানের I-20 ফর্ম, IELTS/TOEFL স্কোর।
  • H1B ওয়ার্ক ভিসাঃ মার্কিন নিয়োগপত্র ও শ্রম অনুমোদন (LCA)।
  • B1/B2 ট্যুরিস্ট ভিসাঃ ভ্রমণের উদ্দেশ্য, ফাইন্যান্সিয়াল প্রমাণ।

আমেরিকা বেতন কত?

  • সাধারণ শ্রমিকঃ $২,০০০–$২,৫০০/মাস (প্রায় ২.৩–৩ লাখ টাকা)।
  • দক্ষ পেশাজীবীঃ $৪,০০০–$৮,০০০/মাস বা তার বেশি (প্রায় ৪.৬–৯.২ লাখ টাকা)।

ভিসা ও ভ্রমণ খরচ?

স্টুডেন্ট ভিসা

  • ভিসা ফিঃ প্রায় ১৬০ মার্কিন ডলার
  • SEVIS ফিঃ $৩৫০
  • সম্পূর্ণ খরচঃ ৬–৮ লাখ টাকা (বিশ্ববিদ্যালয় ও ফ্লাইটসহ)।

ওয়ার্ক ভিসা

  • নিয়োগকর্তা অনেক সময় ফি বহন করে।
  • ব্যক্তি পর্যায়ে খরচঃ প্রায় ৭–১০ লাখ টাকা।

ডিভি লটারি বিজয়ী

ভিসা, মেডিকেল ও ভ্রমণ খরচঃ ২.৫–৩.৫ লাখ টাকা

ভ্রমণের সময়কাল?

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি ফ্লাইট নেই। একাধিক ট্রানজিটসহ সময় লাগে প্রায় ২২ থেকে ৩০ ঘণ্টা।

আরও পড়ুনঃ রাশিয়া বেতন কত | রাশিয়া ভিসার দাম কত

সতর্কতাঃ

অনেক দালাল অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করে। কোনোভাবেই অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করা উচিত নয়। সবসময় U.S. Embassy বা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য নিয়ে কাজ করুন।

শেষ কথা

যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা, চাকরি বা স্থায়ী বসবাসের জন্য যাওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তবে এজন্য প্রয়োজন ধৈর্য, প্রস্তুতি এবং সঠিক তথ্য। বৈধভাবে আবেদন করলেই আপনি যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবন শুরু করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button